আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
337 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (13 points)
edited by
আমি অনেকদিন যাবত ওয়াসওয়াসায় ভুগছি। কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না। আমার সারাক্ষণ ঈমান হারানোর ভয় থাকে।

১. আমার প্রায়ই মনে হয় ঈমান চলে গেছে। তখন ঈমান হারানো অবস্থায় ফেইসবুকে ম্যাসেজ আসলে আমি সেটা কেটে দেই এবং ঈমান আনি। আমার কাছে মনে হয় যে ম্যাসেজ যেহেতু ঈমান হারানোর অবস্থায় এসেছে তাই না কাটলে ঈমান আসবে না। তাই, আমি ম্যাসেজ কেটে ঈমান আনি। যদিও আমি জানি ম্যাসেজ না কাটলেও ঈমান আসবে। কিন্তু, মনে মনে নিয়ত হয়ে যায় ম্যাসেজ কাটার। আজকে নিজেকে শান্ত করার জন্য আমি উচ্চারণ করে বলেছিলাম, "আমি যদি এভাবে ম্যাসেজ কাটি তাহলে যে ম্যাসেজ দিয়েছে তার কাছ থেকেও সব ম্যাসেজ ডিলিট করে দিতে হবে। যতবারই আমি ডিলেট করবো ততবারই যার কাছ থেকে ম্যাসেজ এসেছে তার কাছ থেকে ডিলেট করতে হবে।" - সম্ভবত এই ধরনের ওয়াদা করেছি। পরে ভয় পেয়ে তা আবার ভেঙেছি। আমার ধারণা যে এই ওয়াদা রাখতে পারবো না। তবে, ওয়াদা করার সময় আমার মনে মনে ছিল হয়তো যে ম্যাসেজ না কাটলে ঈমান আসবে না। যদিও আমি চাইনি এটা মনে আসুক তবুও এসে গিয়েছিল মনে হয়। আমি আসলে কিছুই স্পষ্ট মনে করতে পারছিনা। তবে, ঈমান না আসার বিষয় আমি মুখে উচ্চারণ করিনি। আমি সবসময় চাই যে ফেইসবুক এর সাথে এটা সম্পর্কিত না হোক। তাই, আমি ইচ্ছা করেই ওয়াদা ভেঙেছি। মানে ম্যাসেজ ডিলিট করে ঈমান নবায়ন করেছি। তবে, আমি শুধু আমার ম্যাসেজ ডিলিট করেছি। যে ম্যাসেজ দিয়েছে তার কাছ থেকে ডিলেট করিনি। এখন ভয় হচ্ছে যে, আমি তো বলেছিলাম "যতবারই ম্যাসেজ ডিলিট করবো.....' - এর মাধ্যমে কি পরিবর্তে যদি ম্যাসেজ ডিলিট করে দেই তাহলে কি ঈমান চলে যাবে? কিংবা এটা কি ঈমানের সাথে সম্পর্কিত হয়ে গেছে?
২. উপরের প্রশ্নে যদি আমি সতর্কতা হিসেবে অতিরিক্ত কিছু বলে থাকি তাহলে কি সেটা কার্যকর হয়ে যাবে? নাকি আমি যা উচ্চারণ করেছি তা-ই কার্যকর হবে। আসলে আমি মনে হয় একটু বাড়িয়ে লিখেছি।

৩. কেউ যদি বলে উমুক তারিখ পর্যন্ত যতবারই আমি সকাল এবংং রাত ব্যতিত কালিমা শাহাদাত পাঠ করবো ততবারই ওয়াদা ভেঙে ফেলার সামিল হবে। তাহলে কি যতবারই ঐ সময় ছাড়া পাঠ করা হবে ততবারই কি ওয়াদা ভেঙে যাবে? আমি আসলে ওয়াদা করেছিলাম, কোরবানির ঈদ পর্যন্ত আমি সকাল ও রাত ছাড়া কালিমা শাহাদাত পাঠ করবো না। (ওয়াদা করার সময় আরও কিছু ক্ষেত্র উল্লেখ করেছিলাম, যেমনঃ কোথাও লেখা দেখলে, ঈমান হারানোর স্পষ্ট কারণ পেলে, দোয়ায় আসলে, কিংবা কেউ আমাকে পাঠ করালে ইত্যাদি) অর্থাৎ সকাল ও রাত ব্যতিত ঈমান হারানোর ওয়াসওয়াসায় পাঠ করবো না। কিন্তু, আমি এই ওয়াদা রাখতে পারছিনা।
৪. আমার মনের মধ্যে খারাপ চিন্তা চলে আসে ইসলাম সম্পর্কে । কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যে আমি ইচ্ছা করেই কি এগুলো আনি কি না? আমি বুঝতেই পারি না এগুলো কি আমি আনি নাকি ওয়াসওয়াসা।
৫. আমি মাঝে মাঝে কালিমা পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে যায়। মাথা খারাপ লাগে। উচ্চারণ করার সময় উচ্চারণ ভুল হয়ে যায় মনে হয়। তাছাড়া খারাপ চিন্তা চলে আসে।
আমার কালিমা পাঠ দেখলে আপনারই হুজুর হয়তো কষ্ট হবে। কারণ, আমি পড়তেই থাকি জোরে জোরে। হয়তো একা ঘরে কিংবা বাজারের কোন নির্জন জায়গায় গিয়ে। কিংবা আড়ালে। প্রচুর মাথা খারাপ লাগে মাঝে মাঝে।

