ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
পিরিয়ডের সময় নখ কাটা যাবে।
শরীয়তের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
আপনার আম্মু যেটিই বলেছেন,সেটি ভিত্তিহীন।
(০২)
পিরিয়ড শেষে ফরজ গোসলের এর পর নখ কাটা বাধ্যতামূলক নয়।
কুরআন হাদীসে শুধু গোসল করার কথা এসেছে,নখ কাটার কথা কোথাও নেই।
,
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ ۖ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ ۖ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّـهُ ۚ
“আর তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয (ঋতুস্রাব) সম্পর্কে। বলে দাও, এটা অশুচি। সুতরাং তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাক। তখন পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হবে না (স্ত্রী সহবাস করবে না) যতক্ষণ না তারা পবিত্র হয়। অত:পর যখন উত্তম রূপে পবিত্রতা অর্জন (ফরজ গোসল) করবে তখন তাদের কাছে গমন কর-যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন।” (সূরা বাকারা: ২২২)
(০৩)
শরীয়তের বিধান মতে বাথরুমে কুরআনের আয়াত,হাদীস,আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ সাঃ এর নাম,দোয়া,বিসমিল্লাহ ইত্যাদি কিছু বলা জায়েজ নেই।
নিয়ে যাওয়া জায়েজ নেই।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَن أبي الْجُهَيْم الْأنْصَارِيّ قَالَ: أَقْبَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ نَحْوِ بِئْرِ جَمَلٍ فَلَقِيَهُ رَجُلٌ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَلَمْ يَرُدَّ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى أَقْبَلَ عَلَى الْجِدَارِ فَمَسَحَ بِوَجْهِهِ وَيَدَيْهِ ثُمَّ رَدَّ عَلَيْهِ السَّلَام
আবুল জুহায়ম ইবনুল হারিস ইবনুস্ সিম্মাহ্ (রাঃ)হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জামাল নামক কুয়ার দিক হতে আসলেন। তখন জনৈক লোক তাঁর সাথে দেখা করে তাঁকে সালাম দিল। কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের উত্তর দিলেন না। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এগিয়ে একটি দেয়ালের কাছে এসে চেহারা ও হাত মাসাহ করলেন, তারপর লোকটির সালামের জবাব দিলেন।
(সহীহ : বুখারী ৩৩৭, মুসলিম ৩৬৯, নাসায়ী ৩১১, সহীহ ইবনু খুযাইমাহ্ ২৭৪, সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৯৯০, সহীহ ইবনু হিব্বান ৮০৫।)
রাসুলুল্লাহ সাঃ ইস্তেঞ্জা খানায় যেতে তার আংটিতে,যাতে আল্লাহর নাম ছিলো,সেটা পর্যন্ত খুলে রেখে গিয়েছিলেন।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ، وَالْحَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ الْخَلاَءَ نَزَعَ خَاتَمَهُ .
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শৌচাগারে যেতেন তখন তাঁর আংটি খুলে রাখতেন।
ইবনু মাজাহ ৩০৩, তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১৭৪৬ [আল মাদানী প্রকাশনী]
শায়খ ইবনে উছাইমিন রাহঃ কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,
ﻭﺳﺌﻞ ﺍﻟﺸﻴﺦ ﺍﺑﻦ ﻋﺜﻴﻤﻴﻦ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ :ﻫﻞ ﻳﺠﻮﺯ ﺫﻛﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻤﺎﻡ ؟ .
ﻓﺄﺟﺎﺏ :ﻻ ﻳﻨﺒﻐﻲ ﻟﻺﻧﺴﺎﻥ ﺃﻥ ﻳﺬﻛﺮ ﺭﺑﻪ ﻋﺰ ﻭﺟﻞ ﻓﻲ ﺩﺍﺧﻞ ﺍﻟﺤﻤﺎﻡ ، ﻷﻥ ﺍﻟﻤﻜﺎﻥ ﻏﻴﺮ ﻻﺋﻖ ﻟﺬﻟﻚ ، ﻭﺇﻥ ﺫﻛﺮﻩ ﺑﻘﻠﺒﻪ ﻓﻼ ﺣﺮﺝ ﻋﻠﻴﻪ ، ﺑﺪﻭﻥ ﺃﻥ ﻳﺘﻠﻔﻆ ﺑﻠﺴﺎﻧﻪ ، ﻭﺇﻻ ﻓﺎﻷﻭﻟﻰ ﺃﻥ ﻻ ﻳﻨﻄﻖ ﺑﻪ ﺑﻠﺴﺎﻧﻪ ﻓﻲ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻤﻮﺿﻊ ﻭﻳﻨﺘﻈﺮ ﺃﻥ ﻳﺨﺮﺝ ﻣﻨﻪ .ﺃﻣﺎ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻣﻜﺎﻥ ﺍﻟﻮﺿﻮﺀ ﺧﺎﺭﺝ ﻣﺤﻞ ﻗﻀﺎﺀ ﺍﻟﺤﺎﺟﺔ ﻓﻼ ﺣﺮﺝ ﺃﻥ ﻳﺬﻛﺮ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻴﻪ .
মানুষের জন্য গোসলখানায় কুরআনে কারীম তেলাওয়াত করা উচিৎ নয়। কেননা এই জায়গা তেলাওয়াতের উপযুক্ত নয়।আর যদি অন্তর দ্বারা কেউ স্বরণ করে নেয় তাহলে সেটাতে কোনো সমস্যা হবে না।তবে শর্ত হল,যবান দ্বারা উচ্ছারণ করা যাবে না।বাথরুমের বাহিরে ওজুর স্থানে তেলাওয়াত করা যাবে।মাজমুউল ফাতাওয়া-১১/১০৯
আরো জানুনঃ-
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বাথরুমে কোনো হাদিস, কুরআনের আয়াত পড়া,দোয়া পড়া,কুরআনের আয়াত বা হাদীস বলা জায়েজ নেই।
প্রশ্নে উল্লেখিত ক্ষেত্রে তথা যদি বাথরুমে অসুস্থ লাগে, বা ভয় পায় কেউ, তবে দুআ বা সূরা মনে মনে পড়তে পারবে।
যবান দ্বারা উচ্ছারণ করা যাবে না। জায়েজ নেই।