আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
148 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু,
আমাদের এলাকায় এক মেয়ে অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করেছে,কারণ ছেলে এবং মেয়ের দুইজনের পরিবার বিয়েতে রাজি হলেও দেরিতে বিয়ে দিবে বলেছে।তাই তারা পাপ থেকে বাঁচতে অভিভাবক ছাড়া বিয়ে করেছিল।

এখন তাদের পরিবার থেকে তাদের বিয়ে দিবে, ছেলেটা ওই মেয়েকে বিয়েতে সোনা হাদিয়া হিসেবে দিয়েছিল। এখন বর্তমানে ছেলের কাছে খুব বেশি টাকা না থাকায় ওই সোনাগুলো মেয়ের থেকে নিয়ে ওই মেয়েকেই মোহরানা হিসেবে দিতে চাচ্ছে।

১.এইভাবে হাদিয়া দিয়ে পরবর্তিতে সেটা ফেরত নিয়ে আবার মোহরানা হিসেবে ওই মেয়েকেই দেওয়া কি জায়েয হবে?

২. এভাবে দেওয়ার মাধ্যমে বিয়ে করলে কি ওই বিয়েটা সহিহ হবে?

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by
           بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
নং ফাতাওয়ায় আমরা উল্লেখ করেছি যে,
(ثُمَّ الْأَصْلُ) فِي التَّسْمِيَةِ أَنَّهَا إنْ صَحَّتْ وَتَقَرَّرَتْ يَجِبُ الْمُسَمَّى ثُمَّ يُنْظَرُ إنْ كَانَ الْمُسَمَّى عَشَرَةً فَصَاعِدًا؛ فَلَيْسَ لَهَا إلَّا ذَلِكَ، وَإِنْ كَانَ دُونَ الْعَشَرَةِ يُكْمِلُ عَشَرَةً عِنْدَ أَصْحَابِنَا الثَّلَاثَةِ وَإِذَا فَسَدَتْ التَّسْمِيَةُ أَوْ تَزَلْزَلَتْ يَجِبُ مَهْرُ الْمِثْلِ
মহরের মধ্যে মূল বিষয় হল,যদি তা সু-নির্দিষ্ট থাকে এবং কার্যকরী করা বিশুদ্ধ হয়(তথা হারাম কোনো জিনিষ না হয়)তাহলে সেটাই হুবহু কার্যকরী হবে।যদি দশ দিরহামের বেশী হয়,তাহলে হুবহু সেটাই কার্যকরী হবে।আর দশ দিরহামের কম হয়,দশ দিরহাম পর্যন্ত বাড়ানো হবে।হানাফি বড় তিন ইমামের মতে।আর যদি উল্লেখকৃত মহর শরীয়তের দৃষ্টিতে ফাসিদ বলে গণ্য হয়,অথবা অস্পষ্ট ও বাতিল বলে গণ্য হয়,তাহলে মহরে মিছিল ওয়াজিব হবে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩০৩

অন্যর মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত কারো জন্য হালাল হয় না।বিদায় এসব পরিত্যাজ্য।
কেননা আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﻻَ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻣْﻮَﺍﻟَﻜُﻢْ ﺑَﻴْﻨَﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺒَﺎﻃِﻞِ ﺇِﻻَّ ﺃَﻥ ﺗَﻜُﻮﻥَ ﺗِﺠَﺎﺭَﺓً ﻋَﻦ ﺗَﺮَﺍﺽٍ ﻣِّﻨﻜُﻢْ ﻭَﻻَ ﺗَﻘْﺘُﻠُﻮﺍْ ﺃَﻧﻔُﺴَﻜُﻢْ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﺑِﻜُﻢْ ﺭَﺣِﻴﻤًﺎ
তরজমাঃ-হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কেবলমাত্র তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা করো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের প্রতি দয়ালু।(সূরা নিসা(২৯)

এবং হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত,
عن ابن عباس قال;قال رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه و سلم 
  " ﻻ ﻳﺤﻞ ﻣﺎﻝ ﺍﻣﺮﺉ ﻣﺴﻠﻢ ﺇﻻ ﺑﻄﻴﺐ ﻧﻔﺲ ﻣﻨﻪ "
নবী কারীম সাঃ বলেনঃ"কোন মুসলমানের জন্য  অন্য কোনো মুসলমানের মাল তার অন্তরের সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল হবে না।(তালখিসুল হাবীর-১২৪৯)আরো জানুন-৩৭৪৭
★কাউকে  হাদিয়া বা গিফট দেওয়ার পর গিফটদাতা স্বাভাবিকভাবে সেই গিফট ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকার রাখেন না। যারা গিফট দেওয়ার পর তা আবার ফিরিয়ে নেয়, হাদিস শরিফে রাসূল (সা.) তাদের ব্যাপারে কঠিন ভাষা ব্যবহার করেছেন। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেছেন,
الْعَائِدُ فِي هِبَتِهِ كَالْعَائِدِ فِي قَيْئِهِ

‘দান করার পর যে তা ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ ব্যাক্তির মতই, যে বমি করে তা আবার খায়।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৪৪৫]
আরেক হাদিসে বলা হয়েছে,
لَيْسَ لَنَا مَثَلُ السَّوْءِ، الَّذِي يَعُودُ فِي هِبَتِهِ كَالْكَلْبِ يَرْجِعُ فِي قَيْئِهِ
‘নিকৃষ্ট উপমা দেওয়া আমাদের জন্য শোভনীয় নয় (তবু বলতে হয়), যে দান করে তা ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ কুকুরের মত, যে বমি করে তা আবার খায়।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৪৪৬]
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনি ভাই / বোন!
১. আপনি আপনার স্ত্রীর থেকে উক্ত গহণা ফেরত নিতে পারবেন না। তবে আপনার স্ত্রী যদি স্বেচ্ছায়, তার থেকে চাওয়া ছাড়ায় আপনাকে সেই অলংকারগুলির মালিক বানিয়ে দেয়, তাহলে তা জায়েয আছে। আপনি চাইলে উক্ত গহনা তাকে পুনরায় মোহরানা হিসেবেও দিতে পারবেন। কিন্তু শর্ত হলো তার উপর প্রেশার দিয়ে বা জোরপূর্বক তার থেকে চেয়ে নেওয়া নাজায়েয।
২. বিয়ে সহিহ হবে। কিন্তু জোরপূর্বক তার থেকে সেই গহনা নিয়ে মোহরানা হিসেবে পুনরায় দিলে আপনি গুনাহগার হবেন। যদি একান্ত এই মহূর্তে আপনি তার মোহরানা পরিশোধ করতে না পারেন তাহলে পরে দেওয়ার চেষ্টা করবেন ইনশাআল্লাহ। উল্লেখ্য যে, পরিশোধ যোগ্য মোহরানাই সুন্নাত।  সাধ্যের বাহিরে মোহরানা নির্ধারণ  করা সুন্নাতের খেলাফ।  

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...