আলিম কোর্সের আমার এক সহপাঠীর প্রশ্ন,,,,,,,,,
আসসালামু আলাইকুম, উস্তায।
আমি আলিম কোর্সের একজন তলিবাহ, আমার কিছু প্রশ্ন ছিলো উস্তায।
আমি অনার্স ১ম বর্ষ শেষ করেছি কিছুদিন আগে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি থেকে।
কিছু মানুসিক অবস্থা উথান পতনের জন্য পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানো টা হচ্ছে না ইউনিভার্সিটিতে। প্রতিনিয়ত কেমিস্ট্রি ফিজিক্স বা প্রগ্রামিং ক্লাসের টিচার রা এমন কিছু ফাতোয়া তাফসির দিচ্ছিল যে ঈমানী হালাত + তাক্বওয়া পুরোপুরি উধাও হয়ে যাচ্ছিল। অনলাইনে ইলমি পড়াতেও পিছিয়ে যাচ্ছিলাম অনেক কিছু মেইনটেইন করে আমি কোর্স গুলোর সব নিয়মকানুন মানতে পারতেসিলাম আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ সহজ করেছেন। কিন্তু প্রতিদিন যাতায়াত এর পর স্যার দের সাথে কমিউনিকেট এছাড়া প্রেজেন্টেশন ইত্যাদি ইত্যাদির কি যে এক অশরীরী মানুসিক নির্যাতন আমি আসলেই কারো সাথে মিশতে পারছিলাম না। অনেক ভয় হচ্ছিল আমি আবার হাওয়ায় মিলিয়ে দুনিয়ায় বিলীন হবো। ইনটার লাইফ টা খুবই ভয়ংকর ভাবে গিয়েছে উস্তায আমার বাড়ির সবাই এব্যাপার জানেন আমার গুনাহ পুরোটাই তারা জানেন এমনই কিছু হয়েছিল।
আমি অনেক কষ্ট করে নিজেকে আবার মাদরাসায় থাকাকালীন আমার নরমাল জীবনে নিয়েছি করোনাকালিন সময়ে। এখন আবার এই বাহিরে যাতায়াত আমার জাহান্নামে আসা যাওয়ার মত হয়ে গিয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত আমার পড়া শোনা আর ঠিক মত ধরে রাখতে পারলাম না, ৩ টা সাব্জেক্টে ফেইল এসেছে এই সেমিস্টারে। তো চেন্সেলর ম্যাম ডেকেছিলো তাকে বললাম যে আমার এই সাব্জেক্টে কোনো আগ্রহ নেই আমি মিশতে পারছি না সে তেমন কিছু বলেনি কিন্তু দীর্ঘ ৪ ঘন্টা আমাকে মোটিভেট করেছে যেন আমি প্রগ্রামিং টা পড়ি৷
কিন্তু উস্তায আরো ৪ বছর আমার শক্তি নেই এগুলো সহ্য করার, আমি কিছু রুকইয়ার সমস্যাতেও ভুগতেসি। রাক্বী জানিয়েছেন (ইনবাত হিলিং এর রাক্বী সম্ভবত নাম আবু মুহাম্মাদ) আমার কালোজাদুর সমস্যা আছে। এটাও বাড়িতে জানিয়েছি, বিয়ের সম্পর্কেও বলেছি যেন বিয়ের ব্যাপারে খোজ করে এখন থেকে। আমি এমন কিছু গুনাহতেই ছিলাম যার জন্য আমার এখন অবস্থা খুবই নাজুক।
আমার বাবা-মা সেপারেট ৫ বছর। দাদা খরচ দেন, দাদার অনেক ইচ্ছা আমাকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করবে আমাকে আর আমার বোনকে আমরা দুই বোন।
আমিও এই এক আশা পুরণ করতেই দাখিল দিয়েই মাদ্রাসা থেকে কলেজে চলে আসি সেটাই ভুল ছিল কি না জানিনা।
