কুরআন যদিও বিজ্ঞান গ্রন্থ নয় কিন্তু পবিত্র কুরআন এবং বিজ্ঞান এ দুটো মোটেই পরস্পরের সংগে সাংঘর্ষিক নয়।
কুরআন বিজ্ঞান গ্রন্থ নয়।
কিন্তু পবিত্র কুরআনে বিজ্ঞানের অনেক কিছুর সমাধান পাওয়া যায়, যা বিজ্ঞান স্বীকার করে নিয়েছে এবং কুরআনের কোন আয়াত আজও কেউ ভুল প্রমাণ করতে পারেনি। এই মহাবিশ্ব যিনি সৃষ্টি করেছেন তার কাছেই রয়েছে সব কিছুর সঠিক সমাধান।
কুরআন নাজিলের বহু শতাব্দী পর উদ্ভাবিত আজকের নানা বিষয়ক বিজ্ঞান তখন ছিল না। মহাবিশ্ব, জীববিজ্ঞান, বায়ুমণ্ডলের গঠন—এর কোনো কিছু সম্পর্কেই ধারণা ছিল না তৎকালীন বিশ্বের। প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে নানা কুসংস্কার আর প্রাচীন উপকথায় বিশ্বাসী ছিল মানুষ।
,
অথচ সেই সময়ে নাজিল হওয়া এই বিস্ময়কর গ্রন্থে আজকের আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে রিলেটেড আয়াতই রয়েছে সহস্রাধিক।
,
যার একটি আয়াতকেও আধুনিক বিজ্ঞান মিথ্যা বা অনর্থক প্রমাণ করতে পারেনি। বরং প্রায়োগিক ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের নানা সূত্র ভুল প্রমাণিত হয়ে তা যুগে যুগে কোরআনের মাপকাঠিতে সংশোধিত হয়েছে।
টাইম ট্রাভেল এর ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ গন বলেনঃ- আধুনিক বিজ্ঞানের সবচেয়ে আলোচিত থিওরি হচ্ছে টাইম ট্রাভেলিং এবং টাইম ডিলেশন।
আমরা সকলেই তিনটি মাত্রা সম্পর্কে অবগত, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা। এই তিনটি মাত্রা বরাবর স্থান পরিবর্তন সম্ভব। তবে ন্যূনতম চতুর্মাত্রিক একটি ধারণা হচ্ছে সময়ের ধারণা। আজ পর্যন্ত এই চতুর্থ মাত্রা দিয়ে স্থান পরিবর্তন সম্ভব হয়নি।
,
এই সময়ের অক্ষ বরাবর স্থান পরিবর্তনকে কালমাত্রিক সরণ বলা হয়। এক সময় থেকে আরেক সময়ে পরিভ্রমণকেও আমরা সময় ভ্রমণ বলে থাকি। এটি হতে পারে অতীতে ভ্রমণ, হতে পারে ভবিষ্যতে ভ্রমণ।
,
বিজ্ঞানের ধারণা আলোর গতিতে বা তার চেয়ে বেশী গতিতে চলতে পারলেই টাইম ট্রাভেলিং সম্ভব। আবার নিউট্রিনো কণা যেহেতু যেকোন বস্তুর মধ্য দিয়েই অনায়েসে চলে যেতে পারে, সেহেতু সহজেই কোন ধরনের বাধা ব্যাতীতই চলা সম্ভব।
,
মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা আল-মা’আরিজ এর ৪ নং আয়াতে বলেন:
تَعۡرُجُ الۡمَلٰٓئِکَۃُ وَ الرُّوۡحُ اِلَیۡہِ فِیۡ یَوۡمٍ کَانَ مِقۡدَارُہٗ خَمۡسِیۡنَ اَلۡفَ سَنَۃٍ ۚ﴿۴﴾
ফেরেশতা এবং রূহ আল্লাহর দিকে আরোহণ করে এমন এক দিনে, যার পরিমান (তোমাদের হিসাব মতে) পঞ্চাশ হাজার বছর।
,
অর্থাৎ ফেরেশতারা মহান রবের দরবারে এমন একটি দিনে উপস্থিত হয় বা হবে যেদিনের এক দিন সমান দুনিয়ার ৫০ হাজার বছরের সমান।
গতিশীল বস্তুর গতির আধিক্যতার কারণে অনেক ক্ষেত্রে সময়েরও পূর্বে কাজ হয়ে যায়। সহজভাবে বললে, মনে করুন একজন মানুষের চেয়ে মেশিন কাজ করার দিক দিয়ে বেশী গতিশীল। মানুষ যে কাজ ১০ ঘন্টায় করে মেশিন সেটা এক ঘন্টায় করে। অর্থাৎ গতিশীলতার কাছে কাজের সময় কমে যায়।
এমন যদি হয় একটি বস্তুর গতি এতটাই বেশী যে, দুনিয়ার মুহুর্ত যাওয়ার পূর্বেই সে বহু বছরের কাজ করে ফেলে। লক্ষ বছরের রাস্তা ঘুরে আসে। হ্যা ! বিজ্ঞানের পরিভাষায় এটাও অসম্ভব নয়। সম্ভব। কিন্তু এটা করতে হলে আলোর চেয়েও কোটি কোটি গুন বেশী গতিসম্পন্ন যানের প্রয়োজন, যেটা বিজ্ঞান মহলে কোনদিনও সম্ভব নয়।
,
কিন্তু এই কাজটিই করেছেন আমাদের প্রিয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি সকল সৃষ্টি জগত ঘুরে এসেছেন মূহুর্তের মধ্যেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, তিনি যাত্রা করার পূর্বে যেখানে অজু করেছেন, ফিরে এসে দেখেন যে, সেখানের পানি এখনও গড়িয়ে পড়তেছে।
এর মানে হচ্ছে তার বাহনের গতি এতটাই বেশী যে, দুনিয়ার সময় এক মুহুর্ত পার হওয়ার পূর্বেই লক্ষ লক্ষ বছরের রাস্তা পারি দিয়ে এসেছে। তার বাহনে গতি কেমন ছিল?
এই সম্পর্কে বুখারী, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ সহ অসংখ্য কিতাবে এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যে, আমার কাছে বোরাক আনা হল। এটি ছিল একটি সাদা লম্বা গাঁধার চেয়ে বড় এবং খচ্চর অপেক্ষা ছোট চতুষ্পদ জন্তু। এর পা আপন দৃষ্টিসীমায় পতিত হত।
অর্থাৎ বোরাকের গতি এতটাই বেশী ছিল যে, সে যেখানে তাকাত সেখানে চলে যেত। তার দৃষ্টি শক্তি কতটা প্রখর ছিল তা আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম টাইম ডিলেশনের মাধ্যমে টাইম ট্রাভেল করে এসেছেন। তার বাহনের গতি এতটাই বেশী ছিল যা মুহুর্তেই সব কিছু করতে সক্ষম হয়েছে।
সাধারণ মুসলমান বিজ্ঞানের বা মুভিতে প্রচার করা এসব বিষয়কে নবী রাসুলেরগনের বিশেষ মু'জিযা উদাহরণ হিসাবে দিতে পারেনা।