আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
200 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (13 points)
এক লোকের গোপনাঙ্গে ক্যান্সার হয়েছিল। খুব বেশি মারাত্তক ছিলো না, চিকিৎসা নিলে আল্লাহ চাইলে সে সুস্থ হয়ে যেত। কিন্ত সে এটাকে ইচ্ছা করে গোপন রাখে এবং শেষ পর্যন্ত মারা যায়। তার মৃত্যুর পর এটা জানা যায়।
১/সে কি আত্মহত্যা করেছে?

২/আর যদি আত্মহত্যা না হয় তাহলে কি তার গুনাহ হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

রোগ-ব্যাধি আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি পরীক্ষা। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা বান্দাদের গুনাহ-খাতা মোচন করেন এবং তাঁর দরবারে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। তাই আমাদের কর্তব্য হল, রোগ-ব্যাধিতে আল্লাহ পক্ষ থেকেপ্রতিদানের আশা করা। সেই সাথে সুস্থতার জন্য দুআ করার পাশাপাশি বৈধ পন্থায় চিকিৎসা গ্রহণ করা। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:

مَا أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ دَاءً، إِلَّا أَنْزَلَ لَهُ دَوَاءً، عَلِمَهُ مَنْ عَلِمَهُ، وَجَهِلَهُ مَنْ جَهِلَهُ

 “আল্লাহ তাআলা এমন কোন রোগ অবতীর্ণ করেন নি যার ওষুধ অবতীর্ণ করেন নি। (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা প্রতিটি রোগ-ব্যাধির সাথে সাথে সেগুলোর প্রতিষেধকও অবতীর্ণ করেছেন। সেগুলো কেউ জানে আর কেউ জানে না।” (মুসনাদ আহমাদ, ইমাম আলাবানী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন)

এ ছাড়াও তিনি চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ধরণের দুআ ও ঝাড়-ফুঁকের পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন। এমনকি বিভিন্ন ডাক্তারি পরামর্শও দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে ইমাম ইবনুল কাইয়েম রহ. এর তিব্বে নব্বী একটি বিখ্যাত বই রয়েছে।

 

মধু ও কালিজিরা ইত্যাদি বিভিন্ন খাদ্য গ্রহণে উৎসাহিত করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তার (মৌমাছির) উদর থেকে নির্গত হয় বিবিধ বর্ণের পানীয় (মধু), যাতে মানুষের জন্য রয়েছে আরোগ্য। ’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৬৯)

 আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘কালিজিরার মধ্যে মৃত্যু ছাড়া অন্য সব রোগের আরোগ্য রয়েছে। ’ (বুখারি, হাদিস : ৫২৮৬)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

কেউ যদি রোগ-ব্যাধিতে আল্লাহর প্রতি মনঃক্ষুণ্ণ ও বিরক্ত না হয়ে আল্লাহর তকদিরের উপর সবর করে এবং সেই সাথে আল্লাহর দেয়া বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে চিকিৎসা করে তাহলে এটি সবর ও তাওয়াককুল এর পরিপন্থী নয়। কেননা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ সবর কারী ও তাওয়াক্কুল কারী কিন্তু তিনি নিজেই চিকিৎসা করেছেন এবং চিকিৎসা গ্রহণের প্রতি উৎসাহিত করেছেন।

বরং যে সকল রোগে জীবন নাশ ও অঙ্গহানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সে সব রোগের চিকিৎসা করা ওয়াজিব। অর্থাৎ না এ ক্ষেত্রে চিকিৎসা না করলে গুনাহগার হতে হবে। এ মর্মে একদল আলেম মত প্রকাশ করেছেন।

তবে সাধারণ রোগ-ব্যাধিতে কেউ যদি চিকিৎসা গ্রহণ না করে -তাও জায়েয রয়েছে। এটি মানুষের ঈমানী মজবুতির উপর নির্ভর করে। তবে সাধারণভাবে চিকিৎসা করাই উত্তম। যেহেতু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে সর্বশ্রেষ্ঠ সবরকারী ও আল্লাহর উপর তাওক্কুলকারী হওয়ার পরও নিজেই চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন এবং চিকিৎসার নানা পদ্ধতি তার উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন।

সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে সেই ভাইয়ের চিকিৎসা করে সুস্থতার আশা থাকলে চিকিৎসা করা তার প্রয়োজন ছিল। এমনটি না করে তিনি ইন্তেকাল করায় একদল আলেমের মতে তিনি গুনাহগার হবেন। আল্লাহ তায়ালা উক্ত ভাইয়ের গুনাহ মাফ করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...