আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম।

আমি ইসলামকে যথা সাধ্য পুরোপুরি ভাবে পালন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু এখন সমস্যা হচ্ছে আমার বাবাকে নিয়ে, সমাজে যে সকল ইসলামি বিধান আছে সেগুলো পালন করলে সমস্যা নেই তবে যেগুলোর প্রচলন নেই সেগুলো পালন করতে গেলে মেনে নিতে চায় না। তাছাড়া ইসলামের কোনো বিধান বলতে গেলে সেটা যদি নিজের মনের মতো না হয় তাহলে উলটো আমার উপরে চড়াও হয়। এবং অনেক রেগে কথা বলে। সেসময় বুঝানোত খাতিরে আমার কথাও কিছুটা উচু গলায় হয়ে যায়। তখন আবার আমার ভুল ধরে এবং বলে বাবার উপরে উচু গলায় কথা বলিস এটা কি হচ্ছে। বুঝানোর খাতিরে এক কথার প্রেক্ষিতে আরেক কথা বলতে গেলে তখন বলে মুখে মুখে তর্ক করছিস। এবং এটা নিয়ে মন খারাপ করে। মানে বুঝানো যাবে না তাহলে মুখে মুখে তর্ক করা হবে না।  
আবার নামাজ সময় মতো আদায় করতে বললে বলে দুনিয়ার কাজ কর্ম আর কিছুই করতে হবে না শুধু নামাজ রোজা নিয়ে পড়ে থাকতে হবে। তখন বুঝাতে গেলে তাঁর হিসেবে মুখে মুখে তর্ক করা হয়। তাই  মন খারাপ করে।

শিরক বেদাত বুঝাতে গেলে বলে তুই বেশি বুঝিস বাকি বড় বড় হুজুরেরা কিছু বুঝে না নাকি।

এক কথায় নিজের মনের মত না হলে সেটার বিরোধিতা করে, আর বুঝাতে গেলে না বুঝে উলটো মনে কষ্ট পায়।   এমনকি এসবের কারণে বাসাতে প্রায় ঝগড়া হয় আমাকে নিয়ে। যার ফলে সকলের উপরে বিরুপ প্রবাব পড়ে। এবং আমার অনেক চিন্তা হয় যে এদের অজ্ঞতার ফলে যে মনে কষ্ট পাচ্ছে এতে আমার সকল আমল নষ্ট হয়ে যাছে না তো।
এই অবস্থায় যদি আমি পরিবার থেকে বাইরে থাকি তাহলে এই সমস্যা গুলো হবে না বলে আমার মনে হয়। এতে করে তারা মনে কষ্টও পাবেনা। ফলে আমার আমলের উপরে প্রভাব পড়বেনা বলে আমি মনে করি।

১। আমার কি এই অবস্থায় পরিবার ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া জায়েজ হবে এই ফেতনা থেকে বাঁচতে? (তবে পরিবারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবো একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব না )
২। নামাজের ইমামতি করার জন্য পূর্ণ পরহেজগার ব্যাক্তি হওয়া কি জরুরি?

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَفِصَالُهُ فِي عَامَيْنِ أَنِ اشْكُرْ لِي وَلِوَالِدَيْكَ إِلَيَّ الْمَصِيرُ
আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা-মতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও। অবশেষে আমারই নিকট ফিরে আসতে হবে।
وَإِن جَاهَدَاكَ عَلَىٰ أَن تُشْرِكَ بِي مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ فَلَا تُطِعْهُمَا ۖ وَصَاحِبْهُمَا فِي الدُّنْيَا مَعْرُوفًا ۖ وَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ۚ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
পিতা-মাতা যদি তোমাকে আমার সাথে এমন বিষয়কে শরীক স্থির করতে পীড়াপীড়ি করে, যার জ্ঞান তোমার নেই; তবে তুমি তাদের কথা মানবে না এবং দুনিয়াতে তাদের সাথে সদ্ভাবে সহঅবস্থান করবে। যে আমার অভিমুখী হয়, তার পথ অনুসরণ করবে। অতঃপর তোমাদের প্রত্যাবর্তন আমারই দিকে এবং তোমরা যা করতে, আমি সে বিষয়ে তোমাদেরকে জ্ঞাত করবো।(সূরা লুকমান-১৪/১৫)

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا
তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা।(সূরা বনি ইসরাঈল-২৩)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি নিজে আ'মল করবেন।পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী যদি দেখেন যে, এখন হয়তো আপনার মাতাপিতা আপনার দাওয়াতকে গ্রহণ করে নিতে পারেন, তখনই কেবল তাদেরকে দাওয়াত দিবেন। এটাকেই বলে প্রজ্ঞাসম্পন্ন দাওয়াত।যাইহোক,মাপিতার সাথে উচ্ছ বাক্যবিনিময় করবেন না, বরং সর্বদাই তাদের সাথে উত্তম আচরণের চেষ্টাকে অভ্যাহত রাখবেন।

আপনি নিজ বাড়ীতেই অবস্থান নিবেন।তাদের সাথে তর্কে জড়াবেননা।তারা যা বলবেন,নিরবে সহ্য করে যাবেন। হয়তো তারা একদিন তাদের ভুল বুঝতে পারবে। কিন্তু তারা যদি আপনার দ্বীন পালনে বাধা হয়ে দাড়ায়,এবং আপনাকে বিভিন্ন ভাবে দ্বীন পালন থেকে বিরত রাখতে চাখতে চায়, এবং আপনিও সর্বশেষ চেষ্টা করেও তাদের মন জয় করতে ব্যর্থ হন, তাহলে কোনো অজুহাত দেখিয়ে হাসিখুশীর সাথে তাদের থেকে দূরে অবস্থান করতে পারবেন। এবং সর্বদা তাদের সাথে যোগাযোগ রাখবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...