আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
232 views
in সালাত(Prayer) by (6 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম
১। আজকের আসরের নামাজ শেষ করার পর মনে  সন্দেহ জাগল যে আমি মনে হয় ডান পাশে সালাম দি নাই। শুধু বামপাশে দিয়েছি। কিন্তু আমি সিওর যে আমি আসসালামু আলাইকুম অরহমাতুল্লাহ ২ বার ই পরেছিলাম। এখন আমি যদি একবার আসসালামু আলাইকুম অরহমাতুল্লাহ বলে ডান পাশে না তাকাই কিন্তু দিতীয় বার বলে বামপাশে সালাম ফিরাই, তাহলে কি নামাজ হবে। আমি নামাজ শেষে সাহু সিজদা করি।

২। গত কিছুদিন ধরে আমি অনেক সমস্যার ভিতরে আছি। এখন এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবার কোনো আমল আছে?
৩। গত কিছু মাস ধরে আমার পুরো পরিবার ই কোনো না কোনো সমস্যাই আছে। আমার বাবা অনেকদিন ধরে বিদেশ আছেন। আকামা রিনিউ না হবার কারনে দেশে আসতে পারছেন না। আমার বড় বোন এবং ছোট বোনের পড়ালেখায় অনেক সমস্যা হচ্ছে।  আমার বেশ কিছু মাস ধরে অযু,নামাজ,নাপাকি নিয়ে বারবার সন্দেহ লাগছে।  এখন করণীয় কি?

৪। আমার বারবার নামাজ নিয়ে সন্দেহ হয়। আমি প্রতিবারি ভাবি মনোজগ সহকারে নামাজ পড়ব কিন্তু কোনো না কোনো সময় মন অন্য খেয়ালে চলে যায়। প্রতি ওয়াক্তের  নামাজ ই একাধিক বার আদায় করতে হচ্ছে এর জন্য।  নামাজে মন আনব কিভবে?
৫। কাপড়ে নাপাকি লেগেছে কি না সিওর না কিন্তু প্রচন্ড সন্দেহ। এমতাবস্থায় করণীয় কি?

৬। নামাজে কিছু কিছু জায়গায় মাখরাজ ভুল গেলে বা বেখেয়ালে অধিকাংশ জায়গায় ভুল গেলে সাহু সিজদা করতে হবে?

৭। এক ওয়াক্তের নামাজ পড়ার পর বায়ুত্যাগ হয়েছে কি না সন্দেহ কিন্তু মনে হচ্ছে হয় নি। এমতাবস্থায় এই অযু দিয়ে তার পরের ওয়াক্তের সালাত আদায় করা যাবে কি?

৮। কেউ যদি নামাজ পরার কথা ভুলে যায় আর আমি যদি তাকে মনে করিয়ে দি এবং যখন মনে করিয়ে দি তখন তার কাপড় নাপাক ছিল। আমি নিজের একটা কাপড় নিয়ে এসে তাকে দি। তাহলে কি আমিও তার ওই নামাজের সমপরিমাণ সওয়াব পাব?

অগ্রিম ধন্যবাদ

1 Answer

0 votes
by (573,660 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
নামাজ শেষে দুইবার সালাম বলা ওয়াজিব।
ডানে বামে চেহারা ফিরানো সুন্নাত।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عَنْ عَبْدِ اللهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم كَانَ يُسَلِّمُ عَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ حَتَّى يُرَى بَيَاضُ خَدِّهِ " السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ وَرَحْمَةُ اللهِ " . - صحيح

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’’ বলে ডান দিকে এবং ‘‘আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ’’ বলে বাম দিকে সালাম ফিরাতেন। এ সময় তাঁর গালের শুভ্রতা দেখা যেতো।

সহীহ : মুসলিম,আবু দাউদ ৯৯৬.তিরমিযী (অধ্যায় : আবওয়াবুস সলাত, অনুঃ সলাতের সালাম ফিরানো সম্পর্কে, হাঃ ২৯৫, ইমাম তিরমিযী বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ), নাসায়ী (অধ্যায় : সাহু, অনুঃ ডান দিকে সালাম ফিরানো, হাঃ ১৩২৪), ইবনু মাজাহ (অধ্যায় : সলাত ক্বায়িম, অনুঃ সালাম ফিরানো, হাঃ ৯১৪), আহমাদ (১/৩৯০, ৪০৮)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার নামাজ হয়ে গিয়েছে। 
পুনরায় আদায় করতে হবেনা।

