আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
246 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু উস্তাদ,

বন্যার এই পরিস্থিতিতে আপনাকে বিরক্ত করার জন্য অনেক বেশি আফওয়ান। ইনশাআল্লাহ খুব শীঘ্রই এই পরীক্ষা থেকে আল্লাহ আপনাদের উদ্ধার করবেন দোয়া করি।

উস্তাদ,
একটা বিষয়ে খুব বেশি জানার আগ্রহ, প্রায় ৫বছর আগে আমি একদিন স্বপ্নে দেখেছিলাম,

একটা ছেলে মাথায় পাগড়ি এবং মুখটা ঢাকা,পাঞ্জাবী পড়া, আমি একটা সুন্দর সবুজ রঙের বাগানে দাঁড়ানো একা একা, উনি ঘোড়ায় করে আমার কাছে আসছে, তারপর একটা বই দিয়ে চলে যাচ্ছেন এমন সময়, আমি পিছন থেকে আবু বকর! আবু বকর! বলে চিল্লাচ্ছিলাম, যে দাড়ান, আমাকে রেখে যাইয়েন নাহ, আমি আপনাকে দেখতে চাচ্ছি, তো উনি পিছনে একবার ঘাড় ঘুরিয়ে তাকায় এরপর  চইলা গেছে,মুখ রুমাল দিয়ে কভার করা ছিলো,  এরপর ঘুম ভেঙে যায়, যদিও আমি স্বপ্নটা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম,কিন্তু সেদিন সালাতের সময় হঠাৎ সেই স্বপ্নটা মনে পড়ে যায় আর আমিও দোয়া করি আল্লাহ সেই আবু বকরকে মিলিয়ে দাও।

এভাবে দোয়া করায় আমার কি গুনাহ হয়েছে? আর এই স্বপ্নটার ব্যাখ্যা কি?

২/
- ইস্তেখারা কন্টিনিউই আছে।আপনি বলেছিলেন যতদিন না কোনো সিদ্ধান্ত /পাত্র/বিষয়ে কনফার্ম হচ্ছি ইস্তেখারা করার জন্য। হোয়াটসঅ্যাপ এ আপনার সাথে কথা হয়েছিলো, এবং আপনি বলেছিলেন, ওই পাত্রের ব্যাপারে পরিবার থেকে যোগাযোগ করতে পারবো,কিন্তু আমি আম্মুকে আমার সব ইস্তেখারা, আপনার প্রশ্নের উত্তর বলেছি উনি বলেছেন, এসব বাদ দিয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে,এবং এইগুলা চিন্তাভাবনা যেনো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলি।এদিকে আমার অবস্থাও ভালো নাহ, আমি যৌথ ফ্যামিলিতে থাকার কারণে অনেক বেশি পর্দা নিয়ে সমস্যায় পড়ছি + আমাদের ঘরে যুবক চাচাতো ভাই আছে, বিশেষ করে আমি তাকে নিয়ে সমস্যা ফেস করছি। আমার তার থেকে পর্দা করা অনেক কষ্টের কারণ সে আমার ছায়াঁ দেখলেও বলে এই তোকে দেখে ফেলেছি তোর পর্দা তো শেষ, এবার তুই কি করবি, জাহান্নামে যাবি, ইত্যাদি।আমি এসব আর নিতে পারছি নাহ। আপনাকে সব কিছু বলতে পারছি নাহ, শুধু এতটুকুই বলছি সে আমার জন্য অনেকটা বিপদজনক।
২৪জুন,
স্বপ্নেই আমি শুনেছি আমাদের বর্তমান বাসায় একটা কালো সাপ পাওয়া গেছে, এরপর আবার দেখি অনেক বিশাল,ইয়া বড়  একটা কালো সাপ যা যাকে পাচ্ছে তাকেই খেয়ে নিচ্ছে,এমনকি যা পাচ্ছে তাই,বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে এরমধ্যে একটা মেয়ের উপরই শুধু শিলা পড়তেছে ভয়ংকর ভাবে,সে আহত হলে কয়েকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়, আবার আমি সেইফ আছি একটা বিল্ডিং এ, জায়গাটা আমরা আগে খুলনায় যেই বাসায় থাকতাম সেখানের পাশের ফ্লাট, আমি দাদু ডাকতাম উনাকে। (বাস্তবে সত্যি ওই সাইডটায় বিশাল একটা আবর্জনার ড্রেন আছে,আমার সবসময় ওইদিকে হোক ছাদে কিংবা দাদুদের বাসায় গেলে সারা শরীর ঝিম ঝিম করতো,মাথা ঘুরাইতো, লাগতো আমি এখনি লাফ দিবো ছাদ থেকে, আর ওইদিনই স্বপ্ন দেখতাম আমি কাউকে ফালায় দিচ্ছি, আমার কোল থেকে কোনো বাচ্চা পড়ে যাচ্ছে, বেশিরভাগই আমার ছোট ভাইকে ফালায় দিচ্ছি দেখতাম) এরপর আমি ভয়ে দরজা জানালা লক করছি, আর সেখান থেকে দেখতেছি, এরপর দরজাটা  কেনো যেনো খুলেছিলাম তখন দরজার সামনে হলুদ-কালো একটা বড় বিছা ছিলো আমি সরাইতে যাবো এমন সময় ঘুম ভেঙে যায়।

