আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
308 views
in সালাত(Prayer) by (28 points)
আসসালামু আলাইকুম।

বিয়ের পর যে ২ রাকাত সালাত আদায় করে সে ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে চাই। আর বিয়ে পরবর্তী সংশ্লিষ্ট সকল দুয়া সম্পর্কেও জানতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 
 
যদি স্ত্রী ঘরে আগে থেকেই থাকে,তাহলে স্বামী শব্দ করে সালাম দিয়ে কক্ষে প্রবেশ করবে স্ত্রী উত্তর দেবে এবং উঠে যথা সম্ভব মুসাফাহা করে শয্যায় বসাবে। 
আর যদি স্বামী আগে থেকেই ঘরে থাকে,স্ত্রী যদি পরে ঘরে প্রবেশ করে,তাহলে স্ত্রী সালাম দিবে।
স্বামী জবাব দিবে।

কুশলাদি জিজ্ঞাসাবাদের পর  স্বামী-স্ত্রী মিলে ২ রাকআত নামায পড়বে।

আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ (রাযিয়াল্লাহু আনহু) বর্ণনা করেন যে, যখন তোমার নিকট তোমার স্ত্রী বাসর রাতে আসবে তখন তুমি তাকে নিয়ে দুরাকআত নামায পড় এবং নামাযের পর এই দুআ পড়ঃ

اللهم بارك لى فى أهلي وبارك لهم فى اللهم اجمع بيننا ما جمعت بخير وفرق بيننا إذا فرقت الى الخير

 অর্থঃ হে আল্লাহ! আমার জন্যে আমার স্ত্রী ও ভবিষ্যত প্রজন্ম বরকতময় কর এবং আমাকে আমার স্ত্রীর জন্যে বরকতময় করে দাও। হে আল্লাহ যতক্ষণ আমরা উভয়েই একত্রে থাকি ভালভাবেই যেন থাকি আর যদি আমাদের মাঝে কল্যাণ না থাকে তবে আমাদেরকে বিচ্ছেদ করে দিও। (ইমাম তাবরানী এই হাদীস বর্ণনা করেছেন)

নামাজের ক্ষেত্রে স্ত্রী দাঁড়াবে  স্বামীর পশ্চাতে। 
মুসলিম দম্পতির নবজীবনের শুভারম্ভ হবে আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে।  স্বামীর পশ্চাতে দাঁড়িয়ে স্ত্রীর নামায পড়াতে তার (বৈধ বিষয়ে) আনুগত্য করার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে। সুতরাং প্রথমতঃ আল্লাহর ইবাদত ও দ্বিতীয়তঃ  স্বামীর আনুগত্য ও খিদমত হল নারীর ধর্ম।

নামাজ শেষ হলে  অতঃপর  স্বামী দুআ করবে,

اَللّهُمَّ بَارِكْ لِيْ فِيْ أَهْلِيْ وَبَارِكْ لَهُمْ فِيَّ، اَللّهُمَّ اجْمَعْ بَيْنَنَا مَاجَمَعْتَ بِخَيْرٍ،
وَفَرِّقْ بَيْنَناَ إِذَا فَرَّقْتَ إِلى خَيْرٍ.

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা বা-রিকলী ফী আহ্লী, অবা-রিক লাহুম ফিইয়্যা, আল্লা-হুম্মাজমা’ বাইনানা মা জামা’তা বিখাইর, অফার্রিকব বাইনানা ইযা ফাররাকব্তা ইলা খাইর।

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমাকে আমার পরিবারে বরকত ও প্রাচুর্য দান কর এবং ওদের জন্যও আমার মাঝে বর্কত ও মঙ্গল দান কর। হে আল্লাহ! যতদিন আমাদেরকে একত্রিত রাখবে ততদিন মঙ্গলের উপর আমাদেরকে অবিছিন্ন রেখো এবং বিছিন্ন করলে মঙ্গলের জন্যই আমাদেরকে বিছিন্ন করো।
(ইবনে আবী শাইবাহ, মুসান্নাফ, আব্দুর রাযাযাক, মুসান্নাফ, তাবঃ, প্রভৃতি ,আদাবুয যিফাফ ৯৪-৯৬পৃঃ)

অতঃপর উঠে শয্যায় বসে  স্বামী স্ত্রীর ললাট (কপাল এবং তার চুল) এর উপর হাত রেখে ‘বিসমিল্লাহ’ বলে এই দুআ পাঠ করবে;

اَللّهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهَا وَخَيْرِ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ،
وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا  وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ.

উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নী আস্আলুকা মিন খাইরিহা অখাইরি মা জাবালতাহা আলাইহি, অআঊযু বিকা মিন শার্রিহা অশার্রি মা জাবালতাহা আলাইহ।

  অর্থাৎ, হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট এর মঙ্গল এবং এর মধ্যে তোমার সৃষ্ট প্রকৃতির মঙ্গল প্রার্থনা করছি। আর তোমার নিকট এর অমঙ্গল এবং এর মাঝে তোমার সৃষ্ট প্রকৃতির অমঙ্গল হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
(সুনানু আবী দাউদ ২/২৪৮, নং ২১৬০, সুনানু ইবনি মাজাহ ২/৭৫৭, নং ২২৫২। হাদিসটি সহীহ।

