بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
মেয়ে উপযুক্ত হওয়ার পর বিয়ে দিতে যত
দেরি করা হবে, ততই অনৈতিক অথবা অশালীন কোনো কাজে
সম্পৃক্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। ‘আল্লাহ না করুন’ তখন যদি উক্ত মেয়ে কোন অনৈতিক কাজ করে
ফেলে তাহলে এর দায়ভার মেয়ের পিতার উপরও বর্তাবে। কেননা, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
من وُلِدَ لَهُ وَلَدٌ فَلْيُحْسِنِ اسْمَهُ وَأَدَبَهُ
فَإِذَا بَلَغَ فَلْيُزَوِّجْهُ فَإِنْ بَلَغَ وَلَمْ يُزَوِّجْهُ فَأَصَابَ
إِثْمًا فَإِنَّمَا إثمه على أَبِيه
তোমাদের মাঝে যার কোন (পুত্র বা কন্যা)
সন্তান জন্ম হয় সে যেন তার সুন্দর নাম রাখে এবং তাকে উত্তম আদব কায়দা শিক্ষা দেয়; যখন সে বালেগ অর্থাৎ সাবালক/সাবালিকা হয়, তখন যেন তার বিয়ে দেয়;
যদি সে বালেগ হয় এবং
তার বিয়ে না দেয় তাহলে, সে কোন পাপ করলে উক্ত
পাপের দায়ভার তার পিতার উপর বর্তাবে। (বাইহাকি ৮১৪৫)
আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/6024
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,
عن أنس أن نفرا من أصحاب رسول الله صلى الله عليه وسلم
قال بعضهم لا أتزوج وقال بعضهم أصلي ولا أنام وقال بعضهم أصوم ولا أفطر فبلغ ذلك
النبي صلى الله عليه وسلم فقال ما بال أقوام قالوا كذا وكذا لكني أصوم وأفطر وأصلي
وأنام وأتزوج النساء فمن رغب عن سنتي فليس مني
অর্থাৎ হজরত আনাস (রাযি.) বর্ণনা করেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সা.) এর একদল সাহাবি রাসূলের (সা.) দরবারে
এসে বলতে লাগলো; আমি কখনো বিয়ে করবো না (ইবাদতের জন্য
বৈরাগ্যতা অবলম্বন করবো) আমি রাতে নামাজ পড়তে থাকবো কখনো ঘুমাবো না, আরেকজন বললো আমি সারাজীবন রোজা রাখবো কখনো রোজ ভঙ্গ করবো না।
এই সবগুলো কথা শোনার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে লাগলো- আক্ষেপ
তোমাদের ওপর! তোমাদের কী হলো? তোমার এই করবা না সেই
করবা না, এই ছাড়বা না সেই ছাড়বা না শুরু করে দিলে। অথচ আমি নামাজও পড়ি
আবার ঘুমাইও, আমি রোজাও রাখি আমার বিরতিও দিই। আমি
বিবাহও করি! সুতরাং (জেনে রাখো বিয়ে আমার সুন্নত) যে আমার সুন্নাত থেকে বিমুখ হয় সে
আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত না।
عن عائشة قالت قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- النكاح من سنتى فمن لم يعمل بسنتى فليس منى وتزوجوا
অর্থাৎ হজরত আয়েশা (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘বিবাহ আমার সুন্নাত যে
আমার সুন্নাতের ওপর আমল করবে না সে আমার দলভুক্ত নয়। সুতরাং তোমরা বিবাহ করো। (ইবনে
মাযাহ : হাদিস নম্বর ১৯১৯)।
বিবাহ কখন ওয়াজিব হয়? জানুনঃ https://ifatwa.info/11783/
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!
প্রশ্নে উল্লেখিত মেয়ের উপর যদি বিবাহ
ওয়াজিব পর্যায়ে পৌছে,তাহলে এই মুহুর্তে তার
বিবাহ করাই উচিত। আর যদি বিবাহ ওয়াজিব পর্যায়ে না যায়, তাহলে তার বাবা মার কথা অনুযায়ী লেখা পড়া চালিয়ে যাওয়া উচিত। তবে শর্ত হলো পরিপূর্ণ শরীয়ত মেনে। যদি শরীয়তের খেলাফ কোনো কাজ করতে হয়,বা কোনো সময়ে এসে শরীয়ত বহির্ভূত কাজ হওয়ার আশংকা হয়,তাহলে সেই মুহুর্তে এসে আর লেখাপড়া চালিয়ে যাবেননা।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
গুনাহমুক্ত জীবন গঠনে সবদিক থেকে উপযুক্ত
ছেলে বা মেয়ে যদি বিয়ে করতে চায় তবে মা-বাবা যথাযথ সহযোগিতা করা উত্তম। বরং এ ক্ষেত্রে
মা-বাবার কর্তব্য হলো বিয়ের ক্ষেত্রে উপযুক্ত ছেলে ও মেয়ের আগ্রহ
ও পছন্দকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিয়ের ব্যাপারে তাকে সুপরামর্শ দেওয়া। বিয়েতে সার্বিকভাবে
সাহায্য-সহযোগিতা করা। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মাজহাবের ফতোয়া
অনুযায়ী ছেলে-মেয়ে উভয়ের বিয়ে দেয়া সামর্থ্যবান বাবার জন্য ওয়াজিব বা আবশ্যক।
সুতরাং বিয়ের ক্ষেত্রে গুনাহ থেকে
বাঁচার জন্য উপযুক্ত ছেলে মেয়ের মা-বাবা যদি সম্মতি না-ও দেয় আর ছেলে
মেয়ে শুধু গুনাহ থেকে বাঁচতে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিয়ে করে
তবে তাতে ছেলে মেয়ের কোনো গুনাহ হবে না।
আর উপযুক্ত ও সার্বিক সক্ষমতা থাকা
ছেলের পরিবারের বাবা-মা ও অভিভাবকের দায়িত্ব হলো ছেলেকে গুনাহমুক্ত জীবন-যাপনের ব্যাপারে
সার্বিক সহযোগিতা করা। যদি পরিবার,
বাবা-মা বা অভিভাবকের
অবহেলার কারণে ওই ছেলের দ্বারা কোনো গুনাহ সংঘটিত হয় তবে পরিবার, বাবা-মা কিংবা অভিভাবককে এ দায় নিতে হবে।
আপনার অসুস্থতার সময় আপনার অবিভাবক
খরচ না দিলে আপনার জন্য করণীয় জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/34962/