বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
শরীয়তের বিধান মতে ব্যভিচার প্রমানিত হলে শাস্তি হলো অবিবাহিত ব্যভিচারীকে ১০০টি বেত্রাঘাত করা, বিবাহিত ব্যভিচারীকে রজম করে হত্যা করা।
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اَلزَّانِیَۃُ وَ الزَّانِیۡ فَاجۡلِدُوۡا کُلَّ وَاحِدٍ مِّنۡہُمَا مِائَۃَ جَلۡدَۃٍ ۪ وَّ لَا تَاۡخُذۡکُمۡ بِہِمَا رَاۡفَۃٌ فِیۡ دِیۡنِ اللّٰہِ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ۚ وَ لۡیَشۡہَدۡ عَذَابَہُمَا طَآئِفَۃٌ مِّنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ ﴿۲﴾
ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী— তাদের প্ৰত্যেককে একশত বেত্ৰাঘাত করবে, আল্লাহর বিধান কার্যকরীকরণে তাদের প্রতি দয়া যেন তোমাদেরকে প্রভাবান্বিত না করে, যদি তোমরা আল্লাহ্ এবং আখেরাতের উপর ঈমানদার হও; আর মুমিনদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্ৰত্যক্ষ করে।
(সুরা নুর ০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
উমর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের মিম্বরে উপবিষ্ট অবস্থায় বললেনঃ আল্লাহ্ তা'আলা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সত্যসহ প্রেরণ করেন এবং তার প্রতি কিতাব নাযিল করেন। কিতাবে যেসব বিষয় নাযিল করা হয়, তন্মধ্যে প্রস্তরাঘাতে হত্যার বিধানও ছিল, যা আমরা পাঠ করেছি, স্মরণ রেখেছি এবং হৃদয়ঙ্গম করেছি। অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও প্রস্তরাঘাতে হত্যা করেছেন এবং তার পরে আমরাও করেছি। এখন আমি আশংকা করছি যে, সময়ের চাকা আবর্তিত হওয়ার পর কেউ একথা বলতে না শুরু করে যে, আমরা প্রস্তরাঘাতে হত্যার বিধান আল্লাহর কিতাবে পাই না। ফলে সে একটি দ্বীনী কর্তব্য পরিত্যাগ করার কারণে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে, যা আল্লাহ তা'আলা নাযিল করেছেন। মনে রেখো, প্রস্তরাঘাতে হত্যার বিধান আল্লাহর কিতাবে সত্য এবং বিবাহিত পুরুষ ও নারীর প্রতি প্রযোজ্য- যদি ব্যভিচারের শরীয়তসম্মত সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থিত হয় অথবা গর্ভ ও স্বীকারোক্তি পাওয়া যায়৷ [বুখারীঃ ৬৮২৯, মুসলিমঃ ১৬৯১]
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي الْمُهَلَّبِ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، أَنَّ امْرَأَةً، مِنْ جُهَيْنَةَ اعْتَرَفَتْ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالزِّنَا فَقَالَتْ إِنِّي حُبْلَى . فَدَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَلِيَّهَا فَقَالَ " أَحْسِنْ إِلَيْهَا فَإِذَا وَضَعَتْ حَمْلَهَا فَأَخْبِرْنِي " . فَفَعَلَ فَأَمَرَ بِهَا فَشُدَّتْ عَلَيْهَا ثِيَابُهَا ثُمَّ أَمَرَ بِرَجْمِهَا فَرُجِمَتْ ثُمَّ صَلَّى عَلَيْهَا فَقَالَ لَهُ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يَا رَسُولَ اللَّهِ رَجَمْتَهَا ثُمَّ تُصَلِّي عَلَيْهَا . فَقَالَ " لَقَدْ تَابَتْ تَوْبَةً لَوْ قُسِمَتْ بَيْنَ سَبْعِينَ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ لَوَسِعَتْهُمْ وَهَلْ وَجَدْتَ شَيْئًا أَفْضَلَ مِنْ أَنْ جَادَتْ بِنَفْسِهَا لِلَّهِ "
হাসান ইবনু আলী (রহঃ) ... ইমরান ইবনু হুসায়ন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, জুহায়না কবীলার জনৈক মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যিনার কথা স্বীকার করল এবং বলল, আমি গর্ভবতী। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ মেয়েটির অভিভাবককে ডাকলেন এবং তাকে বললেন, তার সাথে ভাল ব্যবহার করবে এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আমাকে তা অবহিত করবে। সে তাই করল, তখন তিনি মেয়েটির কাপড়-চোপড় ভাল করে শরীরে বাধতে বললেন এবং ‘রজম’-এর নির্দেশ দিলেন। তখন তাকে রজম করা হল। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালাতুল জানাযা আদায় করলেন। তখন উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু তাঁকে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! একে রজম করলেন আবার তার সালাতুল জানাযাও আদায় করলেন? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই মেয়েটি এমন তওবা করেছে যে, মদীনার সত্তর জনের মাঝেও যদি তা বণ্টন করে দেওয়া হয় তবু তা তাদের জন্য যথেষ্ট হবে। আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজের জান দিয়ে দিল, এর চেয়েও উত্তম কিছু তুমি পেয়েছ?
(তিরমিজি ১৪৪১)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এ দেশে ইসলামী হুকুমত কায়েম থাকলে প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যভিচার প্রমানিত হলে অবিবাহিত পুরুষকে ১০০টি বেত্রাঘাত করা হতো।
এবং বিবাহিত মহিলাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার শাস্তি দেয়া হতো।
,
দেশে যেহেতু ইসলামী হুকুমত নেই,তাই এক্ষেত্রে তওবা করতে হবে।
★প্রশ্নে উল্লেখিত দুইজনই আগের পাপ কাজ থেকে পুরোপুরি দূরে থাকবে,কেউ কাহারো সাথে দেখা সাক্ষাৎ যোগাযোগ রাখবেনা।
মহান আল্লাহর কাছে কান্না করে নিজে লজ্জিত অনুতপ্ত হতে হবে।
গুনাহ ছেড়ে দিয়ে ভবিষ্যতে আর এহেন গুনাহ না করার প্রতি আল্লাহর কাছে ওয়াদাবদ্ধ হতে হবে।
আল্লাহর কাছে কৃত কর্মের জন্য মাফ চাইতে হবে।
ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন।
আরো জানুনঃ