بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
ইসলামে মাদকদ্রব্য
গ্রহণ করা হারাম। মাদকদ্রব্যের পরিমাণ কম হোক আর বেশি হোক, উভয় অবস্থাই তা হরাম।
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদের ব্যবসাকে হারাম ঘোষণা করেছেন। এমনকি অমুসলিমদের
সঙ্গেও এ ব্যবসা করা জায়েজ বা বৈধ নয়। বরং মদ ও মাদকদ্রব্যের উৎপাদন, আমদানি, রফতানি সব কিছুই নিষিদ্ধ। এমনকি এসব কারখানায়
চাকরি করাও সমানভাবে নিষিদ্ধ। এ ব্যাপারে রয়েছে হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা। হাদিসে
এসেছে-
وَتَعَاوَنُوا
عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ
ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]
সৎকর্ম ও
খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা
করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। [সূরা মায়েদা-২]
عَنْ أَنَسِ
بْنِ مَالِكٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْخَمْرِ
عَشَرَةً عَاصِرَهَا وَمُعْتَصِرَهَا وَشَارِبَهَا وَحَامِلَهَا وَالْمَحْمُولَةَ
إِلَيْهِ وَسَاقِيَهَا وَبَائِعَهَا وَآكِلَ ثَمَنِهَا وَالْمُشْتَرِيَ لَهَا
وَالْمُشْتَرَاةَ لَهُ
আনাস ইবনু
মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, শারাবের সাথে সম্পৃক্ত দশ শ্রেণীর লোককে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন। এরা হলঃ মদ তৈরিকারী, মদের ফরমায়েশকারী, মদ পানকারী, মদ বহনকারী, যার জন্য মদ বহন করা হয়, মদ পরিবেশনকারী, মদ বিক্রয়কারী, এর মূল্য ভোগকারী, মদ ক্রেতা এবং যার জন্য মদ ক্রয় করা হয়।
[সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১২৯৫]
মদের ব্যবসা
করা নিষিদ্ধ বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। বরং মদ তৈরির উদ্দেশ্যে যদি কেউ আঙুর বা উপাদান
কেনে তা-ও বিক্রি করা হারাম বা নিষিদ্ধ। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আঙুরের ফসল কেটে তা জমা করে রাখে
কোনো ইয়াহুদি, খ্রিষ্টান বা এমন ব্যক্তির কাছে
বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে; যে তা থেকে মদ তৈরি করবে, তাহলে সে জেনেশুনেই আগুনে ঝাপ দিল।’
হাদিসের উল্লেখিত
বর্ণনা থেকে এ কথা সুস্পষ্ট যে, মদ পান করাই হারাম বা নিষিদ্ধ
নয়; বরং মদের ব্যবসা করাসহ অমুসলিমদের
কাছে মদ তৈরির যে কোনো উপাদান বিক্রয় করাও হারাম।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
হারাম কাজ
করা যেমন জায়েজ নেই। তেমন তার সহযোগিতা করাও জায়েজ নেই। যদি উক্ত কোম্পানীতে হারাম কাজ ছাড়া অন্য কাজ করা যায়। উক্ত হারাম কাজ থেকে মুক্ত থাকা যায়, তাহলে চাকুরী করা জায়েজ হবে। সেই হিসেবে বেতনও
জায়েজ হবে। কিন্তু যদি হারাম কাজের সহযোগী
হতে হয়, যেমন মদ পরিবেশন, মদ প্রস্তুত
করতে সহযোগিতা, শুকরের গোশত পরিবেশন ইত্যাদি করতে হয়। তাহলে উক্ত চাকুরী জায়েজ হবে না।
মোটকথা জেনেশুনে এমন কোম্পানীতে
কাজ করা জায়েয হবে না যেহেতু তা হারাম কাজের সহযোগিতা। তবে ফল পাড়া ব্যতিত অন্য কাজ
হলে জায়েয আছে যদি তা উক্ত মদ প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে সহযোগিতার অংশ না হয়।