আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
559 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
১)কোনো জায়গায় কেটে যদি রক্ত বের হয় তাহলে কী অযু ভেঙে যাবে?রক্ত যদি মাটিতে পড়ার আগেই ধুয়ে/মুছে ফেলা হয় তাহলে?

২)কাফির-মুশরিকদের ধ্বংস চেয়ে দোয়া করা যাবে?

বর্তমানে ফ্রান্সের এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফেইসবুকে এক ধরনের ছবি ফ্রেম বের করেছে যেটার একটা লাইন আছে,"May ALLAH destroye France".এইটা ব্যবহার করা কী উচিত হবে?

1 Answer

0 votes
by (564,870 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১) অযু ভঙ্গের অন্যতম একটি কারন হলো রক্ত, পূঁজ, বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া।
 (হেদায়া-১/১০)

 দলিল হল,
أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا رَعَفَ، انْصَرَفَ فَتَوَضَّأَ
আব্দুল্লাহ বিন উমর রাযি.-এর যখন নাক দিয়ে রক্ত ঝরতো, তখন তিনি ফিরে গিয়ে অযু করে নিতেন। (মুয়াত্তা মালিক ১১০)

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُ كَانَ يُفْتِي الرَّجُلَ إِذَا رَعَفَ فِي الصَّلَاةِ، أَوْ ذَرَعَهُ قَيْءٌ، أَوْ وَجَدَ مَذِيًّا أَنْ يَنْصَرِفَ فَيَتَوَضَّأُ
আব্দুল্লাহ বিন উমর রাযি. থেকে বর্ণিত। তিনি যদি কারো নামাযরত অবস্থায় নাক দিয়ে রক্ত ঝড়তো, বা বমি হতো, বা মজি বের হতো তাহলে তাকে ফিরে গিয়ে অযু করার ফাতওয়া প্রদান করতেন। (মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাক ৩৬১০)

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত,  নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِنَّمَا الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ ، وَلَيْسَ مِمَّا دَخَلَ
শরীর থেকে যা কিছু বের হয় এ কারণে অযু ভেঙ্গে যায়, প্রবেশের দ্বারা ভঙ্গ হয় না। (সুনানে কুবরা লিলবায়হাকী ৫৬৮)

★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি রক্ত এতটুকু বের হয় যে ধোয়া না হলে,বা না মুছা হলে গড়িয়ে পড়বে,তাহলে অযু ভেঙ্গে যাবে।
অন্যথায় এর চেয়ে যদি কম হয়,তাহলে অযুর কোনো সমস্যা হবেনা।       

(০২) কাফেররা যদি মুসলমানদের উপর জুলুম করে,অথবা ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করে,তারা যদি আল্লাহ ও তার রাসুল সাঃ এর বিরুদ্ধে কথা বলে,তাদের অপমান হয়,এমন কাজ করে,ইত্যাদি ছুরত গুলোতে তাদেত ধ্বংসের জন্য দোয়া করা জায়েজ আছে। 
বুখারী শরীফে এ সংক্রান্ত একটি বাব কায়েম করা হয়েছে।
بَاب دُعَاءِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلَى كُفَّارِ قُرَيْشٍ شَيْبَةَ وَعُتْبَةَ وَالْوَلِيْدِ وَأَبِيْ جَهْلِ بْنِ هِشَامٍ وَهَلَاكِهِمْ
কুরাইশ কাফির শায়বাহ, ‘উতবাহ, ওয়ালীদ এবং আবূ জাহল ইবনু হিশামের বিরুদ্ধে নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দু‘আ এবং এদের ধ্বংস হওয়ার বিবরণ।

