আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
390 views
in পবিত্রতা (Purity) by (32 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।

১ নং প্রশ্নটা একটু বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
(১) আমাদের বাসায় বিড়াল আছে।মাঝে মাঝে বিড়াল উলটা পালটা জায়গায় প্রস্রাব করে। আম্মু একটা আলাদা কাপড় দিয়ে সেইটা পরিষ্কার করে। ওই কাপড় অনেক সময় ধোয়া হয়না।মাঝে মাঝে ঘরের কোন কোনায় রেখে দেওয়া হয় না ধুয়েই।
আজকে দেখলাম আমাদের বাসার বুয়া ঘর মোছার জন্য ওই কাপড় টা ব্যবহার করেছে।আম্মু দেখার পর বুয়াকে বললো, "এইটা তো বিড়ালের জন্য ব্যবহার করা হয়। এইটা দিয়ে ঘর মুছতেছেন কেন?" তখন বুয়া বলেছে, "এই কাপড়টা ধুয়েছি তো।" কিন্তু আমার সন্ধেহ হচ্ছে বুয়া ওই কাপড় টা হয়তো না ধুয়েই সম্পূর্ণ ঘর মুছেছে কিনা অথবা কাপড়টা ধুলেও ঠিক মত না হয়তো ধোয়া হয়নি। অর্থাৎ হয়তো ঠিকমত নিংড়ানো হয়নি। কোনমতে হয়তো কাপড়টা পানিতে চুবিয়েই ঘর মুছা শুরু করে দিয়েছে। আমি তো দেখি নি।তাই সিউর হতে পারতেছি না। আমার যতটুকু ধারনা, বুয়াকে যদি জিজ্ঞাস করি উনি বলবে উনি ভালোভাবেই ধুয়েছে। কিন্তু আমি তাও সন্তুষ্ট না।
যেহেতু উনি যদি কাপড়টা ঠিক মত না পরিষ্কার করেই সেই কাপড় দিয়ে সারা ঘর মুছে তাহলে তো সারা ঘরই নাপাক হয়ে যাবে।এরপর সেই ভিজা ফ্লোরে আম্মু ঘরের মধ্যে কত জায়গায় চলা ফেরা করেছে। তাহলে তো সেসব জায়গায়ও নাপাক লেগে যাবে।
কি কি নাপাক হয়েছে সেইগুলোও তো জানি না। আদো নাপাক হয়েছে কিনা। ( কারন বুয়া কি আসলেই কাপড়টা ভালো ভাবে ধুয়েছে কিনা তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। হয়তো উনি ভয়ে তৎখনাৎ মিথ্যা কথাও বলতে পারে)
এমতাবস্থায় তো বাসার সব কিছু ধোয়া সম্ভব না।
তাহলে কি করবো? সম্পূর্ণ ঘরকে কি পাক ধরা যাবে? যেহেতু আমরা জানি না উনি আসলেও কাপড় টা ধুয়ে ঘর মুছেছে কিনা অথবা কাপড়টা ধুলেও সেটা ঠিক মত নিংড়িয়েছে কিনা অথবা খালি কোনমত পানি চুবিয়েই ঘর মুছা শুরু করে দিয়েছিল কিনা।
কি করা যায় কিছু বুঝতেছি না।হয়তো পরের দিন ভালো পানি দিয়ে ফ্লোরটা ধুলে পরিষ্কার হয়ে যাবে।কিন্তু আজকে এই ভেজা ফ্লোর নিয়ে তো কত জায়গায় হয়তো উঠা নামা করা হয়েছে। এইগুলা সব বের করা তো অসম্ভব।যেহেতু সব এতক্ষণে শুকিয়ে গিয়েছে।

(২) তরল নাপাক (যেমন- প্রস্রাব) যদি কোথাও লেগে শুকিয়ে যায়, পরবর্তীতে সেই স্থানে যদি ভেজা হাত লাগে তাহলে কি সেই হাত নাপাক হয়ে যাবে?

(৩) প্রস্রাব বা টয়লেটের পর বেসিনে গিয়ে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার সময় সেয় পানির ছিটা এসে গায়ে লাগে। যেহেতু হাত শরীরের কাছে থাকে,তাই নলে পানির প্রেশার অল্প থাকলেও সেই পানির কিছু ছিটা নাপাক হাত ধোয়ার সময় গায়ে লাগেই। এক্ষেত্রে কি ছিটা পানি গুলো গেঞ্জি প্যান্ট বা শরীরকে নাপাক করে দিবে?

