সুনানে আবু দাউদে হযরত জায়েদ বিন ছাবীত রা. থেকে বর্ণিত আছে-
فان رسول الله صل الله عليه و سلم نهى أن تباع السلع حيث تبتاع حتى يحوزها التجار إلى رحالهم
‘যে জিনিস যেখানে ক্রয় করা হয়, সে জিনিসকে কবজা না করা পর্যন্ত ক্রেতার জন্য সেখানেই তা বিক্রি করে দেওয়াকে রাসুলুল্লাহ ﷺ নিষেধ করেছেন’। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৩৫৬; মুস্তাদরাকে হাকীম- ২/৪০]
ইমাম বাইহাকী রহ. হযরত হাকীম বিন হাযাম রা. থেকে বর্ণনা করেছেন-
قلت يا رسول الله، انى ابتاع هذه البيوع فما يحل لى منها ؟ و ما يحرم على؟ قال يا ابن اخى لا تبيعن شيئا حتى تقبضه
‘তিনি বলেন- আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি এই এই জিনিসের ক্রয়-বিক্রয় করি। আমার জন্য এর মধ্যে কি হালাল এবং কি হারাম? রাসুলুল্লাহ ﷺ জবাবে বললেন- ‘হে ভাতিজা! কোনো কিছুই কবজা না করা পর্যন্ত তা বিক্রি করো না’। [সুনানে বাইহাকী- ৫/৩১৩, হাদস ১০৬৮৫]
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন-
من اشترى طعاما فلا يبعه حتى يستوفيه
‘যে ব্যক্তি কোনো খাদ্য ক্রয় করে, সে যেন তা ‘কবজা’ না করা পর্যন্ত বিক্রি করে না দেয়’। [সহীহ মুসলীম, হাদীস ৩৭০১; সহীহ বুখারী, হাদীস ২০০৩]
হযতর হাকীম বিন হাযাম রা. বর্ণনা করেন-
قلت يا رسول الله ، ان الرجل ليسألني فيريد منى البيع و ليس عندى ما يطلب، افأبيع منه ، ثم ابتاعه من سوق ؟ قال لا تبع ما ليس عندك
‘আমি একবার জিজ্ঞেস করলাম- ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার কাছে মানুষ এসে কোনো কিছু কিনতে চায়। কিন্তু সে সময় যদি আমার কাছে কাঙ্খিত জিনিসটি না থাকে, তাহলে আমি কি তার কাছে জিনিসটি প্রথমে বিক্রি করে দিয়ে পরে তা বাজার থেকে কিনে তাকে দিয়ে দিতে পারবো? রাসুলুল্লাহ ﷺ জবাবে বললেন- ‘যা তোমার কাছে নেই, তা বিক্রি করো না’। [নাসায়ী, তিরমিযী, আবু দাউদঃ জামিউল উসূল- ১/৪৫৭]
তিরমিযীতে আছে, ‘হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্নিত রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-
لا يحل سلف و بيع و لا شرطان فى بيع و لا ربح ما لم يضمن
ঋন ও বিক্রয় (কে একত্রিত করা), একই বিক্রিতে দুটি শর্ত লাগানো এবং যে জিনিস এখনো জামীনে (তথা মালিকানা ঝুঁকিতে) আসেনি -তার মুনাফা নেওয়া হালাল নয়’। [সুনাতে তিরমিযী, হাদিস ১২৩৪] ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর ফতোয়াতে যাহা আছে,তাহা হলোঃ-
নিচের শর্তে শেয়ার কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে:
(1) কোম্পানী বেআইনী জিনিসের সাথে জড়িত হওয়া উচিত নয়, যেমন এটি সুদ-ভিত্তিক ব্যাংক, বীমা কোম্পানি, ওয়াইন কোম্পানি ইত্যাদি না হওয়া উচিত।
(2) কোম্পানির সমস্ত সম্পদ এবং সম্পত্তি নগদে হওয়া উচিত নয় তবে এটির কিছু হিমায়িত সম্পদ থাকা উচিত যেমন বিল্ডিং, জমি এবং কোম্পানী বিদ্যমান রয়েছে এবং এই জিনিসগুলি অবশ্যই জানা আছে। অন্যথায়, পার্থক্য সহ বিক্রয় সুদ হবে।
(3) যদি, কোম্পানির সদস্য হওয়ার পরে, এটি জানা যায় যে কোম্পানিটি কোন ধরণের সুদের লেনদেনের সাথে জড়িত, তাহলে কেউ তার মিটিংয়ে এর বিরুদ্ধে আপত্তি উত্থাপন করবে।
(4) যখন মুনাফা ভাগ করা হয়, তখন প্রাপ্ত লাভের অংশ সুদের লেনদেনের মাধ্যমে সওয়াব পাওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়াই দরিদ্রদের দিতে হবে।
(5) শেয়ার লেনদেনের উদ্দেশ্য ব্যবসায় অংশীদারিত্ব অর্জন করা উচিত, এটি কেবলমাত্র লাভ এবং ক্ষতির সমান করে লাভ অর্জন করা উচিত নয় যেখানে শেয়ারের দখল বা দখলকে বোঝানো হয় না, যেহেতু এটি একটি জুয়া খেলা। (সত্তা) যা হারাম।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
দারুল উলুম দেওবন্দ এর উক্ত ফতোয়া পূর্ণ সঠিক।
উপরোক্ত শর্তগুলো সঠিকভাবে পাওয়াও কঠিন। তা’ই বর্তমানে আমাদের দেশের এ ব্যবসার বিকল্প কোন ব্যবসায় জড়ানোই অধিক নিরাপদ এবং এবং তা থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য৷
(ইসলাম আওর জাদীদ মায়িশাত: ওয়া তিজারাত-১০৩-১১৪; ইসলামী ব্যাংকারী কী বুনিয়াদে-২১৬-২২১৷)
হালাল ও হারামের দৃষ্টিতে এ ব্যবসাটি বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ । তাই কোম্পানি সম্পর্কে পুরোপুরি জানা না থাকলে এ থেকে বিরত থাকা উচিৎ৷
আরো জানুনঃ-