ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/16226 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা বলছেন
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاء وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ فَرِيضَةً مِّنَ اللّهِ وَاللّهُ عَلِيمٌ حَكِيمٌ
যাকাত হল কেবল (১)ফকির, (২)মিসকীন, (৩)যাকাত উসূলকারী ও (৪)যাদের চিত্ত আকর্ষণ প্রয়োজন তাদের হক (৫)এবং তা দাস-মুক্তির জন্যে ও (৬)ঋণগ্রস্তদের জন্য, (৭)আল্লাহর পথে জেহাদকারীদের জন্যে এবং(৮) মুসাফিরদের জন্যে, এই হল আল্লাহর নির্ধারিত বিধান। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। সূরা (আত-তাওবাহ-৬০)
পিতা-পুত্র, স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক ব্যতীত যাকাতের হক্বদার যে কোন আত্মীয়কে যাকাত দেয়া যাবে।এমনকি যাকাতের হকদার নিকটাত্মীয় হলে তাকে দেয়াই উত্তম হবে।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৯/৫৩৮)
কে যাকাত খেতে পারবে?
وَلَا يُشْتَرَطُ النَّمَاءُ إذْ هُوَ شَرْطُ وُجُوبِ الزَّكَاةِ لَا الْحِرْمَانِ كَذَا فِي الْكَافِي. وَيَجُوزُ دَفْعُهَا إلَى مَنْ يَمْلِكُ أَقَلَّ مِنْ النِّصَابِ، وَإِنْ كَانَ صَحِيحًا مُكْتَسَبًا كَذَا فِي الزَّاهِدِيِّ.
অর্থাৎ-নেসাব পরিমাণ মাল(নামী তথা বাড়ন্ত হোক বা না হোক,শরীয়তে নামী মাল চার প্রকার যথা-স্বর্ণ,রূপা বা টাকা,ব্যবসার মাল,গবাদি পশু)
এর মালিক না হলে যাকাত খাওয়া যাবে যদি প্রয়োজন থাকে।তাই গায়রে নামী বা অবাড়ন্ত মালের নেসাব পরিমাণ কেউ মালিক হলে যদিও তার উপর যাকাত আসবে না তথাপিও সে যাকাতের মাল খেতে পারবে না।আর কোনো প্রকার মালই যদি কারো কাছে নেসাব পরিমাণ না থাকে তাহলে সে সুস্থ উপার্জন স্বক্ষম হওয়া সত্তেও তার জন্য যাকাতের মাল খাওয়া জায়েয আছে।
ফাতাওয়া হিন্দিয়া-১/১৮৯
والأولى أن يفسر الفقير بمن له ما دون النصاب كما في النقاية أخذا من قولهم يجوز دفع الزكاة إلى من يملك ما دون النصاب أو قدر نصاب غير تام، وهو مستغرق في الحاجة،
ফকিরের উত্তম ব্যখা হলো,যার নেসাব পরিমাণ মাল নেই।সুতরাং যার নেসাব পরিমাণ মালে নামী(ক্রমবর্ধমান) নাই বা যার নেসাব পরিমাণ মালে গায়রে নামী(ক্রমবর্ধমান নয়)আছে, তবে সে হাজতে লিপ্ত, এমন ব্যক্তিকে যাকাত দেয়া যাবে। (বাহরুর রায়েক্ব-২/২৫৮)
যাকাত কাদেরকে দেওয়া যাবে-
৮টি খাতে যাকাতের মালকে ব্যবহার করা যায়।এ সম্পর্কে আল-কুরআনের বাণী শুনুন-
ফকির-মিসকিন শব্দের ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা বর্ণিত থাকলেও আমরা একটুকু বলতে পারি যে,যার নেসাব পরিমাণ মাল নেই তাকে যাকাত দেওয়া যাবে।
ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
سئل محمد عمنله أرض يزرعها أو حانوت يستغلها أو دار غلتها ثلاث آلاف ولا تكفي لنفقته ونفقة عياله سنة؟ يحل له أخذ الزكاة وإن كانت قيمتها تبلغ ألوفا وعليه الفتوى
ইমাম মুহাম্মাদ রাহ কে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো,যার কৃষিযোগ্য জমি রয়েছে বা এমন দোকান রয়েছে যেখান থেকে সে মুনাফা পায়,অথবা যার তিন হাজার দিরহাম(ইসলামী দিরহাম) মূল্যর ঘর রয়েছে,কিন্তু এসবগুলো তার এবং তার পরিবারবর্গের এক বৎসরের খোরাকি বাবৎ যথেষ্ট নয়।এমন ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ জায়েয।যদিও তার এইসব জিনিষের মূল্য কয়েক হাজার দিরহাম(ইসলামী) পর্যন্ত পৌছুক।এ সিদ্ধান্তের উপরই ফাতাওয়া। রদ্দুল মুহতার(শামী)-২/৩৪৮(শামেলা)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আম ভাবে বন্যাদুর্গতদেরকে যাকাত দেওয়া জায়েয হবে না। বরং গরীব যাদের নেসাব পরিমাণ মাল নেই, অথবা যাদের নিকট কিছু মাল রয়েছে, তাদেরকে যাকাত দেয়া যাবে।
অর্থাৎ যাদের উপর যাকাত ফরয নয়, শুধুমাত্র তাদেরকেই যাকাত দেয়া যাবে।