(২.৩)
আপনারা নিম্নোক্ত দোয়া করতে পারেনঃ-

يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ بِرَحْمَتِكَ أَسْتَغِيْثُ

অর্থ : ‘হে চিরঞ্জীব! হে চিরস্থায়ী! আপনার রহমতের মাধ্যমে আপনার নিকটে সাহায্য চাই।’ (তিরমিজি, মুসতাদরেকে হাকেম, মিশকাত)


اَلْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِىْ عَافَانِىْ مِمَّا ابْتَلَاكَ بِهِ – وَ فَضَّلَنِىْ عَلَى كَثِيْرٍ مِّمَنْ خَلَقَ تَفْضِيْلَا

অর্থ : সব প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি তোমাকে বিপদাক্রান্ত করেছেন; তা থেকে আমাকে নিরাপদ রেখেছেন এবং আমাকে তিনি তার মাখলুক থেকে মাখলুকের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।’ তখন তাকে এ মুসিবত কখনো স্পর্শ করবে না।’ (তিরমিজি)

لَا اِلَهَ اِلَّا اَنْتَ سُبْحَانَكَ اِنِّى كَنْتُ مِنَ الظَّالِمِيْنَ

অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই; আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিঃসন্দেহে আমি জালিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ (তিরমিজি)

حَسْبُنَا اللهُ وَنِعْمَ الْوَكِيْل – نِعْمَ الْمَوْلِى وَ نِعْمَ النَّصِيْر

অর্থ : আল্লাহ তাআলাই আমাদের জন্য যথেষ্ট, তিনি কতই না উত্তম কাজ সম্পাদনকারী। আল্লাহ তাআলাই হচ্ছে উত্তম অভিভাবক এবং উত্তম সাহায্যকারী।’

 لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إلَّا بِالله

অর্থ : ‘আল্লাহর সাহায্য ব্যতিত কোনো উপায় নেই আর কোনো ক্ষমতাও নেই।’ 

 أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْه

'অর্থ : ‘আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।'


لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ، وَرَبُّ الْأَرْضِ، وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ

অর্থ : ‘আল্লাহ্ ব্যতিত সত্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি অতি মহান, অতি সহনশীল। আল্লাহ ব্যতিত কোনো সত্য ইলাহ বা উপাস্য নেই, তিনি বিশাল আরশের মালিক। আল্লাহ ব্যতিত সত্য কোনো মাবুদ নেই, তিনি আসমান-জমিনের এবং মহান আরশের মালিক।’ (বুখারি)

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَ أَعُوذُ بِكَ مِن ضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে।’ ((বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি ও মিশকাত)

(০৪)
আপনি নামাজে তিলাওয়াত,রুকু সেজদার তাসবিহ,তাশাহুদ,দরুদ শরীফ,দোয়ায়ে মাছুরা ইত্যাদি এমম ভাবে পড়বেন,যাতে  
নিজের কানে আওয়াজ আসে।
নিজের কানে হালকা আওয়াজ আসার মতো জিহবা নাড়িয়ে আওয়াজ করবেন।

এই নামাজকে জীবনের শেষ নামাজ বলে মনে করবেন।
আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছেন,এমন অনুভূতি ভিতরে নিয়ে আসবেন।

(০৫)
নাপাকির ব্যপারে নিশ্চিত না হলে তাহা পাক করতে হবেনা।

(০৬)
না,এতে সাহু সেজদার বিধান নেই।

(০৭)
সে প্রবল ধারনার উপর আমল করবে।
যদি তার প্রবল ধারনা হয় যে বায়ু বের হয়েছে,তাহলে নতুন করে অযু করা আবশ্যক। 

আর যদি তার প্রবল ধারনা হয় যে তার বায়ু বের হয়নি,তাহলে অযু করা আবশ্যক নয়।

(০৮)
এতে আপনিও অনুরুপ ছওয়াব পাবেন,ইনশাআল্লাহ ।

তবে সমপরিমাণ না বেশি না কম,সেটি আল্লাহ তায়ালা নির্ধারন করবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
৬ নম্বর প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নামাজ হবে কি?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...