আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
2,240 views
in সালাত(Prayer) by (1 point)
edited by
হাতে সুপার গ্লু লেগেছিল জানতাম না,ওই অবস্থাতেই তিন ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেছি,,সেগুলো কি আবার পড়তে হবে?

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো যদি হাতের ভিতর কোনো এমন জিনিস লেগে যায়,যেটা চামড়া পর্যন্ত পানি পৌছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে,তাহলে উযুর পূর্বে সেটা ছাড়ানোর আপ্রান চেষ্টা করবে।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি সুপার গ্লু তেমনই আঠা হয়,যেটা শরীর পর্যন্ত পানি পৌছার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে,তাহলে উযুর পূর্বে ঘর্ষন দিয়ে অথবা সাবান ইত্যাদির মাধ্যমে সেটা ছাড়ানোর চেষ্টা  করা জরুরি। 
যদি পুরোপুরি চেষ্টা করার পরেও সেটা দুর না হয়,ওযরের কারনে এটি মাফ।

দাতুল উলুম দেওবন্দ এর ফাতাওয়া নং 158494

লিংকঃ

শরীয়তের বিধান হলো যদি শরীরে পানি পৌছাতে কোনো জিনিস প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে, যেমন আংটি ইত্যাদি, এর কারনে যদি আসলেই শরীরে পানি না পৌছে,এমনটি হয়ে থাকলে আপনাকে ঐ নামায গুলো আবার পড়ে নিতে হবে। 
হযরত আবু তামীম জায়শানী রাহ. থেকে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. যখন অযু করতেন আংটি নাড়াচাড়া করতেন। আবু তামীমও তা করতেন। ইবনে হুবায়রাও তা করতেন।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১/৩৭১ (৪৫৬); মাবসূত, সারাখসী ১/১০; আদ্দুররুল মুখতার ১/১২৬; আলবাহরুর রায়েক ১/১৩; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী ৪২৮

★★সুপার গ্লু লাগলে সেটা দূর করা বিশেষ কিছু পদ্ধতি রয়েছে,যেগুলো এপ্লাই করলে আশা করা যায় সেটা দূর হবে।

★গ্লু তোলার জন্য সবথেকে ভালো হল 'থিনার" ও "পেট্রল" ।
★সুপার গুলু আঠা লেগে গেলে সাথে সাথে মুছে ফেলার চেষ্টা করতে হবে। যদি আঠা ভালভাবে লেগে যায় তাহলে তার উপর জোর জুলুম করা যাবেনা, মানে বেশি ঘষাঘষি করা যাবেনা। পানির মধ্যে ১৫-২০ মিনিট হাত ভিজিয়ে রাখলে দেখবেন সব উঠে যাচ্ছে। আর যদি না উঠে তাহলে ৩০ মিনিট পর আবার পানি দিয়ে ভিজিয়ে চেষ্টা করুন তবে আসতে আসতে ঘসে ঘসে তুলতে হবে।
★উষ্ণ সাবান পানিতে হাত ভিজিয়ে রাখতে হবে, এতে হাত থেকে আঠালো ভাব যথেষ্ট হ্রাস হতে পারে।গরম পানি দিয়ে একটি বাটি পূরণ করতে হবে এবং এতে প্রায় ১ টেবিল চামুচ লিকুইড সাবান মেশাতে হবে। এরপরে ৩ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপরে টেনে দেখতে হবে। এরপরও যদি না ওঠে তবে ছোট চামচ দিয়ে চাপ দিতে হবে।


অজু হচ্ছে নামাজের চাবিঃ 
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مِفْتَاحُ الْجَنَّةِ الصَّلَاةُ وَمِفْتَاحُ الصَّلَاةِ الطُّهُورُ 
– অর্থঃ হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:- বেহেশতের চাবি হচ্ছে নামাজ, আর নামাজের চাবি হলো অজু। (সহীহ তিরমিযী হাদীস নং-৪, মুসনাদে আহমাদ হাদীস নং-১৪৬৬২, মিশকাত হাদীস নং-২৯৪)

অজু ব্যতীত নামাজ কবুল হবে নাঃ
 عَنْ اَبِى الْمَلِيْحِ عَنْ اَبِيْهِ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: لَا يَقْبَلُ اللهُ صَلَاةً بِغَيْرِ طُهُوْرٍ وَلَا صَدَقَةً مِنْ غُلُوْلٍ 
– অর্থঃ হযরত আবূ মালিহ তাঁর পিতা (উসামা রাযি.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:- আল্লাহ্ তা’আলা পবিত্রতা ব্যতীত নামাজ কবুল করবেন না এবং অবৈধ সম্পদের সাদকাও কবুল করবেন না। (সুনানে নাসাঈ হাদীস নং-০৬)

অজু ছাড়া নামাজ সহীহ হবে নাঃ عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم: لَا اِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهُ, وَلَا صَلَاةَ لِمَنْ لَا طُهُوْرَ لَهُ, وَلَا دِيْنَ لِمَنْ لَا صَلَاةَ لَهُ, اِنَّمَا مَوْضِعُ الصَّلَاةِ مِنَ الدِّيْنِ كَمَوْضِعِ الرَّأْسِ مِنَ الْجَسَدِ – অর্থঃ হযরত ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:- যার আমানত ঠিক নেই তার ঈমানও (পরিপূর্ণ) নেই। যার অজু নেই তার নামাজও আদায় হয় নেই। আর যে ব্যক্তি নামাজ পড়ে না তার কোন দ্বীন নেই। আর দ্বীনের মধ্যে নামাজের মর্তবা এমন যেমন শরীরের মধ্যে মাথার মর্তবা (অর্থাৎ মাথা ব্যতীত যেমন কোন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না, তদ্রুপ নামাজ ব্যতীত দ্বীনও টিকে থাকতে পারে না (তাবারানী, তারগীব-১:-২৪৬)

★★যেহেতু সুপার গ্লু তোলার জন্য  বিশেষ পদ্ধতি রয়েছে,আর আমার জানা মতে এটি এমন আঠা,যেটা চামড়াতে পানি পৌঁছাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে,তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যেহেতু  এটা দূর করার জন্য চেষ্টাও করা হয়নি,তাই উক্ত ৩ ওয়াক্ত নামাজ আবার আদায় করতে হবে।
যেহেতু আপনার অযুই হয়নি,তাই আপনার নামাজ গুলো আবার আদায় করতে হবে।
,
হ্যাঁ যদি আপনি আপ্রান চেষ্টা করতেন সেটা দূর করার,তারপরেও সেটা যদি না উঠে,তাহলে কোনো সমস্যা নেই। 
  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...