بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
আকীকা
ও কুরবানী এক সাথে করা জায়েয আছে। কেননা, হাদীস শরীফে আকীকার উপরও ‘নুসুক’
শব্দের প্রয়োগ হয়েছে। আর এখানে ‘নুসুক’ অর্থ
কুরবানী। হাদীসের আরবী পাঠ এই-
سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن العقيقة، فقال : لا أحب العقوق كأنه
كره الاسم، قالوا يا رسول الله! نسألك عن أحدنا يولد له، فقال : من أحب منكم أن
ينسك عن ولده فليفعل، على الغلام شاتان مكافأتان، وعلى الجارية شاة.
( আলমুসান্নাফ, আব্দুর রাযযাক : ৭৯৬১; আলমুসনাদ, আহমদ : ৬৭১৩, ৬৭২২; আসসুনান, আবু দাউদ (আকীকা অধ্যায়)২৮৪২; আস-সুনান, নাসায়ী : ৭/১৬২, ১৬৩; আলমুসান্নাফ, ইবনে আবী শাইবা ১২/৩২৪ হাদীস : ২৪৭২৭; আলমুসতাদরাক,হাকিম, ৫/৩৩৭, হাদীস : ৭৬৬৬)
কোরবানির
পশুর অংশে সন্তানের আকিকা দেওয়া যায়। কোরবানির গরু, মহিষ ও উটে আকিকার নিয়তে শরিক
হওয়া যায়। এতে কোরবানি ও আকিকা দুইটিই হবে। ছেলের জন্য দুই অংশ আর মেয়ের জন্য এক অংশ
দিতে হবে। (ইলাউস সুনান: ১৭/১২৬)
শৈশবে আকিকা
করা না হলে বড় হওয়ার পরও আকিকা করা যাবে। যার আকিকা সে নিজে এবং তার মা-বাবাও আকিকার
গোশত খেতে পারবে। (ইলাউস সুনান : ১৭/১২৬)
ফাতাওয়া
শামিসহ ফিকহ-ফাতাওয়ার কিতাবাদিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, কোরবানির
সাথে আকিকা শুদ্ধ। (রাদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; হাশিয়াতুত তহতাভি আলাদ্দুর:
৪/১১৬)
প্রসঙ্গত, জেনে রাখা
উচিত যে কোরবানির কোন পশুতে কতজন অংশ নিতে পারে। তাহলে কাউকে শরিক করতে চাইলে বিষয়টি
সহজ হয়ে আসবে। প্রথমত কোরবানির পশুতে প্রত্যেক অংশীদারের অংশ সমান হতে হবে।
কারো অংশ অন্যের অংশ থেকে কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড়
ভাগ। এমন হলে কোনো শরিকের কোরবানি শুদ্ধ হবে না। (বাদায়েউস সানায়ি : ৪/২০৭)
উট, গরু, মহিষ সাত
ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও
ছয় ভাগে কোরবানি করা জায়েজ। (মুসলিম, হাদিস: ১৩১৮; বাদায়েউস
সানায়ি: ৪/২০৭)
অংশীদারদের
কেউ যদি আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কোরবানি না করে, শুধু গোশত
খাওয়ার নিয়তে কোরবানি করে; তাহলে তার কোরবানি শুদ্ধ হবে
না। এমনকি তাকে কেউ অংশীদার বানালে, তাদের (অংশীদারদের) কোরবানিও
শুদ্ধ হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অংশীদার নির্বাচন করা জরুরি। (বাদায়েউস সানায়ি
: ৪/২০৮; কাজিখান : ৩/৩৪৯)
প্রসঙ্গত
সন্তান জন্মের পর আল্লাহ তাআলার শুকরিয়া আদায়ের উদ্দেশে জন্মের সপ্তম দিনে পশু জবাই
করাকে আকিকা বলে। আকিকা করা মুস্তাহাব। হাদিস শরিফে আকিকার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে।
রাসুল (সা.)-কে আকিকা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, যে ব্যক্তি
সন্তানের আকিকা করার ইচ্ছা করে, সে যেন তা পালন করে। ছেলের
জন্য সমমানের দুইটি ছাগল। আর মেয়ের জন্য একটি। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস
: ৭৯৬১)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
কুরবানি
ও আকীকা আলাদাভাবেই করা উচিৎ। তবে একত্রে করলে আদায় হবে না তা নয়। একত্রে করলেও কুরবানী-আকীকা
দুটোই আদায় হবে। কারণ আকীকাও এক ধরনের কুরবানী।
সুতরাং
প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে মা ও ছেলের আকীকা একসাথে করা জায়েয আছে। এতে কোন সমস্যা নেই।