بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
কোনো বিষয়ের
ইলম অর্জনের জন্য কোনো আলেমের কাছে ইস্তেফতা করা বা জানতে চাওয়ার কিছু আদব ও নীতিমালা
রয়েছে। যেমন:
নির্ভরযোগ্য আলেম নির্বাচিত করা
কারো কাছে
কোনো ফাতওয়া জিজ্ঞেস করার আগে ফাতওয়া জানতে আগ্রহী ব্যক্তির প্রথম দায়িত্ব হল, ফাতওয়া জিজ্ঞেস করার জন্য একজন নির্ভরযোগ্য
আলেম নির্বাচন করা। শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো আলেম নির্ভরযোগ্য কি না, তা যাচাই না করেই তার কাছে কোনো ফাতওয়া
জানতে চাওয়া, তার থেকে
কোনো ফাতওয়া গ্রহণ করা এবং সেই ফাতওয়া অনুযায়ী আমল করা, সবই নাজায়েয ও গোমরাহির কারণ। এটি কেয়ামত
নিকটবর্তী হওয়ারও একটি নিদর্শন। হাদীসে এসেছে,
اتّخَذَ النّاسُ رُؤُساً جُهّالاً، فَسُئِلُوا فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ
عِلْمٍ. فَضَلّوا وَأَضَلّوا. -صحيح البخاري، دار الفكر، ج:1، ص: 35
“(কেয়ামতের পূর্বে) মানুষ অজ্ঞ
লোকদের অনুসৃত বানাবে। তাদেরকে প্রশ্ন করা হবে। তারা না জেনে উত্তর দেবে। এভাবে নিজে
গোমরাহ হবে এবং অন্যকেও গোমরাহ করবে।” –(সহীহ বুখারী
: ১০০; সহীহ মুসলিম : ২৬৭৩)
আল্লামা
তাকি উসমানি হাফিযাহুল্লাহ বলেন,
يجب على المستفتي ألا يسأل إلا من عرف علمه، وعدالته، وكونه أهلا للإفتاء،
سواء علم ذلك بنفسه، أو بإخبار ثقة عارف، أو باستفاضة، بأن علماء ذلك الوقت يثقون
بفتواه. ويجب عليه قبل الاستفتاء أن يبحث عنه بالقدر المستطاع. -اصول الإفتاء:
330-331
“মুস্তাফতির কর্তব্য, এমন ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কাউকে ইস্তেফতা
না করা, যার ইলম ও সততা এবং ফাতওয়া
প্রদানের যোগ্য হওয়ার বিষয়টি তার জানা আছে। চাই তা সে নিজে জানুক বা নির্ভরযোগ্য কোনো
বিজ্ঞ ব্যক্তির জানানোর মাধ্যমে জানুক, অথবা এমন সুখ্যাতির কারণে জানুক যে, সমকালীন উলামায়ে কেরাম তাঁর ফাতওয়ার উপর
আস্থা রাখেন। ইস্তেফতা করার পূর্বে সাধ্যানুযায়ী এমন ব্যক্তির অনুসন্ধান করা তার কর্তব্য।”
–(উসূলুল ইফতা : ৩৩০-৩৩১)
সুতরাং, কেউ যদি যাচাই-বাছাই ছাড়াই অনির্ভরযোগ্য
কোনো আলেমের কাছে কোনো ফাতওয়া জানতে চায় এবং তিনি ভুল ফাতওয়া দেন তাহলে এর গুনাহ মুস্তাফতি
ও মুফতি উভয়ের উপরই আসবে।
পক্ষান্তরে, কেউ যদি যথাযথ নিয়ম রক্ষা করে নির্ভরযোগ্য
আলেম নির্বাচন করার পর তাকে ইস্তেফতা করেন, কিন্তু তিনি ঘটনাক্রমে ভুল ফাতওয়া দেন
(বলা বাহুল্য, নির্ভরযোগ্য
আলেমের ফাতওয়া সাধারণত ভুল হবে না, হলেও তা ঘটনাক্রমেই হবে), তাহলে মুস্তাফতির কোনো গুনাহ হবে না এবং
আলেম যদি তাঁর সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করার পর এমন ভুল হয়ে যায়, তবে তিনিও গুনাহগার হবেন না। অবশ্য ভুল
প্রকাশিত হয়ে গেলে, উভয়কেই
ভুল থেকে ফিরে আসতে হবে। এ প্রসঙ্গে খতীব বাগদাদি রহ. (৪৬৩ হি.) একটি ঘটনা বর্ণনা করেছেন।
তিনি বলেন,
أن الحسن بن زياد، وهو اللؤلؤي استفتي في مسألة فأخطأ، فلم يعرف الذي
أفتاه، فاكترى مناديا ينادي: أن الحسن بن زياد استفتي يوم كذا وكذا في مسألة فأخطأ
فمن كان أفتاه الحسن بن زياد بشيء فليرجع إليه، فمكث أياما لا يفتي، حتى وجد صاحب
الفتوى، فأعلمه أنه قد أخطأ، وأن الصواب كذا وكذا. -الفقيه والمتفقه، رقم: 1205
“হাসান ইবনে যিয়াদ লু’লুই রহ.কে
এক মাসআলায় ইস্তেফতা করা হয়েছিল। তিনি উত্তরে ভুল করেছিলেন। কিন্তু যাকে ফাতওয়া দিয়েছিলেন, তাকে চিনতেন না। ফলে তিনি একজন ঘোষক ভাড়া
করলেন। তিনি ঘোষণা দিতে থাকলেন, হাসান ইবনে যিয়াদকে অমুক দিন, অমুক মাসআলায় ইস্তেফতা করা হয়েছিল। তিনি
তার উত্তরে ভুল করেছিলেন। সুতরাং হাসান ইবনে যিয়াদ এ বিষয়ে যাকে ফাতওয়া দিয়েছেন, তিনি যেন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন!
এ অবস্থায়
কিছুদিন তিনি ফাতওয়া প্রদান থেকেও বিরত থাকলেন। অবশেষে যখন সেই ফাতওয়াপ্রার্থীকে পেলেন, তাকে জানিয়ে দিলেন যে, ফাতওয়াটি ভুল ছিল, সঠিক ফাতওয়া এই।” –(আল ফকীহ
ওয়াল মুতাফাক্কিহ : ১২০৫)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী
ভাই/বোন!
ফাতওয়ার
কোন বিষয়ে অবগত হওয়ার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ হলো লিখিতভাবে কোন নির্ভরযোগ্য মুফতী সাহেবের
থেকে জেনে নেওয়া। তবে আপনার উল্লেখিত প্রশ্নের ভিত্তিতে একান্ত মৌখিক বর্ণনার একান্ত প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করতে পারেন নিম্নোক্ত
নাম্বারে:
মুফতী ইমদাদুল হক দা: বা:
01717917686
মুফতী মুজিবুর
রহমান দা:
বা:
01737228297