আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
176 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (3 points)
reshown by
মুহতারাম, আমরা তিন বোন। আমরা ভাড়া বাসায় থাকি। আমার আব্বুর আড়াই লাখ টাকা ঋণ আছে। আমার আব্বুর আয় খুবই স্বল্প যা পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য যথেষ্ট নয়। আমি একজন বিবাহযোগ্য মেয়ে।  আমার আম্মু একজন গৃহিণী। আমার ছোট বোন একজন তালিবে আলম।  এমতাবস্থায় আমি প্রাইভেট পড়িয়ে কিছু টাকা উপার্জন করি যা আম্মুর কাছে রাখি। এই টাকার মালিকানা আমি আম্মুকে দিয়ে দেই। আম্মু তা থেকে কিছু ব্যয় করে আবার কিছু জমিয়ে রাখে। আম্মুর কাছে বর্তমানে ৭৪ হাজার টাকা আছে। আর ব্যবহৃত স্বর্ণ আছে ১ ভরি।

 আমাদের নিজস্ব কোন জমি কিংবা ঘর নেই। আমার দাদা জীবিত আছেন। সম্পত্তি বন্টন না করলেও মুখে মুখে বলেছেন অমুক জায়গা অমুকের। বর্তমানে তিনি ঘর বানানোর অনুমতি দিয়েছেন। টাকা জমানোর ক্ষেত্রে আম্মুর নিয়ত আব্বুর ঋণ পরিশোধ বা আমার বিয়ে বা থাকার জন্য ঘর তৈরি।
উল্লেখ্য আমার আব্বুর বর্তমানে ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য নেই।
উল্লেখিত পরিস্থিতিতে আম্মুর উপর যাকাত ও কোরবানী ওয়াজিব হয়েছে কি?

1 Answer

+1 vote
by (58,830 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ مَنْ وَجَدَ سَعَةً فَلَمْ يُضَحِّ فَلَا يَقْرَبَنَّ مُصَلَّانَا

আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানী করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (মুসনাদ আহমাদ ৮২৭৩, ইবনে মাজাহ ৩১২৩, হাকেম ৭৫৬৫-৭৫৬৬)

কুরবানি দেওয়া ওয়াজিব।কার উপর ওয়াজিব? এ সম্পর্কে ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,

مِنْهَا الْيَسَارُ وَهُوَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبِ صَدَقَةِ الْفِطْرِ دُونَ مَا يَتَعَلَّقُ بِهِ وُجُوبُ الزَّكَاةِ،

এই পরিমাণ ধনবান ব্যক্তির উপর কুরবানি ওয়াজিব,যে পরিমাণ ধনসম্পত্তি থাকার কারণে কারো উপর সদকায়ে ফিতর ওয়াজিব হয়।যাকাত ওয়াজিব হওয়ার নেসাব পরিমাণ সম্পত্তির মালিক হওয়া শর্ত নয়।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/২৯২, কিতাবুল-ফাতাওয়া-৪/১৩১)

কুরবানির নেসাব পৃথক।এবং যাকাতের নেসাব পৃথক। কুরবানি ওয়াজিব হলেই যে যাকাত দিতে হবে,বিষয়টা মূলত এমন নয়। বরং যাকাত ওয়াজিব হলেই কুরবানিও ওয়াজিব হবে। কেননা যাকাতের জন্য ক্রমবর্ধমান মাল হওয়া শর্ত।কিন্তু কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য ক্রমবর্ধমান মাল হওয়া শর্ত নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/1688

ঋনগ্রস্ত ব্যাক্তির যদি ঋনের টাকা ব্যাতিত নেসাব পরিমান সম্পদ না থাকে,তাহলে তার উপরে কুরবানী আদায় করা ওয়াজিব হবেনা। তবে ব্যবসায়ী ঋণ হলে কুরবানী ওয়াজিব হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ

https://ifatwa.info/14383/

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে যদি আপনি আপনার মাকে উক্ত টাকার মালিক বানিয়ে দেন তাহলে তার উপর যাকাত ও কুরবানী উভয়টিই ওয়াজিব হবে। যদিও তার সেই টাকা দিয়ে আপনার বাবার ঋন পরিশোধের নিয়ত আছে। কারণ প্রত্যেকের নেসাব পৃথক ও ভিন্ন। আপনার বাবা ঋনগ্রস্ত হলেও আপনার মা কিন্তু ঋনগ্রস্ত নয়।

কুরবানী আদায়ের ক্ষেত্রে লক্ষনীয় বিষয় হলো, ৩০/৪০ হাজার টাকা দিয়ে কুরবনী দেওয়া জরূরী নয়। স্বল্প মূল্যের একটি ছাগল দিয়েও কুরবানী দেওয়া যায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (3 points)
edited by
জাঝাকুমুল্লাহু খয়রন । আমি আরো একটি প্রশ্ন করতে চাচ্ছি,  যাকাত আদায় ও কিছু ঋণ পরিশোধ করার পর যদি আম্মুর কাছে ৫২ হাজার টাকার থেকেও অনেক কম থাকে সেক্ষেত্রে কুরবানীর বিধান কি? আবার এমনও হতে পারে আমার বিয়ে বাবদ খরচ করার পর কিছুই রইলো না। শুধু স্বর্ণ ছাড়া। এক্ষেত্রে এখন আমাদের করণীয় কি? কারণ শুধুমাত্র ঐ টাকাগুলো ছাড়া আমাদের আর কোন সম্বল নেই । আবার আমার ভাইও নেই। সন্তান হিসেবে এই বাবার ঋণ শোধ করা কি আমার কর্তব্য? 
উত্তর জানালে খুবই  উপকৃত হতাম। আল্লাহ আপনাদের উত্তম বিনিময় দান করুন।
by (58,830 points)
যদি উক্ত টাকা থেকে খরচ বা ঋণ পরিশোধ করার পর  নেসাব পরিমান অর্থ  থেকে কমে যায় যা যাকাত ওয়াজিব হওয়ার সমপরিমাণ নয় তাহলে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। আর শুধু ৈএক বা দুই ভরি স্বর্ণ থাকলে যাকাত ফরজ হবে না যদি তার সাথে টাকা বা অন্য কোন গহনা না থাকে যেটি যাকাতের নেসাবের অন্তর্ভূক্ত।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...