জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো যদি হাতের ভিতর কোনো এমন জিনিস লেগে যায়,যেটা চামড়া পর্যন্ত পানি পৌছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে,তাহলে উযুর পূর্বে সেটা ছাড়ানোর আপ্রান চেষ্টা করবে।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি সুপার গ্লু তেমনই আঠা হয়,যেটা শরীর পর্যন্ত পানি পৌছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে,তাহলে উযুর পূর্বে ঘর্ষন দিয়ে অথবা সাবান ইত্যাদির মাধ্যমে সেটা ছাড়ানোর চেষ্টা করা জরুরি।
যদি পুরোপুরি চেষ্টা করার পরেও সেটা দুর না হয়,ওযরের কারনে এটি মাফ।
দাতুল উলুম দেওবন্দ এর ফাতাওয়া নং 158494
লিংকঃ
শরীয়তের বিধান হলো যদি শরীরে পানি পৌছাতে কোনো জিনিস প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, যেমন আংটি ইত্যাদি, এর কারনে যদি আসলেই শরীরে পানি না পৌছে,এমনটি হয়ে থাকলে আপনাকে ঐ নামায গুলো আবার পড়ে নিতে হবে।
হযরত আবু তামীম জায়শানী রাহ. থেকে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. যখন অযু করতেন আংটি নাড়াচাড়া করতেন। আবু তামীমও তা করতেন। ইবনে হুবায়রাও তা করতেন।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১/৩৭১ (৪৫৬); মাবসূত, সারাখসী ১/১০; আদ্দুররুল মুখতার ১/১২৬; আলবাহরুর রায়েক ১/১৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ৪২৮
★★সুপার গ্লু লাগলে সেটা দূর করা বিশেষ কিছু পদ্ধতি রয়েছে,যেগুলো এপ্লাই করলে আশা করা যায় সেটা দূর হবে।
★গ্লু তোলার জন্য সবথেকে ভালো হল 'থিনার" ও "পেট্রল" ।
★সুপার গুলু আঠা লেগে গেলে সাথে সাথে মুছে ফেলার চেষ্টা করতে হবে। যদি আঠা ভালভাবে লেগে যায় তাহলে তার উপর জোর জুলুম করা যাবেনা, মানে বেশি ঘষাঘষি করা যাবেনা। পানির মধ্যে ১৫-২০ মিনিট হাত ভিজিয়ে রাখলে দেখবেন সব উঠে যাচ্ছে। আর যদি না উঠে তাহলে ৩০ মিনিট পর আবার পানি দিয়ে ভিজিয়ে চেষ্টা করুন তবে আসতে আসতে ঘসে ঘসে তুলতে হবে।
★উষ্ণ সাবান পানিতে হাত ভিজিয়ে রাখতে হবে, এতে হাত থেকে আঠালো ভাব যথেষ্ট হ্রাস হতে পারে।গরম পানি দিয়ে একটি বাটি পূরণ করতে হবে এবং এতে প্রায় ১ টেবিল চামুচ লিকুইড সাবান মেশাতে হবে। এরপরে ৩ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপরে টেনে দেখতে হবে। এরপরও যদি না ওঠে তবে ছোট চামচ দিয়ে চাপ দিতে হবে।
অজু হচ্ছে নামাজের চাবিঃ
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مِفْتَاحُ الْجَنَّةِ الصَّلَاةُ وَمِفْتَاحُ الصَّلَاةِ الطُّهُورُ
– অর্থঃ হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:- বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ, আর নামাজের চাবি হলো অজু। (সহীহ তিরমিযী হাদীস নং-৪, মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং-১৪৬৬২, মিশকাত হাদীস নং-২৯৪)
অজু ব্যতীত নামাজ কবুল হবে নাঃ
عَنْ اَبِى الْمَلِيْحِ عَنْ اَبِيْهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: لَا يَقْبَلُ اللهُ صَلَاةً بِغَيْرِ طُهُوْرٍ وَلَا صَدَقَةً مِنْ غُلُوْلٍ
– অর্থঃ হযরত আবূ মালিহ তাঁর পিতা (উসামা রাযি.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:- আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্রতা ব্যতীত নামাজ কবুল করবেন না এবং অবৈধ সম্পদের সাদকাও কবুল করবেন না। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং-০৬)
অজু ছাড়া নামাজ সহীহ হবে নাঃ عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: لَا اِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهُ, وَلَا صَلَاةَ لِمَنْ لَا طُهُوْرَ لَهُ, وَلَا دِيْنَ لِمَنْ لَا صَلَاةَ لَهُ, اِنَّمَا مَوْضِعُ الصَّلَاةِ مِنَ الدِّيْنِ كَمَوْضِعِ الرَّأْسِ مِنَ الْجَسَدِ – অর্থঃ হযরত ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:- যার আমানত ঠিক নেই তার ঈমানও (পরিপূর্ণ) নেই। যার অজু নেই তার নামাজও আদায় হয় নেই। আর যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে না তার কোন দ্বীন নেই। আর দ্বীনের মধ্যে নামাজের মর্তবা এমন যেমন শরীরের মধ্যে মাথার মর্তবা (অর্থাৎ মাথা ব্যতীত যেমন কোন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না, তদ্রুপ নামাজ ব্যতীত দ্বীনও টিকে থাকতে পারে না (তাবারানী, তারগীব-১:-২৪৬)
★★যেহেতু সুপার গ্লু তোলার জন্য বিশেষ পদ্ধতি রয়েছে,আর আমার জানা মতে এটি এমন আঠা,যেটা চামড়াতে পানি পৌঁছাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে,তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু এটা দূর করার জন্য চেষ্টাও করা হয়নি,তাই উক্ত ৩ ওয়াক্ত নামাজ আবার আদায় করতে হবে।
যেহেতু আপনার অযুই হয়নি,তাই আপনার নামাজ গুলো আবার আদায় করতে হবে।
,
হ্যাঁ যদি আপনি আপ্রান চেষ্টা করতেন সেটা দূর করার,তারপরেও সেটা যদি না উঠে,তাহলে কোনো সমস্যা নেই।