(৪) নাপাক কাপড় ধোয়ার সময় কাপড় কাচতে গেলে সেই পানির ছিটা বাথরুমের বিভিন্ন জায়গায় লাগে। যেমনঃ বদনা, কল, বালতি, পাশে টাংগানো পাক কাপড়, অনেক সময় পাশে রাখা ব্রাশ,টুথপেষ্টের প্যাকেট এগুলোতেও লাগতে পারে। সবসময় তো বাথরুমে গিয়ে এই সমস্ত কিছু ধুয়ে পরে তা ব্যবহার করা সম্ভব হয়না। তাই জানতে চাওয়া যে, নাপাক কাপড় ধোয়ার সময় সেই পানির ছিটা কোথাও লাগলে করনীয় কি?

(৫) টয়লেট করার পর কি পানি ও টিস্যু ব্যবহার না করে পানি ও হ্যান্ডওয়াস ব্যবহার করে মলদ্বার পরিষ্কার করলে সেই স্থান পাক হয়ে যাবে?

(৬) রাস্তায় হাটার সময় কোন বাড়ির নিচে দিয়ে যেতে নিলে অনেক সময় বারান্দা দিয়ে পানির ফোটা গায়ে পড়ে। এক্ষেত্রে সেই পানিকে কি পাক ধরবো নাকি নাপাক?

(৭) টয়লেট করার পর হাতে সাবান লাগিয়ে মলদ্বার ২-৩ বার পরিষ্কার করি।প্রতিবার পরিষ্কারের পর সেই যথেষ্ট পানি ঢালি। কিন্তু তাও আমার সন্ধেহ হয় যে এখন মল লেগে আছে কিনা। কিন্তু মলদ্বারে হাত দিয়ে চেক করলে কোন হলুদ কিছু পাইনা। হাল্কা পিচ্ছিল পিচ্ছিল মনে হয়। যেটা আসলে ব্যবহৃত সাবান/সাবানের পানি কিনা অথবা মলের সাথে লেগে থাকা পিচ্ছিল পদার্থ কিনা তা বুঝতে পারতেছি না। এরজন্য টয়লেটে অনেক সময় যায়। প্রত্যেকবার সাবান ব্যবহারের পর এরকম মনে হয়। আর সাবান ব্যবহার না করলে মনে হয় যে মলদ্বার পরিষ্কার হলো কিনা।
এখন করনীয় কি?
(৭.১) যিনি উত্তর দিবেন,আপনি টয়লেটের পর নিজেকে কিভাবে পরিষ্কার করেন সেইটা যদি বলতে পারেন তাহলেও উপকৃত হতাম। তাহলে পরিষ্কার হওয়ার পারফেক্ট এক্সাম্পলটা পেতাম।যেহেতু একজন মুফতি এক্সাম্পল্টা দিতেছে।তাদের এক্সাম্পটা বেশি মাথায় ঢুকে। আর বলতে না চাইলে প্রশ্নটা ইগ্নোর করতে পারেন।

(৮) ওজুতে ব্যবহার করা পানি যদি বালতিতেই থেকে যায় (যেহেতু অনেক সময় কল ব্যবহার করে ওজু করা হয়), সেই পানি কি পরবর্তীতে প্রস্রাব/টয়লেট করার পর নিজেকে পাক করার জন্য পুনরায় ব্যবহার করা যাবে?

জাজাকাল্লাহ খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (573,960 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


হাদীস শরীফে  এসেছে-

يَا عَمَّارُ إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ: مِنَ الْغَائِطِ وَالْبَوْلِ وَالْقَيْءِ وَالدَّمِ وَالْمَنِيِّ

আম্মার বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-নিশ্চয় ৫টি কারণে কাপড় ধৌত করতে হয়, যথা-১-পায়খানা, ২-প্রশ্রাব, ৩-বমি, ৪-রক্ত, ৫-বীর্য। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৪৫৮}

★নাপাক বস্তু পবিত্র করার পদ্ধতিঃ

পবিত্রকরণ এর দিক দিয়ে নাজাসত আবার দুই প্রকারঃ যথা-

(ক) দৃশ্যমান নাজাসত

(খ)অদৃশ্যমান নাজাসত

(ক)কাপড়ে প্রথম প্রকার তথা দৃশ্যমান নাজাসত লাগলে সেই নাজাসতকে দূর করে দিলেই কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।এক্ষেত্রে নাজাসত দূর করতে ধৌত করার কোনো পরিমাণ নেই।যতবার ধৌত করলে নাজাসত দূর হবে ততবারই ধৌত করতে হবে।যদি একবার ধৌত করলে তা চলে যায় তবে একবারই ধৌত করতে হবে।