স্ত্রীর সঙ্গে প্রথমে অন্তরঙ্গতা সৃষ্টি
করবে,দীর্ঘক্ষন কথা বলে একদম ফ্রী হয়ে নিবে।
যাতে করে স্ত্রীর ভিতর যে ভয় কাজ করতেছিলো,সেটা কেটে যায়।
 তার পর যখনই সহবাস এর ইচ্ছা হয়, তখন
প্রথমে নিম্নোক্ত দু’আ পড়ে নিবে,তার পর সহহবাস করবে।
এই দোয়াটি পরবর্তীতে জীবনের যেকোনো সময়েই সহবাসের সময় পড়তে হবে। 

بِاسْمِ اللّٰهِ اللّٰهُمَّ جَنِّبْنِي الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا"

“বিসমিল্লাহ্। আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ও জান্নিবিশ
শায়তানা মা রাযাকতানা।” (মুসলিম/১৪৩৪)
( উপরোক্ত দোয়া না পড়লে শয়তানের তাছীরে
বাচ্চার উপর কু-প্রভাব পড়ে। অতঃপর সন্তান বড় হলে,
তার মধ্যে ধীরে ধীরে তা প্রকাশ পেতে
থাকে এবং বাচ্চা নাফরমান ও অবাধ্য হয়। সুতরাং পিতা
মাতাকে খুবই শতর্ক থাকা জরুরী)
(নাজমুল ফাতওয়া ৪/১৮)

وفی البخاری (۷۷۶/۲):عن ابن عباس ؓ قال: قال النبي صلى الله عليه وسلم: " أما لو أن أحدهم يقول حين يأتي أهله: باسم الله، اللهم جنبني الشيطان وجنب الشيطان ما رزقتنا، ثم قدر بينهما في ذلك، أو قضي ولد، لم يضره شيطان أبدا "
রাসুল সাঃ বলেন যে কেহ যখন স্ত্রীর সাথে সহবাস করতে  চাইবে,তখন পড়বেঃ
بِاسْمِ اللّٰهِ اللّٰهُمَّ جَنِّبْنِي الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا"
তাহলে শয়তানের তার কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা।

وفی سنن ابی داؤد(۲۹۳/۳):عن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده ؓ عن النبى -صلى الله عليه وسلم- قال: إذا تزوج أحدكم امرأة أو اشترى خادما فليقل اللهم إنى أسألك خيرها وخير ما جبلتها عليه وأعوذ بك من شرها ومن شر ما جبلتها عليه وإذا اشترى بعيرا فليأخذ بذروة سنامه وليقل مثل ذلك ۔
রাসুল সাঃ বলেন যখন কেহ কাউকে বিবাহ করে,,,,তাহলে বলবেঃ
اَللّهُمَّ إِنِّىْ أَسْأَلُكَ مِنْ خَيْرِهَا وَخَيْرِ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ،
وَأَعُوْذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا  وَشَرِّ مَا جَبَلْتَهَا عَلَيْهِ.

ফিকহুল ইসলামী গ্রন্থে বিস্তারিত ভাবে সহবাসের আদাব সমুহ বর্ণনা করা হয়েছেঃ 
وفی الفقہ الاسلامی(۲۶۴۴/۴):آداب الجماع :للجماع آداب كثيرة ثابتة في السنة النبوية منها مايأتي: تستحب التسمية قبله، ويقرأ { قل هو الله أحد }، ويكبر ، ويهلل، ويقول ولو مع اليأس عن الولد:باسم الله العلي العظيم، اللهم اجعلها ذرية طيبة، إن كنت قدرت أن تخرج ذلك من صلبي ,اللهم جنِّبني الشيطان، وجنب الشيطان مارزقتنی،رواه أبوداودو ينحرف عن القبلة، ولايستقبل القبلة بالوقاع، إكراماً للقبلة وأن يتغطى نفسه هو وأهله بغطاء، وألا يكونا متجردين فذلك مكروه كما سيأتي وأن يبدأ بالملاعبة والضم والتقبيل وإذا قضى وطره،فليتمهل لتقضي وطرها ، فإن إنزالها ربما تأخر ويكره الإكثار من الكلام حال الجماع، ولايخليها عن الجماع كل أربع ليال مرة بلا عذر وتأتزر الحائض بإزار مابين السرة والركبة إذا أراد الاستمتاع بها.ومن أراد أن يجامع مرة ثانية فليغسل فرجه، ويتوضأ؛ لأن الوضوء يزيد نشاطاً ونظافة وليس في السنة استحباب الجماع في ليال معينة كالاثنين أو الجمعة، ومن العلماء من استحب الجماع يوم الجمعة ويكره الوط ء وهما متجردان۔لما روى ابن ماجہ عن عتبة بن عبد الله ؓ قال:قال رسول الله ﷺ : إذا أتى أحدكم أهله فليستتر، ولا يتجردان تجرد العَيْرين والعَيْر: حمار الوحش، شبههما به تنفيراً عن تلك الحالة. ويكره تحدثهما بما جرى بينهما، وحرمه بعضهم لما فيه من إفشاء السر، وهو حرام ومن الآداب ألا يحلق شعره، ولا يقلم أظفاره، ولا يخرج دماً، وهو جنب ويستحب في ليلة الزفاف قبل الجماع أن يأخذ الرجل بناصية المرأة ويقول:اللهم إني أسألك من خيرها وخير ما جبلتها عليه، وأعوذ بك من شرها وشر ما جبلتها عليه۔


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...