আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
161 views
in সালাত(Prayer) by (5 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
১.আমরা ঢাকায় থাকি আমাদের নিজের ফ্ল্যাটে।মাঝে মাঝে আমার বাবা মা গ্রামের বাড়িতে যায়। বাড়িতে আমাদের নিজেদের ঘর রয়েছে। প্রত্যেক ইদে বাড়িতে যাওয়া হয়। এখন ঢাকা থেকে আমাদের বাড়িতে গেলে ওইখানে কি কসরের সালাত আদায় করতে হবে?

উল্লেখ্য যে, আমাদের গ্রামের বাড়ি ঢাকা থেকে ৭৭ কিমি এর ও বেশি।

1 Answer

0 votes
by (58,740 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/8790/ নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، ح وَحَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، - وَهَذَا لَفْظُهُ - أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، قَالَ : غَزَوْتُ مَعَ رَسُولِ اللهِ صلي الله عليه وسلم وَشَهِدْتُ مَعَهُ الْفَتْحَ، فَأَقَامَ بِمَكَّةَ ثَمَانِيَ عَشْرَةَ لَيْلَةً لَا يُصَلِّي إِلَا رَكْعَتَيْنِ وَيَقُولُ " يَا أَهْلَ الْبَلَدِ! صَلُّوا أَرْبَعًا فَإِنَّا قَوْمٌ سَفْرٌ "

 ‘ইমরান ইবনু হুসাইন (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি এবং মাক্কাহ বিজয়ের দিনেও তাঁর সাথে ছিলাম। তিনি মাক্কায় আঠার দিন অবস্থান করেন। এ সময় তিনি (ফারয) সলাত দু’ রাক্‘আত আদায় করেন এবং বলেনঃ হে শহরবাসী! তোমরা চার রাক‘আত সলাত আদায় করবে। কেননা আমরা মুসাফির সম্প্রদায় (তাই চার রাক‘আতের স্থলে দু’ রাকআত আদায় করেছি)

(আবু দাউদ ১২২৯, তিরমিযী (অধ্যায় : সলাত, অনুঃ সলাত ক্বাসর করা, হাঃ ৫৪৫), আহমাদ (৪/৪৩০), ইবনু খুযাইমাহ (হাঃ ১৬৪৩)

,

মুয়াত্তা মালিক গ্রন্থেও একই রকম হাদীস এসেছেঃ

وروى مالك في " الموطأ " (2/206) عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ : ( كَانَ إِذَا قَدِمَ مَكَّةَ صَلَّى بِهِمْ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ يَقُولُ : يَا أَهْلَ مَكَّةَ ! أَتِمُّوا صَلَاتَكُمْ فَإِنَّا قَوْمٌ سَفْرٌ)

আলোচ্য হাদীসে দলীল হলো যে, মুসাফির ব্যক্তি যখন মুক্বীমদের ইমাম হবে এবং চার রাক্‘আত বিশিষ্ট সলাতে দু’ রাক্‘আত পড়ে সালাম ফিরবে তখন মুক্বীমরা মাক্কাবাসীদের ন্যায় সলাত পূর্ণ করবে এবং এ ব্যাপারে ইজমা রয়েছে। আর সালাম ফেরার পর মুক্তাদীদের উদ্দেশে।

তোমরা সলাত পূর্ণ করো’’ এমন কথা বলা মুস্তাহাব। ইবনু ‘আবদুল বার (রহঃ) বলেন যে, মুসাফির যখন মুক্বীমদের সাথে সলাত আদায় করবে এবং দু’ রাক্‘আত শেষে সালাম ফিরবে তখন মুক্তাদীগণ সলাত পূর্ণ করবে, এ ব্যাপারে কোন ইখতিলাফ নেই।

 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে এসেছে  

وصح اقتداء المقیم بالمسافر في الوقت، وبعدہ فإذا قام المقیم إلی الإتمام لا یقرأ، ولا یسجد للسہو في الأصح؛ لأنہ کاللاحق، والقعدتان فرض علیہ، وقیل: لا․ (الدر مع الرد: ۲/۶۱۰-۶۱۱، ط: زکریا دیوبند)

সারমর্মঃ এক্ষেত্রে মুকিম মুক্তাদি যখন তার অবশিষ্ট নামাজ আদায়ের জন্য  দাড়িয়ে যাবে, তখন সে কিরাআত পড়বেনা।

সে সেজদায়ে সাহুও আদায় করবেনা। কেননা সে লাহেকের হুকুমে। 

 

https://www.ifatwa.info/1281 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

কোনো মানুষ মুসাফির হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত রয়েছে-

 

(ক) তিন দিন বা তার সমপরিমাণ দূরত্বের অধিক সফর করা।যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে-

أَقَلُّ مَسَافَةٍ تَتَغَيَّرُ فِيهَا الْأَحْكَامُ مَسِيرَةُ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، كَذَا فِي التَّبْيِينِ، هُوَ الصَّحِيحُ

সর্বনিম্ন দূরত্ব যার দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধানে  পরিবর্তন আসে। (তথা মানুষ মুসাফির হয়)তিন দিনের দূরত্ব। (তাবয়ীন) এটাই বিশুদ্ধ মত। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১৩৮)

 

হানাফি মাযহাবে মূলত মাইল বা কিলোমিটারের হিসাব গ্রহণযোগ্য ছিলনা।বরং তিনদিনের সফরকেই মূল হিসেবে গণ্য করা হয়েছিলো।তবে পরবর্তী সময়ে হানাফি ফুকাহাগণ ৪৮ কিলোমিটার-কে তিনদিন তিনরাত সমপরিমাণ দূরত্ব হিসেবে নির্ধারণ করেন।এ হিসেবে বর্তমানে ৪৮মাইল বা ৭৭ কিলোমিটার কে সফরের দূরত্ব সাব্যস্ত করা হয়েছে। (আওযানে শরঈয়্যিয়াহ-মুফতী শফী রাহ-৪৯) (ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম-৪/৪৯৪,রদ্দুল মুহতার-২/১২২ (করাচি),তাবয়ীনুল হাক্বাঈক্ব- ১/২০৯)

 

(খ) নির্দিষ্ট কোনো স্থানকে লক্ষ্য করে সফর শুরু করা। সুতরাং যদি কেউ চোর খুজতে বা নিজের গৃহপালিত পশুকে খুজতে খুজতে সারা পৃথিবীও সফর করে নেয় তাহলে সে মুসাফির হবে না। কেননা তার নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য ছিলনা।

 

(গ) নিজ এলাকাকে অতিক্রম করা। তথা নিজের শহর বা গ্রামের শেষ সীমানা পার হওয়ার পর কেউ মুসাফির হিসেবে গণ্য হবে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে গেলে কসরের সালাত আদায় করবেন না বরং পূর্ণ সালাত আদায় করবেন। কারণ সেটা আপনাদের ওতনে আছলী বা মূল বাসস্থান। সেখানে আপনাদের ঘরও রয়েছে । তবে পথের মধ্যে মুসাফির হিসেবে গণ্য হবেন। তাই ঢাকার নির্দিষ্ট সীমানা পার হওয়ার পর গ্রামের এলাকায় প্রবেশ করার আগ পর্যন্ত সালাত আদায় করলে কসরের সালাত আদায় করবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 224 views
0 votes
1 answer 138 views
0 votes
1 answer 137 views
...