হাদীসটি হলোঃ 
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُوْنٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ قَالَ اسْتَقْبَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْكَعْبَةَ فَدَعَا عَلَى نَفَرٍ مِنْ قُرَيْشٍ عَلَى شَيْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَعُتْبَةَ بْنِ رَبِيْعَةَ وَالْوَلِيْدِ بْنِ عُتْبَةَ وَأَبِيْ جَهْلِ بْنِ هِشَامٍ فَأَشْهَدُ بِاللهِ لَقَدْ رَأَيْتُهُمْ صَرْعَى قَدْ غَيَّرَتْهُمْ الشَّمْسُ وَكَانَ يَوْمًا حَارًّا.
 ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা’বার দিকে মুখ করে কুরাইশের কতিপয় লোকের তথা- শায়বাহ্ ইবনু রাবী’আহ, ‘উত্বাহ ইবনু রাবী‘আ, ওয়ালীদ ইবনু ‘উত্বাহ এবং আবূ জাহ্ল ইবনু হিশামের বিরুদ্ধে দু’আ করেন। আমি আল্লাহর নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি, অবশ্যই আমি এ সমস্ত লোকদেরকে (বাদরের ময়দানে) নিহত হয়ে বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখেছি। প্রচন্ড রোদ তাদের দেহগুলোকে বিকৃত করে দিয়েছিল। দিনটি ছিল প্রচন্ড গরম।  (বুখারী শরীফ ৩৯৬০,আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৭১)


অমুসলিমদের জন্য দোয়া করার ক্ষেত্রে সাধারণ মূলনীতি হল, তাদের জন্য রহমত ও মাগফিরাতের দোয়া করা যায় না। ইমাম নববী রহ. বলেন,
الصلاة على الكافر والدعاء له بالمغفرة : حرام بنص القرآن والإجماع
অমুসলিমের জন্য রহমত ও মাগফিরাতের দোয়া করা কোরআনের বক্তব্য ও সকলের ঐক্যমতে হারাম। (আলমাজমু’ ৫/১১৯)

তবে তাদের জন্য হেদায়েতের দোয়া করা যায়। হাদিস শরিফে এসেছে, আবূ হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
جَاءَ الطُّفَيْلُ بْنُ عَمْرٍو إِلَى النَّبِيِّ ﷺ ، فَقَالَ : إِنَّ دَوْسًا قَدْ عَصَتْ وَأَبَتْ ، فَادْعُ اللَّهَ عَلَيْهِمْ ، فَقَالَ : اللَّهُمَّ اهْدِ دَوْسًا وَأْتِ بِهِمْ
তুফায়েল ইবনু আমর রাযি.  রাসূল ﷺ–এর কাছে এসে বললেন, দাওস গোত্র হালাক হয়ে গেছে। তারা নাফরমানী করেছে এবং (দীনের দাওয়াত) গ্রহন করতে অস্বীকার করেছে। সুতরাং আপনি তাদের প্রতি বদদোয়া করুন। তখন রাসূল ﷺ বললেন, হে আল্লাহ্! দাওস গোত্রকে হেদায়েত দান করুন এবং (দীনের দিকে) নিয়ে আসুন। (বুখারী ২৯৩৭ মাগাযী অধ্যায়)
,
★★সুতরাং তাদের জন্য এই ভাবে দোয়া করা যায়,যে হে আল্লাহ তাদের কপালে হেদায়াত থাকলে তাদের হেদায়াত দিন,হেদায়াত না থাকলে তাদেরকে ধ্বংস করে দিন।
,
★★"May ALLAH destroye France" সাধারণ ভাবে এটা বলার দ্বারা ফ্রান্সের শুধু ঐ লোকদের ধ্বংস চাওয়া উদ্দেশ্য যারা রাসুল সাঃ এর অবমাননা করেছে,বা তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, তাই সেটা জায়েয আছে।

তবে এক্ষেত্রে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যে এক্ষেত্রে তো সমস্ত ফ্রান্স বাসীর ধ্বংস চাওয়া হচ্ছে।
সকলেই তো আর অপরাধী নয়।

তাই এই ভাবে না বলাই ভালো।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/৩৪৪)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...