 আমি রুকাইয়ার বইয়ে পড়েছিলাম (জ্বীন আক্রান্তর লক্ষণে, স্বপ্নে আক্রমণ করতে দেখা বিভিন্ন জীবজন্তুর মধ্যে কালো সাপ, বিভিন্ন আকৃতির মানুষ  দেখা -লম্বা, খাটো,কালো মানুষ দেখা) যা আমি প্রথম দিন ইস্তেখারায় দেখেছিলাম।আর আমার ব্যাপারে হয়তো এখন আপনি অনেকটাই জানেন বায়োডাটা থেকে যে আমারও জ্বীনকেন্দ্রিক সমস্যা আছে। আমার দ্বিধা-সন্দেহর কারণে স্পষ্ট জিনিসেও কেমন যেনো লাগছে।

আমি একেবারেই কনফিউজড হয়ে আছি উস্তাদ। আমি কোন দিকে যাবো কি করবো কিচ্ছুই ঠিক করতে পারছি নাহ।এদিকে ইস্তেখারা করেও যা দেখছি সব গুলায় যাচ্ছে!

আর আমি শুনেছি আলিমের মাধ্যমে ইস্তিখারা বা অন্য কাউকে দিয়ে ইস্তেখারা করানো নাকি বিদ'আত, কেনো তা বিদ'আত সম্ভবত শুনেছিলাম আল্লাহর কাছে নিজে সাহায্য চাইতে হয়। অন্যকে দিয়ে কোনো সাহাবা বা তাবেঈরা এমন করিয়েছেন কি না বা এটা করানো যায় কিনা এ সম্পর্কেও একটু জানতে চাচ্ছি।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/37196 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যা বিশেষজ্ঞ ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সীরিন রহ. বলেছেন :
الرؤيا ثلاث : حديث النفس ، وتخويف الشيطان ، وبشرى من الله . (رواه البخاري في التعبير)
স্বপ্ন তিন ধরনের হয়ে থাকে। মনের কল্পনা ও অভিজ্ঞতা। শয়তানের ভয় প্রদর্শন ও কুমন্ত্রণা ও আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সুসংবাদ। (বর্ণনায় : বুখারি)

হযরত আবু রাযিন আল-উক্বাইলী রাঃ বলেন নবী কারীম সাঃ বলেছেন
، عَنْ أَبِي رَزِينٍ العُقَيْلِيِّ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «رُؤْيَا المُؤْمِنِ جُزْءٌ مِنْ أَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ، وَهِيَ عَلَى رِجْلِ طَائِرٍ مَا لَمْ يَتَحَدَّثْ بِهَا، فَإِذَا تَحَدَّثَ بِهَا سَقَطَتْ».
মু'মিনের স্বপ্ন হচ্ছে নবুওতের চল্লিশভাগের এক ভাগ(অর্থাৎ তা সত্যরূপ পরিনত হয়ে থাকে),যে স্বপ্ন দেখেছে স্বপ্নটা তার উপর ঘুর্ণায়মান থাকে যতক্ষণ না কারো কাছে ব্যক্ত করে,অতঃপর যখন সে কারো কাছে ব্যক্ত করে (এবংঐ ব্যক্তি এর কোনো ব্যখ্যা প্রদান করে) তখন ঐ ব্যখ্যা অনুযায়ীই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়।(তিরমিযি হাদীস নং ২২৭৮)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
আপনার জীবনে কোনো এক দ্বীনদ্বার মানুষের সাথে সম্বন্ধ হওয়ার পরিবেশ হবে।বিয়ের ব্যবস্থা হতে যাবে।তবে পরক্ষণে সেই সম্বন্ধ ভেঙ্গে যাওয়ার চেষ্টা হবে। আপনার উচিৎ সেই সম্বন্ধকে যে কোনো মূল্যে আটকে রাখা।

আপনার জন্য আবু-বকরকে পাওয়ার দু'আ করা জায়েয হবে।

(২)
জ্বী, আপনার আশপাশে শত্রু রয়েছে। শত্রু আপনাকে আক্রমণ করতে পারে। মানুষ এবং জ্বীন উভয় দিক হতে আপনার উপর আক্রমনের চেষ্টা করা হবে। সুযোগ পেলেই আপনার উপর আক্রমনের চেষ্টা করা হবে। সুতরাং আপনি সর্বদা সতর্ক থেকে নিজে নিজে রুকইয়া করবেন। সূরা নাস, সূরা ফালাক্ব, সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, ইত্যাদি পড়ে সকাল বিকাল নিজের উপর ফু দিবেন।

(৩)
আলিম উলামা বা নেককার লোকদের দ্বারা ইস্তেখারা করানো এর অর্থ হল, দিকনির্দেশনা গ্রহণ করা। অতীতে যদিও এমন কোনো দৃষ্টান্ত খুজে পাওয়া যায় না, সাহাবা বা তাবেঈনদের জমানায় যদিও এমন কোনো ঘটনা পাওয়া যায়না, তথাপি নাজায়েয হওয়ার মত কোনো দলীল প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।হ্যা, উত্তম হল, নিজের ইস্তেখারা নিজেই করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...