আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
99 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ নিল

(১) এক মাসের জন্যে আমি ছুটিতে গেলে, খাদেমাকে পুরো মাসের বেতন দিয়ে যাওয়া কি জায়েজ? তিনি বললেন, তাকে এসে সে মাসের বেতন দিতে হবে। এমনো হতে পারে উনি অন্যত্র কাজ নিয়ে নিলো এসে আর উনাকে পেলাম না। কেননা উনার ভাষ্য, আমি বেতন না দিলে এই মাসের এই সময়টুকু তার নষ্ট হবে, উপার্জন কম হবে।
এদিকে আমি ভাবছি কাজ না করে বেতন চাওয়াটা অনৈতিক। ইসলাম এই বিষয়ে কি বলে? ( যদিও উনি কাজে প্রবেশের পূর্বে বলেছিলেন আমরা ছুটি দিলে বেতন দিতে হবে। আমি বলেছিলাম, ৮-১০ দিন এমনকি ১৫ দিন ছুটি দিলেও দিব, কিন্তু এর বেশি হলে বেতন দেওয়াটাও আমার জন্যে কষ্টের হয়ে যাবে।)
(২) উল্লেখ্য - প্রাইভেট টিউশনি যখন করাতাম, স্টুডেন্ট ছুটিতে গেলে কখনো সেই মাসের টাকা দিতোনা। এদিকে আমিও শ্রমবিহীন অর্থের কথা চিন্তাও করতে পারিনা। তাই কখনো চাইতাম না। এক্ষেত্রে কি মাসা'আলা? আমি অর্থ দাবী করতে পারি?

দুটো বিষয়কে আমি এভাবে মিলিয়েছি। এখন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিনা। দয়া করে শরীয়তের আলোকে সমাধানের পথ দেখাবেন।

1 Answer

+1 vote
by (61,230 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/36011/?show=36011#q36011 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,

ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ  ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম। রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন, তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ? আমি বললাম জ্বী হ্যাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ!

 

তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো। নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে। আর গোনাহ হল সেটা, যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়, এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে। যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন। (মুসনাদে আহমদ-১৭৫৪৫)

নিজে উপার্জন করে খাওয়ার কথা রাসুল সাঃ বলেছেন। হাদীসে এসেছে, হযরত মিক্বদাম ইবনে মা'দি কারুবা রাযি থেকে বর্ণিত,

 ﻋَﻦِ اﻟْﻤِﻘْﺪَاﻡِ ﺑْﻦِ ﻣَﻌْﺪِﻱ ﻛَﺮِﺏَ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ: ﻗَﺎﻝَ: ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ اﻟﻠَّﻪِ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - " «ﻣَﺎ ﺃَﻛَﻞَ ﺃَﺣَﺪٌ ﻃَﻌَﺎﻣًﺎ ﻗَﻂُّ ﺧَﻴْﺮًا ﻣِﻦْ ﺃَﻥْ ﻳَﺄْﻛُﻞَ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ، ﻭَﺇِﻥَّ ﻧَﺒِﻲَّ اﻟﻠَّﻪِ ﺩَاﻭُﺩَ - ﻋَﻠَﻴْﻪِ اﻟﺴَّﻼَﻡُ - ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺄْﻛُﻞُ ﻣِﻦْ ﻋَﻤَﻞِ ﻳَﺪَﻳْﻪِ» "

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, নিজ হাতের উপার্জন হতে অধিক উত্তম রিজিক কেউ কখনো আহার করেনি। আর আল্লাহর নবী হযরত দাউদ আঃ নিজ হাতের উপার্জন দ্বারাই দিনাতিপাত করতেন। (মিশকাত-২৭৫৯)

হযরত ইবনে মাসউদ রাযি থেকে বর্ণিত,

 عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ - رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ - قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: " «طَلَبُ كَسْبِ الْحَلَالِ فَرِيضَةٌ بَعْدَ الْفَرِيضَةِ» " رَوَاهُ الْبَيْهَقِيُّ فِي " شُعَبِ الْإِيمَانِ.

রাসুলাল্লাহ সাঃ বলেন,হালাল রিযিক তালাশ করা অন্যন্য ফরয বিধানের পরই ফরয। (মিশকাতুল মাসাবিহ-২৭৮১)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন! 

১. কোন খাদেম বা খাদেমাকে অগ্রিম বেতন দেওয়া জায়েয আছে। তবে এটি নির্ভর করবে প্রাথমিক চুক্তি বা শর্তের উপর। যদি পূর্বে থেকেই এমন আলোচনা হয় যে, ছুটিতেও তাকে বেতন দিতে হবে তাহলে আপনার জন্য তাকে ছুটিতেও বেতন দেওয়া আবশ্যক। পূর্ব কোন আলোচনা না হয়ে থাকলে আপনি তাকে অগ্রিম কিংবা মাস শেষে বেতন দিতে পারেন আপনার ইচ্ছানুযায়ী আর যদি এমন কোন চুক্তি না হয়ে থাকে তাহলে তা আপনার জন্য জরুরী নয়। এমতাবস্থায় তার বেতন চাওয়া অনৈতিক বলে গন্য হবে। সর্বপরি আপনার থেকে কোন মাসের বেতন নেওয়ার পর সে যদি ঐ মাস আপনার খেদমত না করে অন্যত্র চলে যায় তাহলে তা ধোকার সামিল হবে। যার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে জবাবদিহিতা করতে হবে।

২. যদি ছুটিতে থাকার সময়ও টিউশনির টাকা নেওয়ার পূর্ব শর্ত থাকে তাহলে আপনি সে টাকার হকদার হিসেবে দাবি করতে পারবেন। অন্যথায় আপনার জন্য তা দাবি করা জায়েয হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...