بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
নিজের ওয়াজিব
কুরবানি আদায় করার পর মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানি করা যাবে। কেননা কুরবানি এক প্রকার
সদকাহ। আর মৃত ব্যক্তির নামে যেমন সাদাকাহ করা যায় তেমনি তার পক্ষ হতে কুরবানিও দেয়া
যায়। সে তার সওয়াব পাবে। যেমন হাদিসে আসে:-
عَنْ
عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ. أَنَّ رَجُلاً، قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه
وسلم إِنَّ أُمِّي افْتُلِتَتْ نَفْسُهَا، وَأَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ
تَصَدَّقَتْ، فَهَلْ لَهَا أَجْرٌ إِنْ تَصَدَّقْتُ عَنْهَا قَالَ " نَعَمْ "
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন, আমার জননীর আকস্মিক মৃত্যু
ঘটে, আমার বিশ্বাস তিনি (মৃত্যুর পূর্বে) কথা বলতে সক্ষম হলে কিছু
সাদাকা করে যেতেন। এখন আমি তাঁর পক্ষ হতে সাদাকা করলে তিনি এ সাওয়াব পাবেন কি? তিনি (নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হাঁ (অবশ্যই পাবে)।(সহীহ বুখারী-
১৩৮৮)
، عَنْ عَائِشَةَ، وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ
ـ صلى الله عليه وسلم ـ كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُضَحِّيَ اشْتَرَى كَبْشَيْنِ
عَظِيمَيْنِ سَمِينَيْنِ أَقْرَنَيْنِ أَمْلَحَيْنِ مَوْجُوءَيْنِ فَذَبَحَ
أَحَدَهُمَا عَنْ أُمَّتِهِ لِمَنْ شَهِدَ لِلَّهِ بِالتَّوْحِيدِ وَشَهِدَ لَهُ
بِالْبَلاَغِ وَذَبَحَ الآخَرَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَعَنْ آلِ مُحَمَّدٍ ـ صلى الله
عليه وسلم ـ .
আয়েশা
(রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
কুরবানীর ইচ্ছা করলে দু’টি মোটাতাজা, মাংসল, শিংযুক্ত, ধুসর বর্ণের
ও ছিন্নমুষ্ক মেষ ক্রয় করতেন। অতঃপর এর একটি নিজ উম্মাতের যারা আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য
দেয় এবং তাঁর নবুয়াতের সাক্ষ্য দেয় তাদের পক্ষ থেকে এবং অপরটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের পক্ষ থেকে কোরবানী করতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩১২২)
তবে মৃত
ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে। কুরবানীর স্বাভাবিক
গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি
কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব-মিসকীনদের
মাঝে সদকা করে দিতে হবে।
لو ضحى عن
ميت وارثه بأمره ألزمه بالتصدق بها وعدم الأكل منها(رد المحتار3/352)
যদি মৃত
ব্যক্তি ওয়ারিশ তার ওসিয়ত পালনার্থে কুরবানী করে, তাহলে তা সদকা করা আবশ্যক,এবং ওয়ারিশরা
এর গোস্ত খেতে পারবে না। (রদ্দুল মুহতার-৩/৩৫২)
*মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানি করা জায়েজ। মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে
সেটি নফল কুরবানি হিসেবে গণ্য হবে। কুরবানির স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে
পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে
থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে। (মুসনাদে আহমাদ ১/১০৭, হাদিস ৮৪৫; ইলাউস সুনান
১৭/২৬৮; রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬; কাযীখান ৩/৩৫২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১. জ্বী, আপনি আপনার বাবা স্বীয় মৃত মা- বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করতে
পারবেন এবং তিনি এই কুরবানীর সওয়াব পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ তায়ালা। ওয়াজিব কুরবানী হলে
অর্থাৎ মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না।
গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে।
আর নফল কুরবানী হলে যিনি কুরবানী করবেন
মূলত তিনি উক্ত গোস্তের অধিকারী। তিনি চাইলে অন্যান্য ভাই ও বোনদের মাঝে তা হাদিয়া
হিসেবে দিতে পারবেন কিন্তু ৯ ভাগ করে সবাইকে দেওয়া আপনার বাবার উপর ওয়াজিব নয়।
২. যদি কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির
গীবত যদি করা হয়, তাহলে তাঁর কাছে থেকে
ক্ষমা নিতে হবে। কারণ, এটা তাঁর হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর হক নষ্ট করেছেন,
তাঁর হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত
বলে তাঁর কাছে থেকে ক্ষমা নিতে হবে। এখন যদি ক্ষমা নেওয়ার কাজটি কাহারো সাধ্যের বাইরে
চলে যায় বা তিনি মারা গিয়ে থাকেন, তাহলে আল্লাহর কাছে তওবা
করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। হতে পারে আল্লাহ বান্দাদের হকগুলো
পরিপূর্ণ করে দিতে পারেন। আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://ifatwa.info/4178/