আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
260 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম
১) আমি গতকাল রাতে স্বপ্নে দেখি আমার ডান হাতে একটা সাপ এবং সেটা আমার কব্জিতে কাপড়ে ধরে আছে অনেকক্ষণ,  কামড়ের জায়গা দিয়ে শরীরের ভেতরে কিছু একটা ঢুকে যাচ্ছে চামড়ার নিচ দিয়ে,,, আমার স্বামী আমার কনুয়ের এখানে চেপে ধরে আছেন যাতে  তা শরীরে ভেতরে আর না যেতে পারে,,,,,

আগে কখনো এমন স্বপ্ন দেখিনি,, বুঝতে পারছিনা এমন কিছু কেন দেখলাম, নিতান্তই স্বাভাবিক স্বপ্ন নাকি অন্য কিছু,,,
উল্লেখ্য আমি বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অস্থিরতায় আছি,  ইবাদাতে প্রচন্ড  গাফেল হয়ে যাচ্ছি দিন দিন, মাঝে মাঝেই আপনজনদের সাথে খারাপ আচরণ করে ফেলছি, ইলম অর্জনে মনোযোগ আসছে না, উল্লেখ্য আমার বিয়ে হয় এক বছর ধরে,,,
২) আমি পরিপূর্ণ পর্দা করি আলহামদুলিল্লাহ, হালাল খাবার খাই আলহামদুলিল্লাহ, আমার স্বামী ভাল মানুষ তবে তিনি নামাজে গাফেল খুব,  মাঝে মাঝে রেগুলার নামাজ পড়েন তবে প্রায় সময়ই শুক্রবার ছাড়া নামাজ পড়েন না,,  উনি জানেন এবং বুঝেন এটা অনেক ভয়াবহ কিন্তু উনি নাকি নামাজে মন আনতে পারেন না,,  উনি জীবন নিয়ে হতাশা বোধ করেন অথচ আলহামদুলিল্লাহ উনি একাডেমিক লাইফ এবং চাকরি লাইফে বেশ ভাল পজিশনে আছেন,,,,, রিসেন্টলি কিছুদিন ধরে উনার প্রয়োজনীয় প্রায় সব  গুরুত্বপূর্ণ জিনিসই নস্ট হয়ে যাচ্ছে,,,,

 উস্তায আমি বুঝতে পারছিনা এগুলো কি কোনো বদনজর বা অন্য কোনো কারণে হচ্ছে?

আমার কি করনীয় এখন?

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।

তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
 ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 
,

হাদীস শরীফে এসেছে  

خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الرُّؤْيَا مِنْ اللهِ وَالْحُلْمُ مِنْ الشَّيْطَانِ فَإِذَا رَأٰى أَحَدُكُمْ شَيْئًا يَكْرَهُه“فَلْيَنْفِثْ حِينَ يَسْتَيْقِظُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ وَيَتَعَوَّذْ مِنْ شَرِّهَا فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّه“وَقَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَإِنْ كُنْتُ لأَرَى الرُّؤْيَا أَثْقَلَ عَلَيَّ مِنَ الْجَبَلِ فَمَا هُوَ إِلاَّ أَنْ سَمِعْتُ هٰذَا الْحَدِيثَ فَمَا أُبَالِيهَا.

আবূ ক্বাতাদাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের তরফ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে খারাপ লাগে, তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে ওঠে তখন সে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর ক্ষতি থেকে আশ্রয় চায়। কেননা, তা হলে এটা তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না। 

আবূ সালামাহ বলেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়, তখন এ হাদীস শোনার ফলে আমি তার কোন পরোয়াই করি না। [বুখারী ৫৭৪৭ মুসলিম পর্ব ৪২/হাঃ ২২৬১, আহমাদ ২২৭০৭] 

https://ifatwa.info/30990/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  

ইবনে সিরিন রহঃ বলেন,

فإن رأى حية تمشي خلفه فإنّ عدوه يريد أن يمكر به فإن مشت بين يديه أو دارت حوله فإنّهم أعداء يخالطونه

যদি কেউ স্বপ্নে সাপ দেখে যে,তার পিছু পিছু ছুটছে,তাহলে এর অর্থ হল,ঐ ব্যক্তির শত্রুরা তার সাথে শত্রুতা করা জন্য চেষ্টা করতেছে।আর যদি কেউ দেখে যে তার হাতের সামনে বা তার আশপাশে সাপ ঘুর ঘুর করতেছে,তাহলে এর অর্থ হলো,ঐ ব্যক্তির শুত্রুরা তার পাশেই রয়েছে ঘনিষ্টজনদের মধ্যে। (তাফসিরুল আহলাম-ইবনে সিরান-২/৪)

★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! ও প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

আপনি সাপ স্বপ্নে দেখেছেন,এর অর্থ হলো,আপনার ঘনিষ্টজনদের মধ্য থেকে কেউ আপনার সাথে শুত্রতার চেষ্টা করতেছে।যেহেতু সাপ আপনাকে কামড় দিয়ে দিয়েছে, তাই শত্রুরা আপনার ক্ষতি করে ফেলেছে বা ক্ষতি করার দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে,

সুতরাং আপনার প্রতি নসিহা হল,আপনি ফরয ওয়াজিব বিধানকে গুরুত্বসহকারে পালন করবেন।সামর্থ্যানুযায়ী গরীব-মিসকিনকে কিছু দান করবেন।

আর নিম্নোক্ত দুআ পড়বেন।
আল্লাহুম্মা ইন্না নাজআলুকা ফি নুহুরিহিম,ওয়া নাউযুবিকা মিন শুরুরিহিম।

(০২)
বদনজর বলতে এখানে কিছু দেখছিনা।
অতিরিক্ত টেনশন, হাতাশা থেকে তাকে বের হয়ে  আসতে হবে।

দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতের সাথে যুক্ত হয়ে সময় লাগানোর পরামর্শ থাকবে।
বা কোনো হক্কানী শায়েখের কাছে গিয়ে পরামর্শ নিতে পারে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...