আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
661 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (18 points)
পোষা প্রাণীদের জন্য পোষাক, গলার লকেট ইত্যাদি অনেক ব্যবসা বিভিন্ন যায়গায় প্রচলিত। ক্ষেত্র বিশেষে কুকুরের যায়গায় শুকর, কাঠবিড়ালী, গিরগিটি ইত্যাদি প্রাণীও অনেকে পালন করেন।সেই ক্ষেত্রে মুসলিম হিসেবে এই ধরনের ব্যবসা করা যাবে? যেখানে এই সকল প্রাণীর ব্যবহার্য জিনিস বিক্রয় করা যায়?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ- 
প্রাণীদের বন্দী করে লালন পালন করা ও পোষা জায়েয রয়েছে।শুকুর এবং কয়েক শ্রেণীর কুকুর ব্যতীত  কুকুর লালন পালন করা নাজায়েয ও হারাম।তাছাড়া অন্যান্য প্রাণীকে পোষা ও লালন পালন করার সাধারণ বিধান হল,বৈধতা।

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত যে,
عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ الله عَنْه قَالَ : كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَحْسَنَ النَّاسِ خُلُقًا ، وَكَانَ لِي أَخٌ يُقَالُ لَهُ أَبُو عُمَيْرٍ ، وَكَانَ إِذَا جَاءَ قَالَ : ( يَا أَبَا عُمَيْرٍ ، مَا فَعَلَ النُّغَيْرُ ؟ نُغَرٌ كَانَ يَلْعَبُ بِهِ )
নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবচেয়ে অধিক সদাচারী ছিলেন। আমার এক ভাই ছিল; ‘তাকে আবূ ‘উমায়র’ বলে ডাকা হতো। আমার ধারণা যে, সে তখন মায়ের দুধ খেতো না। যখনই সে তাঁর নিকট আসতো, তিনি বলতেনঃ হে আবূ ‘উমায়র! কী করছে তোমার নুগায়র? সে নুগায়র পাখিটা নিয়ে খেলতো।(সহীহ বোখারী-৬২০৩,সহীহ মুসলিম-২১৫০)

প্রাণী লালন-পালন কয়েকটি শর্তে ভিত্তিতে জায়েয।
  • (১) প্রাণীকে নিয়মিত খাবার দাবার প্রদান করতে হবে।
হযরত ইবনে উমর থেকে বর্ণিত,
عن ابن عمر رضي الله عنهما قال : قال النبي صلى الله عليه وسلم : ( دخلتِ امرأةٌ النارَ في هِرَّة حبَسَتْها، لا هي أطعَمَتْها ولا هي ترَكَتْها تأكُلُ مِن خَشَاش الأرض حتى ماتَتْ )
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত। আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রেও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।(সহীহ বোখারী-৩৩১৮,সহীহ মুসলিম-২২৪২)

হযরত জাবের রাযি থেকে বর্ণিত
عن جابر بن عبد الله رضي الله عنهما عن رَسُولِ الله صلى الله عليه وسلم : ( أنَّهُ نَهَى أنْ يُقْتَلَ شَيْءٌ مِنَ الدَّوَابِّ صَبْراً )
রাসূলুল্লাহ সাঃ বন্দী করে বোকা রেখে কোনো প্রাণীকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন।(সহীহ মুসলিম-১৯৫৯)


  • (২)প্রাণীকে কোনো প্রকার কষ্ট দেয়া যাবে না।
عن جابر بن عبد الله رضي الله عنهما قال : ( نَهَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَن الضَّرْبِ في الوَجْهِ ، وَعَن الوَسْمِ في الوَجْهِ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ মুখে প্রহার করা  এবং মুখে ট্যাটু অঙ্কন করা যাবে না।(সহীহ মুসলিম-২১১৬)

  • (৩)মা এবং সন্তানের মধ্যকার পৃথকতা সৃষ্টি করা যাবে না।

  • (৪)অযথা মাল খরচ করা যাবে না।

বন্ধ্যাকরণ/ নিউটার এর বিধান-
হালাল প্রাণীকে কোনো ফায়দার যেমন, গোস্তকে সুস্বাদু করা বা তার ক্ষতি থেকে বাচার নিয়তে বন্ধ্যা করা জায়েয। তবে এছাড়া অন্য কোনো কারণ যেমন, তার রিযিকের ভয়ে বন্ধ্যাকরণ জায়েয হবে না।
في الدرالمختار-ج٦: ص:٣٨٨
(وَ) جَازَ ( خِصَاءُ الْبَهَائِمِ)   حَتَّى الْهِرَّةِ، وَأَمَّا خِصَاءُ الْآدَمِيِّ فَحَرَامٌ قِيلَ وَالْفَرَسِ وَقَيَّدُوهُ بِالْمَنْفَعَةِ وَإِلَّا فَحَرَامٌ.
وفي ردالمحتار
وجاز (خصاء البھائم) حتی الھرۃ …..وقیدوہ بالمنفعۃ وھی ارادۃ سمنھا او منعھا من العض
প্রাণীকে বন্ধ্যাকরণ এমনকি বিড়ালকে বন্ধ্যাকরণও জায়েয।ফুকাহায়ে কেরাম বন্ধ্যাকরণ বৈধ হওয়ার জন্য 'ফায়দা' এর শর্তারোপ করেছেন। ফায়দা হল, হয়তো গোস্ত সুস্বাদু হওয়া বা তার ক্ষতি থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া।(রদ্দুল মুহতার-৬/৩৮৮)

وأما في غيره من البهائم فلا بأس به إذا كان فيه منفعة وإذا لم يكن فيه منفعة  أو دفع ضرر فهو حرام  كذا في الذخيرة.
خصاء السنور إذا كان فيه نفع أو دفع ضرر لا بأس به كذا في الكبر
প্রাণীদের বন্ধ্যাকরণে কোনো ফায়দা থাকলে বন্ধ্যা করণ জায়েয। যদি কোনো ফায়দা না থাকে বা কোনো ক্ষতি থেকে নিষ্কৃতি লাভ উদ্দেশ্য না থাকে, তাহলে তখন প্রাণীদের বন্ধ্যাকরণ জায়েয হবে না।বিড়ালকে বন্ধ্যাকরণে কোনো ফায়দা থাকলে, অথবা ক্ষতি থেকে নিষ্কৃতি উদ্দেশ্য থাকলে, তখন বন্ধ্যাকরণ জায়েয হবে।
(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৫৭)



সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রাণী লালন-পালন করা ও পোষা মূলত জায়েয।তবে এ সমস্ত প্রাণীর জন্য অপচয় করা যাবে না।কেননা অপচয়কারী শয়তানের ভাই।প্রানীর পোষাক, গলার লকেট ইত্যাদি জিনিষকে যদি অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যায়,তাহলে সেই জিনিষের ক্রয় বিক্রয়ে কোনো বিধিনিষেধ নেই।তবে যদি এ সমস্ত জিনিষকে এছাড়া অন্যকোনো খাতে ব্যবহার না করা যায়,তাহলে এ সমস্ত জিনিষের ক্রয়বিক্রয়ে ফুকাহাদের মাতবিরোধ রয়েছে।তবে ক্রয় বিক্রয় নিষিদ্ধ হওয়ার মতই গ্রহণযোগ্য। সুতরাং এ সমস্ত জিনিষকে বিক্রয় করা যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (18 points)
জাঝাকুমুল্লাহু খয়রন ওয়া আহসানাল জাঝা

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...