بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
সিজদা ও
রুকু অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করা জায়েয নয়। তবে কুরআনের দুয়াগুলো দুয়া হিসেবে পড়া যাবে।
যেমন হাদীসে আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন,
نَهَانِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنْ أَقْرَأَ
رَاكِعًا أَوْ سَاجِدًا»
“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে নিষেধ করেছেন, রুকূ এবং সিজদা অবস্থায় কুরআন পাঠ করতে।”
(নাসাঈ, হা/১১১৯-সহীহ)
ইবনে আব্বাস
রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন,
أَلَا إِنِّي نُهِيتُ أَنْ أَقْرَأَ رَاكِعًا أَوْ سَاجِدًا، فَأَمَّا
الرُّكُوعُ فَعَظِّمُوا فِيهِ الرَّبَّ، وَأَمَّا السُّجُودُ فَاجْتَهِدُوا فِي
الدُّعَاءِ قَمِنٌ أَنْ يُسْتَجَابَ لَكُمْ
“তোমরা শুনে রেখ ! আমাকে নিষেধ
করা হয়েছে রুকু অবস্থায় কিরাআত থেকে এবং সিজদা অবস্থায়। রুকুতে তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের
শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদা বর্ণনা কর। আর সিজদায় তোমরা দোয়া করতে চেষ্টা কর। তোমাদের জন্য
দোয়া কবুল হওয়ার উপযুক্ত সময় এটাই।” (সুনান নাসাঈ হ/১১২০-সহীহ)
উপরোক্ত
হাদীসগুলো থেকে জানা যায় যে, রুকু সিজদা অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত করা জায়েয নাই্। তাই রুকু ও সেজদাহ অবস্থায়
অধিক পরিমানে রুকু-সেজদার তাসবীহগুলো পাঠ করতে হবে।
আর সেজদাহ
অবস্থায় তাসবীহগুলো পাঠ করার পাশাপাশি হাদীসে বর্ণিত দুয়াগুলো পাঠ করার চেষ্টা করতে
হবে। অনুরূপভাবে কুরআনে বর্ণিত দুয়াগুলো দুয়াগুলোও পড়া জায়েয রয়েছে। তবে তা পড়তে হবে
দুয়ার নিয়তে; তেলাওয়াতের
নিয়তে নয়।
عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- كَانَ
يَقُولُ فِى سُجُودِهِ « اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِى ذَنْبِى كُلَّهُ دِقَّهُ
وَجِلَّهُ وَأَوَّلَهُ وَآخِرَهُ
হযরত আবু
হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ সেজদায় পড়তেন আল্লাহুম্মাগফিরলি জামবি’কুল্লাহু
দিক্কাহু ওয়া জিল্লাহু ওয়া আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু”। {তাহাবী শরীফ, হাদিস নং-১৩০৭, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং-৮৭৮, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-১১১২, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং-৬৭২, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-১৯৩১}
নফল নামাযে
চাই তা তাহাজ্জুদ হোক বা অন্য নামায হোক সিজদায় গিয়ে কুরআন-সুন্নাহে বর্ণিত দুআ করা
যাবে। বা কুরআনে বা হাদীসে আছে এমন দুআর সমার্থক শব্দের দুআ করা যাবে। বা আখেরাতের
জন্য দুআ করা যাবে। কিন্তু দুনিয়াবী দুআ করা যাবে না। আরবী ছাড়া অন্য ভাষায়ও দুআ করা
যাবে না।
দুনিয়াবী
দুআ করলে বা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় দুআ করলে নামায ভেঙ্গে যাবে। দুনিয়াবী দুআ-যেমন হে আল্লাহ!
আমাকে এক লাখ টাকা দান করেন। আখেরাতের জন্য দুআ-যেমন-হে আল্লাহ আমাকে জান্নাত দান করেন।
ফরজ নামাযে
সিজদায় অন্য দোয়া না করা উত্তম ৷ নফল নামাযে সিজদা অবস্থায় কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দোয়াসমূহ
পড়া যাবে। তবে নফল হোক কিংবা অন্য কোনো নামাযে অনারবী ভাষায় দুআ করা নিষিদ্ধ।
(সুনানে
আবু দাউদ ১/১২৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫২১; হাশিয়া
তাহতাবী আলাদ্দুর পৃ. ১/২২৯; মাহমুদিয়া ১২/৮৬)
আরবী ব্যতীত
অন্যান্য ভাষায় নামাযে দু'আ করা মাকরুহে তাহরিমী। (আহসানুল ফাতাওয়া-৩/৪৩২)
আরো
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://www.ifatwa.info/185
★সু-প্রিয়
পাঠকবর্গ! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই / বোন!
নফল নামাযে
সিজদা অবস্থায় কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দোয়াসমূহ পড়া যাবে। তবে নফল হোক কিংবা অন্য কোনো
নামাযে অনারবী ভাষায় দুআ করা নিষিদ্ধ।