নামাজে সাজদার আয়াত তিলাওয়াত করলে নামাজের মধ্যেই সাজদাহ আদায় করতে হবে।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সূরা আলাক পুরাটা তিলাওয়াত করলে রুকুতে চলে যাবে।
অতঃপর নামাজের দুই সাজদাহ আদায় করবে,আর এটিই সুরা আলাকের পঠিত সাজদার আয়াতের সাজদাহ হিসেবে যথেষ্ট হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِي رَافِعٍ، قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ صَلاَةَ الْعَتَمَةِ فَقَرَأَ ( إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ) فَسَجَدَ فِيهَا . فَقُلْتُ لَهُ مَا هَذِهِ السَّجْدَةُ فَقَالَ سَجَدْتُ بِهَا خَلْفَ أَبِي الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم فَلاَ أَزَالُ أَسْجُدُ بِهَا حَتَّى أَلْقَاهُ . وَقَالَ ابْنُ عَبْدِ الأَعْلَى فَلاَ أَزَالُ أَسْجُدُهَا .
আবূ রাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) এর পিছনে ইশার সালাত আদায় করলাম। (এ সালাতে) তিনি সূরাহ "ইযাস সামা-উন্ন শাকক্বাত" পাঠ করে সিজদা (তিলাওয়াতের সিজদা) করলেন। (সালাত শেষে) আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কিসের জন্য এ সিজদা? তিনি বললেনঃ আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিছনে সালাত আদায় করা কালে এ সূরায় আমি সিজদা করেছি। সুতরাং তার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত (আমৃত্যু) আমি এ সূরাহ তিলাওয়াত করে সিজদা করতে থাকব।
(মুসলিম শরীফ ১১৯১.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৮০, ইসলামীক সেন্টার ১১৯২)
যদি নামাজে তেলাওয়াতে সেজদা পাঠ করা হয় তাহলে নামাজেই সেজদা করতে হবে,বাহিরে করলে হবে না।নামাজে আদায় করার পদ্ধতি হচ্ছে, যদি সূরার শেষাংশে সেজদায়ে তেলাওয়াত হয়,তাহলে নামাজের মধ্যেই উক্ত আয়াতের পর তিন আয়াত পড়ার পূর্বে আদায় করতে হবে এবং করাই ওয়াজিব।কিন্তু মধ্যাংশে হলে উক্ত আয়াতের পর তিন আয়াত থেকে একটু বেশীও পড়া যাবে।(আহসানুল ফাতাওয়া ৪/৫৬)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত রয়েছে,
وَلَوْ كَانَتْ بِخَتْمِ السُّورَةِ فَالْأَفْضَلُ أَنْ يَرْكَعَ بِهَا وَلَوْ سَجَدَ وَلَمْ يَرْكَعْ فَلَا بُدَّ مِنْ أَنْ يَقْرَأَ شَيْئًا مِنْ السُّورَةِ الْأُخْرَى بَعْدَمَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنْ السُّجُودِ وَلَوْ رَفَعَ وَلَمْ يَقْرَأْ شَيْئًا وَرَكَعَ جَازَ وَإِنْ لَمْ يَرْكَعْ وَلَمْ يَسْجُدْ وَتَجَاوَزَ إلَى مَوْضِعٍ آخَرَ فَلَيْسَ لَهُ أَنْ يَرْكَعَ بِهَا وَعَلَيْهِ أَنْ يَسْجُدَ مَا دَامَ فِي الصَّلَاةِ
ভাবার্থঃযদি তিলাওয়াতে সিজদা সূরার একেবারে শেষ পর্যায়ে হয়,তাহলে উত্তম হবে তখন যথারীতি (নামাযের)রুকু করে নেয়া।তবে যদি কেউ (তেলাওয়াতের)সেজদা করে নেয়,এবং যথারীতি (নামাযের) রুকু না করে, তাহলে জরুরী যে, সে তখন অন্য কোনো সূরা থেকে কিছু অংশ পড়ে নেবে যখন সে সেজদা থেকে দাড়িয়ে সোজা হবে। আর যদি সে দাড়ায় এবং কিছুই না পড়ে আবার রুকুও করে নেয় তাহলে তাও জায়েয রয়েছে। আর যদি সে রুকু বা তেলাওয়াতে সেজদা কিছুই না করে,বরং অন্যত্র তেলাওয়াতে লিপ্ত হয়ে যায় তাহলে সে আর রুকু করবে না। তবে তাকে অবশ্যই নামাযের মধ্যে সেজদা করতে হবে।{ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াা-১/১৩৩}।
নামাযে সিজদার আয়াত তিলাওয়াত করার পর যদি আরো দু আয়াতের বেশি তিলাওয়াত করার পূর্বেই নামাযের রুকু-সিজদা করা হয় তাহলে নামাযের সিজদার মাধ্যমে ইমাম-মুকতাদি সকলের তিলাওয়াতের সিজদা আদায় হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে তিলাওয়াতে সিজদার জন্য ভিন্নভাবে নিয়ত করা শর্ত নয়। এমনকি সিজদার আয়াত পড়া হয়েছে বা সিজদা ওয়াজিব হয়েছে একথা মুকতাদিগণ না বুঝলেও তাদের সিজদা আদায় হয়ে যাবে। তবে সর্বক্ষেত্রে তিলাওয়াতে সিজদার জন্য নামাযেই পৃথকভাবে সিজদা করা উত্তম।
আর যদি সিজদার আয়াতের পর দুই আয়াতের বেশি পড়া হয় তাহলে নামাযের সিজদার মাধ্যমে তিলাওয়াতের সিজদাটি আদায়ের সুযোগ থাকবে না। সেক্ষেত্রে তিলাওয়াতের জন্য নামাযেই ভিন্নভাবে সিজদা করতে হবে।
(ফাতহুল কাদীর ১/৪৭০; রদ্দুল মুহতার ২/১১১)