আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
210 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম আমার কয়েকটি প্রশ্ন ছিল। এগুলোর উত্তর দিতে পারলে ভালো হয়।

১. দ্বীনি বিষয়ে তর্ক করা কখন গ্ৰহণীয় ও বর্জনীয়?

২. আমি যদি মাযহাব কে সমর্থন করি কিন্তু সালাফি হয়ে সালফে সালেহিন দের অনুসরণ করি তাহলে কি আমি হক পথে থাকব?

৩. ঢাকা জেলার ভিতর কয়েকজন হক্বানী পীরের নাম বলতে পারবেন। কারণ আমি হক পীরের মুরিদ হতে চাই।

৪.একজন মুজতাহিদ ও একজন মুফতির মধ্যে পার্থক্য কি?

৫.ইখতেলাফি বিষয়ে আমরা যদি শক্ত দলিল না বের করতে পারি তাহলে যেকোন একটা মত অনুসরণ করলেই হয়ে যাবে?

৬.কোন জেনারেল পড়ুয়া ছেলে।সে কোনদিন মাদ্রাসায় পড়েনি। তবে আলেমদের মাধ্যমে তার ইসলাম সম্পর্কে ব্যাসিক জ্ঞান আছে।এখন সে কি পেশাদার ইমামতি করতে পারবে?

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
আল্লাহ তাআলা প্রশংসনীয় বিতর্কের নির্দেশ দিয়েছেন। 
আল্লাহ বলেন, ‘তুমি তোমার রবের পথে হেকমত ও সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে আহ্বান করো এবং সুন্দরতম পন্থায় তাদের সঙ্গে বিতর্ক করো।
(সুরা নাহাল, আয়াত : ১২৫)

সুতরাং আমাদের বিতর্ক যেনো হয় উত্তম পদ্ধতিতে। নম্র, ভদ্র ও সুন্দর বাক্য বিনিময়ে। বিতর্ক যেনো খারাপ ভাষায় না হয়। 

সে সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর তোমরা উত্তম পন্থা ছাড়া আহলে কিতাবদের সঙ্গে বিতর্ক করো না। ’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ৪৬)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
যখন কোনো মাসয়ালা নিয়ে বা দ্বীনের কোনো বিষয় নিয়ে পরস্পর সমস্যা সৃষ্টি হবে,তখন ঐ বিষয়ে বিজ্ঞ ব্যাক্তিগন নম্র, ভদ্র ও সুন্দর বাক্য বিনিময়ে কুরআন হাদীসের দলিলের আলোকে বিতর্ক করতে পারবে।

(০২)
হ্যাঁ আপনি হক পথে থাকবেন,আপনি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।

(০৩)
ইসলামী স্কলারদের মতে আমাদের দেশে কিছু হক্কানী নাম হলোঃ

১-    সাইয়্যেদ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহঃ এর খলীফাগণ।
২-    হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী রহঃ এর খলীফাগণ।
৩-   সাইয়্যেদ আস’আদ মাদানী রহঃ এর খলীফাগণ।
৪-    হাকীম আখতার রহঃ এর খলীফাগণ।
৫-    হারদুই রহঃ এর খলীফাগণ।
৬-   চরমোনাইয়ের পীর দাঃবাঃ ও তার খলিফা গন।
৭-    মুফতী আহমদ শফী রহঃ এর খলিফা গন।
৮-   মাওলানা আব্দুল মতীন দা.বা. ঢালকানগর মাদরাসা।
৯-   মাওলানা ইদ্রিস শায়েখে সন্দিপী রহঃ এর খলীফাগণ।
১০-   হাফেজ্জী হুজুর রহঃ এর খলীফাগণ।
১১-   উজানীর পীর ও তার খলিফা গন।
১২-   মাওলানা আব্দুল হামীদ মধুপুর দাঃবাঃ।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি ঢাকায় যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার শায়েখ মাহমুদুল হাসান দাঃবাঃ এর সান্নিধ্যে যেতে পারেন,ঢালকানগরের শায়েখের কাছে যেতে পারেন,বসুন্ধরার শায়েখ আরশাদ রহমানী দাঃবাঃ এর কাছে যেতে পারেন।

(০৪)
মুফতি (আরবি: مفتي) হলেন একজন ইসলামি পণ্ডিত যিনি ইসলামি আইনশাস্ত্রের বিশদ ব্যাখ্যা এবং ইসলামের আলোকে বিভিন্ন ফতোয়া প্রদান করেন।
,
ইসলামি আইনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় ইজতিহাদের প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ইজতিহাদে সক্ষম ব্যক্তিকে মুজতাহিদ বলা হয়। 