২০১৮ এর দাখিল ব্যাচ এজন্য এখন আর আলিয়া থেকে আলিম দেয়া যাবেনা আজকে আমার মাদ্রাসায় গিয়ে কথা বলে আসলাম।
বাবা কিছুতেই আগাতে চায়না অনেক চাপা স্বভাবের, কথা খুব বলে কিন্তু কাজের সময় একজন গার্জিয়ান হিসেবে কিছু বলবে খোজ নিবে তা করেন না। আজকেও আমার সাথে বাবা গিয়েছে ঠিকই কিন্তু বসে ছিল শুধু সব কথা আমিই বললাম। আমার ফুপি আছেন, তাকে বলেছিলাম তিনি যান নাই। ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে আসছি এটা তার মনের বিরুদ্ধে কাজ হয়েছে। বেজার থাকবেন এজন্য।
কাওমীর জামাত গুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম ৩/৪ জন বোন থেকে তারা কেও বললেন ভালো কেও বললেন ভালো কিন্তু খোজ নেয়া লাগবে।
আমার বাসা থেকে আবাসিক দিবে না, আর বেশি দূরেও দিবেনা।
এত বড় মেসেজ গুলো দিলাম পরিস্থিতি টা একটু তুলে ধরার জন্য।
শুধু আমার চাচাই আমার কথা গুলো টুক টাক বুঝেন আর ঐ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেন তাও পুরপুরি তার বুঝ অনুযায়ী।
এখন আমি আলিম এ অধ্যয়নরত আছি ১বছর শেষ আলহামদুলিল্লাহ, ২য় বছরে আছি, শুনেছিলাম এদিকে কোর্স শেষ হলে দাওরাহ করবার জন্য ব্যবস্থা করবেন , আল্লাহ চাইলে হবে।
নুরুল কুরআন একাডেমি তেও আছি ইসলামিক শারইয়া কোর্সে, আলহামদুলিল্লাহ।
অনলাইনে দুটি এত দীর্ঘ সিলেবাস আর যত্ন তার পর অন্য কোথাও পড়ার প্রয়োজন হয়না তাও অফলাইনে সিনা টু সিনা ইলমে বারকাহ আসবে ভেবে এজন্য খুজছিলাম কিন্তু আমি এখন ভাবছি আমি যেহেতু আই ও এমের একজন তলিবাহ আপনারা আমার উস্তায তাই আপনাদের থেকে একটু জিজ্ঞাসা করে নেই। আলিয়া মাদ্রাসায় আজকে গিয়েছিলাম তারা আমাকে টোটাললি ব্রেইন ওয়াশ করার মত কিছু কথা বার্তা বলেছে আমি আশা করিনি এতটা অধপতন হয়েছে আমার আলিয়া মাদ্রাসার। আমি চাচ্ছিনা তাদের ব্যাপারে গীবাহ করতে কিন্তু তারা অনলাইনের পুরো কারিকুলামটাকেই “ভুয়া” বলে আখ্যায়িত করেছে। আমি পুনরায় এমন মনমানুসিকতা ওয়ালা মাহলে গিয়ে আমার দ্বীন এর বাচাকুচা সব বিলীন করতে চাইনা উস্তায। তাই এদিকে প্রশ্ন করছি।
আমি তাহলে আশ্বস্ত হতে পারব যে এটা আমার ছেলেমানুষী না।
প্রশ্ন হলো -
১. আলিয়া তে যেহেতু নিচ্ছে না আর কাওমির সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো খোজ নেয়া যাচ্ছে না তাহলে, আমি কি অনলাইনের পড়া গুলোই একমিনানে কান্টিনিউ করব? এটা কি ভুল সিদ্ধান্ত হবে?
২. মানুসিক অবনতির জন্য আমার ইউনিভার্সিটি ছেড়ে দিয়ের বাসায় পড়া অবস্থায় বিয়ে করে নেয়ার সিদ্ধান্ত কি ভুল?