জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ইসলামি শরিয়তে মিথ্যা বলা সম্পূর্ণ নিষেধ।
সুতরাং মিথ্যা কথা বলে বৃত্তি নেওয়া,কাহারো থেকে কোনো সুবিধা নেয়া জায়েজ হবে না। কেননা মিথ্যা বলে যে কোনো ধরণের সুবিধা নেয়ার পথ ও পদ্ধতি ইসলাম কোনোভাবেই সমর্থন করে না।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْأَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوا قَوْلَ الزُّورِ
তোমরা মুর্তিপূজার নোংরামী থেকে বাঁচো এবং মিথ্যা কথা থেকে বাঁচো। (সূরা হজ ৩০)
হাদিস শরিফে এসেছে,
সাফওয়ান ইবন সুলাইম বলেন,
قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ ﷺ : أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ جَبَانًا ؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ بَخِيلًا؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ كَذَّابًا ؟ فَقَالَ: ( لَا )
রসুলুল্লাহ ﷺ -কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কাপুরুষ হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কৃপণ হতে পারে। তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি মিথ্যাবাদী হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, না।
(মুয়াত্তা মালিক ২/৯৯০)
অর্থাৎ মুমিনের বিভিন্ন চারিত্রিক ত্রুটি থাকতে পারে, তবু সে মিথ্যা বলতে পারে না।
★★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু আপনি সেই বৃত্তির জন্য অ্যাপ্লাই করার আগেই আপনাকে আগে থেকেই মনোনীত করা হয়েছিলো,তাই আপনি ফরমে যেই মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন,এটার সাথে আপনার বৃত্তি পাওয়ার সাথে সম্পর্কই নাই।
,
আপনাকে মূলত উক্ত কোম্পানি মেধাবী হওয়ার কারনে বৃত্তি দিচ্ছে,গরিব হওয়ার কারনে নয়।
,
তবে তারা যদি গরিব হওয়ার কারনেই উক্ত বৃত্তি দিয়ে থাকে,আর আপনি যদি গরিব না হোন,সেই ক্ষেত্রে এটা ধোকাবাজি হবে।
আপনার জন্য জায়েজ হবেনা।
,
এখন আরেকটি বিষয়, সেটা হলো বৃত্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে দেখতে হবে যে কোন খাত থেকে উক্ত কোম্পানি বৃত্তি দিচ্ছে।যদি হালাল খাত থেকে দেয় তাহলে ধনী গরীব সবার জন্য বৈধ হবে।আর যদি হারাম খাত থেকে দেয় বা নির্দিষ্ট ভাবে জানা না যায়,তাহলে ধনী, ছাত্র ছাত্রী দের জন্য জায়েয হবে না।তবে গরীব ছাত্র ছাত্রী দের জন্য জায়েয হবে।
আরো জানুনঃ
যদি গরিব হওয়ার কারনেই উক্ত কোম্পানি বৃত্তি দিয়ে থাকে,আর আপনি যদি গরিব তথা যাকাতের হকদার যদি না হয়ে থাকেন,তাহলে উক্ত কোম্পানি থেকে বৃত্তি নেওয়া ঠিক হবেনা।
এটা ধোকা দেওয়া হবে।
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}
,
সুতরাং আসলেই যদি আপনি গরিব (যাকাত প্রাপ্তির উপযুক্ত) না হয়ে থাকেন,
তথা আপনার উপর যদি যাকার ফরজ হয়ে থাকে,নেসাব পরিমান সম্পদ যদি আপনার মালিকানায় থাকে,তাহলে উক্ত কোম্পানি বা তাদের প্রতিনিধির সাথে আলোচনা করে বিষয়টি স্পষ্ট করে নিতে হবে।
,
★★আর যদি আপনি যাকাত প্রাপ্তির উপযুক্ত হয়ে থাকেন,তথা আপনার উপর যদি যাকার ফরজ না হয়ে থাকে,নেসাব পরিমান সম্পদ যদি আপনার মালিকানায় না থাকে,তাহলে নির্দিধায় আপনি উক্ত বৃত্তি নিতে পারবেন।