আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
254 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ মুফতি সাহেব,

১.একবার এক দর্জির সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয় কারন তাকে যে জিনিসটা বানাতে দিয়েছিলাম তা সে নষ্ট করে ফেলেছিল আর সামনে আমার সে জিনিসটা দরকার ছিল প্রোগ্রামে পরার জন্য। তখন হেদায়াতও ছিল না তাই বয়সে বড় হওয়া সত্ত্বেও আমি তার সাথে রাগারাগি করি তবে কোন গালাগালি করি নাই বা অকথ্য ভাষাও উৎচারণ করি নাই, শুধু মাথা গরম থাকা অবস্থায় রাগারাগি করেছি।

এখন আমার খুব আফসোস হয় যে তিনি আমার চেয়ে বয়সে বড় ছিলেন আমার হয়ত এটা করা উচিৎ হয় নায়৷ আমি তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়াও করি যাতে তাকে জান্নাতবাসী করেন কিন্তু আমি যে তার কাছে যেয়ে মাফ চাইব সেটা বুঝতে পারছি না কিভাবে চাব। আর এখন পর্দা করার কারনে সে আমাকে চিনতেও পারবে না আর তার সেই ঘটনা মনে আছে কি না তা আল্লাহ জানেন। এই প্রেক্ষাপটে আমি কি করব, সে একজন নন মাহরাম, বয়সে বড় হলেও বৃদ্ধ নন তাই ভয়ও হয় যদি মনের ভিতর কুমন্ত্রণা দেয় শয়তান তাকে আমার কথা শুনে।

২. আমার বাবা মারা গেছেন। আমার মা বিশ্বাস করেন যে সকলেই নির্ধারিত সময়ে মারা যাবে তবুও বেশিরভাগ সময়  আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে বিলাপ করে(যদিও চিৎকার করে না বরং আফসোস করে) যে তাকে হয়তো হাসপাতালে না নিলে বেচে যেত, খাবার দাবার সঠিক ভাবে পড়ে নি না খেতে পেয়ে করনা আক্রমণ করে মারা গেছেন এমন আরো অনেক। আমি তাকে আমার সর্বোচ্চ দিয়ে বুঝানোর চেষ্টা করেছি ইউটুবে অনেক আলেমদের ওয়াজ তাকে শুনিয়েছি তখন এর জন্য শান্ত হলেও আবার মনের কষ্টে বিলাপ করতে থাকে। এ অবস্থায় কি তার গুনাহ হবে?

৩. কারোর যদি হায়েজ ৭ দিন থাকে কিন্তু গত ৩মাস যাবত তার হায়েজ ১০ দিনের বেশি হয় তাহলে কি তার হায়েজের সর্বোচ্চ দিন কি পরিবর্তন হয়ে ১০ দিন ধরা হবে? কারন এখন আর তার ৭দিন হায়েজ হয় না ১০ দিনের উপরে হয়। আর যদি ১০ দিন না হয় তাহলে তো ৭ দিনের পর সে ১০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিল যে ১০ দিনের মধ্যে শেষ হয় নাকি তা দেখার জন্য এ ক্ষেত্রে তো নামায কাজা হয়েছে তা কিভাবে আদায় করবে অর্থাৎ ফজরের ওয়াক্ত কি ফজরের কাজা আদায় করবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
আপনার উচিৎ ছিল, তার সাথে উচ্ছবাক্য না করা। যেহেতু করে ফেলছেন, তাই কোনো মাহরাম পুরুষের মাধ্যমে তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নিবেন।
(২)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রাযি-থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-
ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ اﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ -( «ﻛَﺘَﺐَ اﻟﻠَّﻪُ ﻣَﻘَﺎﺩِﻳﺮَ اﻟْﺨَﻼَﺋِﻖِ ﻗَﺒْﻞَ ﺃَﻥْ ﻳَﺨْﻠُﻖَ اﻟﺴَّﻤَﺎﻭَاﺕِ ﻭَاﻷَْﺭْﺽَ ﺑِﺨَﻤْﺴِﻴﻦَ ﺃَﻟْﻒَ ﺳَﻨَﺔٍ)ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ.
আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক মানুষের তাক্বদীর লিপিবদ্ধ করেছেন আসমান-যমীন সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে এবং তিনি যার ভাগ্যে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাই ঘটবে।(ছহীহ মুসলিম, মিশকাত হাদীস নং/৭৯)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার মায়ের উচিৎ তাকদীরের উপর বিশ্বাস।কাউকে দোষাতন না করা।কোনো কাজকে দোষ না দেয়া।বরং এটা মনে করা যে, আল্লাহর হুকুম হয়েছে বিধায়, এমনটা হয়েছে। নতুবা গোনাহ হবে।

হ্যা, মনের অজান্তে অন্তরে কান্না ভাব চলে আসলে, এজন্য আপনার মায়ের কোনো গোনাহ হবে না।

(৩)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
فَإِنْ لَمْ يُجَاوِزْ الْعَشَرَةَ فَالطُّهْرُ وَالدَّمُ كِلَاهُمَا حَيْضٌ سَوَاءٌ كَانَتْ مُبْتَدَأَةً أَوْ مُعْتَادَةً وَإِنْ جَاوَزَ الْعَشَرَةَ فَفِي الْمُبْتَدَأَةِ حَيْضُهَا عَشَرَةُ أَيَّامٍ وَفِي الْمُعْتَادَةِ مَعْرُوفَتُهَا فِي الْحَيْضِ حَيْضٌ وَالطُّهْرُ طُهْرٌ. هَكَذَا فِي السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ.
«الفتاوى الهندية» (1/ 37)
মাঝেমধ্যে হায়েয হওয়া আবার মাঝেমধ্যে বন্ধ হওয়া, দশ দিনের ভিতর সবকিছুই হায়েয হিসেবে গণ্য হবে।চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন ঐ মহিলা প্রথমবার হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক।
যদি রক্তস্রাব দশদিন অতিক্রম করে যায়, তাহলে প্রথমবার এ পরিস্থিতির সম্মুখিন মহিলার জন্য দশদিন হায়েয। আর কোনো এক সংখ্যায় আদত ওয়ালী মহিলার জন্য তার পূর্বের আদতই হায়েয় এবং বাদবাকী সময় তুহুর। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১০৮,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/১৭২)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/7474

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
আপনি ৭ দিন হায়েয গণনা করবেন।এবং ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত যে অপেক্ষায় ছিলেন, সেই ৩ দিনের নামায কাযা করে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...