“ইজতিহাদ করার জন্য বেশ কিছু কঠিন শর্ত রয়েছে। 
(যাহা বর্তমান যামানায় কাহারো মধ্যে পাওয়া খুবই দুস্কর।)

সেগুলো হলোঃ-
১. কুরআন-সুন্নাহ’র নস (মূল বক্তব্য) সম্পর্কে জানা থাকতে হবে। সে যদি কেবল একটি সম্পর্কে অবগত থাকে, তাহলে সে মুজতাহিদ নয়। তার জন্য ইজতিহাদ করা বৈধ নয়।
২. ইজমা‘র মাসআলাহসমূহ জানা থাকতে হবে। যেন সে ইজমা‘ বিরোধী ফাতওয়া না দেয়।
৩. আরবি ভাষা সম্পর্কে জানা থাকতে হবে, যেন সে কুরআন-সুন্নাহ’য় বর্ণিত অপরিচিত শব্দের ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়।
৪. তার উসূলে ফিক্বহ সম্পর্কে জানা থাকতে হবে, যেহেতু তা অত্যন্ত জরুরি (‘ইলমী) বিষয়কে শামিল করে। তার উচিত এই বিষয়ে বিশেষ (‘ইলমী) যোগ্যতা অর্জন করা।
৫. তার নাসিখ (রহিতকারী) ও মানসূখ (রহিত) সম্পর্কে জানা থাকতে হবে। যেন এ সংক্রান্ত কোনো মাসআলাহই তার অজানা না থাকে। আর তা একারণে যে, এর অন্যথা হলে সে হয়তো মানসূখ বিধান অনুযায়ী ফায়সালা করে বসবে।” (সংক্ষেপিত)

“ইজতিহাদের জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। যথা:
১. শার‘ঈ দলিল থেকে যা তার ইজতিহাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে তা জানা থাকা। যেমন: বিধিবিধানের আয়াত ও হাদীসসমূহ।
২. হাদীসের বিশুদ্ধতা ও দুর্বলতার সাথে যা সংশ্লিষ্ট তা জানা থাকা। যেমন: সনদ ও তার বর্ণনাকারীদের সম্পর্কে জানা।
৩. নাসিখ (রহিতকারী) মানসূখ (রহিত), ইজমা‘ (মতৈক্য) সংঘটিত হওয়ার স্থান সম্পর্কে জানা থাকা। যাতে করে সে মানসূখ বিধান বা ইজমা‘ বিরোধী বিধান অনুযায়ী ফায়সালা না দেয়।
৪. দলিলসমূহ থেকে যার কারণে বিধান ভিন্নতর হয় তথা খাসকরণ (নির্দিষ্ট), মুক্বাইয়্যাদকরণ (শর্তযুক্ত) প্রভৃতি সম্পর্কে জানা থাকা। যাতে করে সে এগুলোর বিরোধী বিষয়ের দ্বারা ফায়সালা না দেয়।
৫. ভাষা ও ফিক্বহের মূলনীতি থেকে যা কিছু শব্দের মর্মার্থের সাথে সংশ্লিষ্ট তা জানা থাকা। যেমন: ‘আম (ব্যাপক), খাস (নির্দিষ্ট), মুত্বলাক্ব (শর্তহীন), মুক্বাইয়্যাদ (শর্তযুক্ত), মুজমাল (সংক্ষিপ্ত), মুবাইয়্যান (বিস্তৃত) প্রভৃতি। যাতে করে সে ওই মর্মার্থের দাবি অনুযায়ী ফায়সালা দেয়।
৬. তার কাছে এমন সক্ষমতা থাকা, যার দ্বারা সে দলিল থেকে (শার‘ঈ) বিধান উদ্ঘাটন করতে পারে।”

মুজতাহিদ হওয়ার শর্ত সমুহ সম্পর্কে আরো জানুনঃ

(০৫)
আপনি যদি আহলে হাদীস হোন,তাহলে তাদের মত অনুসরণ করবেন,আপনি যদি চার মাযহাবের কোনো মাযহাব মানেন,সেক্ষেত্রে নিজ মাযহাবের প্রদত্ত মত এর উপর আমল করবেন।

(০৬)
তার কিরাআত সম্পূর্ণ ভাবে বিশুদ্ধ হলে ও নামাজের মাসয়ালা মাসায়েল সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে সে এভাবে ইমামতি করতে পারবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...