(খ)কাপড়ে দ্বিতীয় প্রকার তথা অদৃশ্যমান নাজাসত লাগলে, কাপড়কে তিনবার ধৌত করে তিনবারই নিংড়াতে হতে।এবং শেষ বার একটু শক্তভাবে নিংড়ানো হবে যাতে করে পরবর্তীতে আর কোনো পানি বাহির না হয়।(ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া;২/৫৭৪,জা'মেউল ফাতাওয়া;৫/১৬৭) 

আরো জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/118
 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কাপড় কিভাবে পাক করতে হয়,সেটি বুয়াকে না বলেই তাকে জিজ্ঞাসা করবেন যে সে কিভাবে সেই কাপড় পাক করেছিলো?
যদি সে বলে যে তিনবার নতুন পানি দিয়ে ধুয়ে প্রত্যেকবার নিংড়িয়ে নিয়েছিলো,তাহলে আপনি টেনশন মুক্ত। 
সব কিছু পাক থাকবে,আলহামদুলিল্লাহ। 

আর যদি বুয়া এর ব্যাতিক্রম ভাবে ধোয়ার কথা বলে,তথা তিনবারের কম ধুয়ে থাকে,বা প্রত্যেকবার নিংড়িয়ে না থাকে,তাহলে যেখানে যেখানে সেটা দিয়ে মুছে দিয়েছে,পুরো স্থান নাপাক বলে গন্য হবে।
ভেজা পাক কাপড় দিয়ে তিনবার মুছে দিবেন,প্রত্যেকবার নতুন পানি নিবেন।

(০২)
হাত নাপাক হবে।

(০৩)
বেসিনে হাত ধোয়ার সময় তো হাতে নাপাকি ছিলোনা।
সুতরাং এতে সমস্যা নেই।
,
হ্যাঁ যদি হাতে নিশ্চিত পেশাব থাকে,তাহলে এক্ষেত্রে উক্ত ছিটা নাপাক।
তাহা একদিরহাম থেকে কম লাগলে মাফ বলে গন্য হবে।

আর যদি পায়খানা হাতে লেগে থাকা নিয়ে নিশ্চিত হোন,তাহলে ছিটা আসা পানিতে পায়খানার রং/গন্ধ পাওয়া না গেলে সেটিকে নাপাক বলা যাবেনা।

(০৪)
নাপাক কাপড় ধোয়ার সময় সেই পানির ছিটা কোথাও লাগলে সেই স্থান ধুয়ে ফেলবেন। 

(০৫)
হ্যাঁ পাক হয়ে যায়।

(০৬)
সেই পানিতে নাপাকির কোনো চিন্হ/গন্ধ পাওয়া না গেলে সেটিকে পাক ধরবেন।

তবে যদি নিশ্চিত ভাবে আপনি জানেন যে এটি টয়লেটের পাইপ থেকেই এসেছে,তাহলে নাপাক ধরবেন।

(০৭)
সাবান ব্যবহার করুন,বা না করুন।
উভয় ছুরতেই পাক পরিস্কার হয়ে গিয়েছে।  

(৭.১)
তিনটি টিস্যু পেপার দিয়ে তিনবার মুছে নিয়ে এক বদনা পানি দিয়ে ধুয়ে নিলেই যথেষ্ট। 
এতে নাপাকি চলে গিয়েছে,বলে ধারনা হয়ে যায়। 

(০৮)
হ্যাঁ ব্যবহার করা যাবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (32 points)
(৮) নং প্রশ্নটা হয়তো ঠিক ভাবে লেখতে পারিনি তাই আবার একটু গুছিয়ে লেখি।
ওজু করার সময় হাত,পা,নাক,কান,মুখ ধোয়ার পানি বালতিতেই থেকে যায় (যেহেতু বালতি পায়ের সামনে রেখে ওজু করি) এখন সেই ব্যবহারকৃত অর্থাৎ যেইটা একবার ব্যবহার হয়ে গেছে সেই ওজুর পানি কি রেখে দিয়ে পরবর্তীতে প্রস্রাব/টয়লেট করার পর নিজেকে পাক করার জন্য পুনরায় ব্যবহার করা যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 219 views
0 votes
1 answer 198 views
...