৬. উপরের প্রশ্নগুলো আমি একটি ফেইক আইডি খুলে করেছি যাতে আমার রোগ মানুষের কাছে প্রকাশ না পায়। উপরের প্রশ্নগুলো করার মাধ্যমে কিংবা ফেইক আইডি খুলে প্রশ্ন করার কারণে কিংবা আইডি খোলার সময় ক্যাপচা হিসেবে আল্লাহর নাম লিখতে হয়েছে। অর্থাৎ ফেইক আইডি খোলার জন্য আল্লাহর নাম লিখতে হয়েছে। আমার কি কোন কারণে ঈমান চলে গেছে?

হুজুর, আপনি আমাকে নেককার কোন হুজুরের সোহবত নিতে বলেছিলেন। হুজুর, আমি ভয় পাচ্ছি যে আমার এই রোগ নাকি তখন প্রকাশ হয়ে যায়।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


ঈমান চলে যাওয়ার অন্যতম কারন হলোঃ 
الشرك في عبادة الله 
তথা আল্লাহর ইবাদতে শরীক বা অংশীদার স্থাপন করা। 

ইবাদত পাওয়ার একমাত্র উপযুক্ত সত্তা আল্লাহ তা‘আলাকে না মেনে তাঁর সাথে আরো কাউকে যোগ্য বলে মনে করা। 

অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেন, 
وَلاَ تَجْعَلْ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ فَتُلْقَى فِيْ جَهَنَّمَ مَلُوْمًا مَدْحُوْرًا 

‘আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য স্থির কর না। তাহ’লে নিন্দিত ও (আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে) বিতাড়িত অবস্থায় জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে’ (বানী ইসরাঈল ৩৯)।

★যদি কোন মুসলমান আল্লাহর নবী (ছাঃ)-এর আনিত বিধানের কোন অংশকে অপছন্দ করে তবে সে ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যাবে, যদিও সে ঐ বিষয়ে আমল করে।

 এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
 وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا فَتَعْسًا لَهُمْ وَأَضَلَّ أَعْمَالَهُمْ، ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَرِهُوْا مَا أَنْزَلَ اللهُ فَأَحْبَطَ أَعْمَالَهُمْ 

‘আর যারা কাফির তাদের জন্য রয়েছে দুর্গতি এবং তিনি তাদের কর্ম বিনষ্ট করে দিবেন। এটা এজন্য যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব তাদের কর্মসমূহ আল্লাহ ব্যর্থ করে দিবেন’ (মুহাম্মাদ ৮-৯)।

★যদি কোন মুসলিম মুহাম্মাদ (ছাঃ) আনিত ধর্মের কোন বিষয়ে অথবা ধর্মীয় ছওয়াব বা শাস্তির ব্যাপারে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করে তবে সেও কাফির হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন,
 قُلْ أَبِاللهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُوْلِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُوْنَ، لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ 

‘আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, ঈমান আনার পর তোমরা যে কাফির হয়ে গেছ’ (তওবা ৬৫-৬৬)। 

★যে ব্যক্তি মনে করে মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর শরী‘আত ব্যতীত অন্য কোন ধর্মে জীবন পরিচালনা করলেও জান্নাত পাওয়া যাবে বা আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়া সম্ভব, সে ব্যক্তি কাফির হয়ে যাবে।

 মহান আল্লাহ বলেন, 

وَمَنْ يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلاَمِ دِيْنًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِيْنَ 

‘যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য ধর্মকে গ্রহণ করবে তার কোন আমল গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে’ (আলে ইমরান ৮৫)।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার ইতিপূর্বের প্রশ্ন ( লিখিত ও মৌখিক ও ইনবক্সে দেয়া মেসেজে করা প্রশ্ন) এর জবাবে এ কথা অনেকবার বুঝানো হয়েছে যে আপনার ঈমান চলে যায়নি।
এভাবে বারবার আপনাকে ঈমান আনতে হবেনা।

আপনাকে ঈমানই আনতে হবেনা।

আপনি নিশ্চিন্তে নিজের কাজে মনোযোগী হোন।

★প্রশ্নে উল্লেখিত কোনো কাজের দরুন আপনার ঈমান চলে যায়নি।     

★আপনাকে কালেমা পড়ে ঈমান আনতে হবেনা।
কসম করে ভেঙ্গে ফেলার কারনে আপনি কাফফারা আদায় করবেন।

একই ধরনের যতগুলি কসম করে ভেঙ্গে ফেলেছেন,সব গুলোর ব্যাপারে একটি কাফফারাই যথেষ্ট।  

আরো জানতে আপনার জেলার বা নিকটতম জেলার কোনো বড় কওমি মাদ্রাসার ইফতা বিভাগে স্বশরীরে গিয়ে কথা বলার পরামর্শ রইলো।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...