আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
213 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (3 points)

আসসালামু আলাইকুম, 

প্রথম তালাকের ঘটনা,

 

আগে একবার ঝগড়ার সময় কথার প্রসঙ্গে বলেছিলাম "ঠিক আসে যাউ তোমাকে ছেড়ে দিলাম" । এখানে তালাক নিয়ত ছিলনা আমি তাকে বুঝিয়েছিলাম আমি তোমাকে আর কিছু বলবো না, তোমাকে তোমার মতো থাকতে দিলাম এবং আমি জানতাম না এ সকল কথার মাধ্যমে তালাক দাওয়া যায়।  পরে আমাকে এক হুযুর বলেন যে তালাক হয়ে গেছে। পরে আমরা আবার বিয়ে করি। 

 

দ্বিতীয় তালাকের ঘটনা,

 

আল্লাহর কসম দিয়ে বলতেসি এখন আমি কোন প্রকার মিথ্যা কথা বলব না । বৃহস্পতিবার আমার এর আমার স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া লাগে । সেদিন এর মত সমস্যা না হলে ও ঠিক পরের দিন মানে শুক্রবার একটি ঝামেলা হয় । ঝগড়ার এক ফাঁকে আমি তাকে একটি খারাপ গালি দেই যার জন্য সে আমার কাছে তালাক চায় । আমি বলি যে তুমি যদি এখন থেকে এক মিনিট এর মধ্যে ফোন রেখে দাও তাহলে আমাদের সব তালাক হয়ে যাবে (আমার মনে এই বিশ্বাস ছিল যে সে ফোন কাটবে না।) । উল্লেখ্য এইযে তখন যে ফোনটি রাখে না । কিন্তু ঝগড়া যখন বাড়তে থাকে তখন সে আবার তালাক চায় আমি তখন তাকে নিম্ন লিখিত কথা বলি ,

 

২। তুমি যদি এক মিনিট এর মধ্যে ফোন রেখে দাও তাহলে আমাদের সব তালাক হয়ে যাবে।

 

এই কথা বলার সময় আমি জানতাম যে আমার হাতে আর মাত্র দুইটি তালাক আছে। (তখন আমি জানতাম না যে প্রথম তালাকটি হয়নি।) এই কথাটি বলার আগে আমাদের মধ্যে কথোপকথন হচ্ছিল যে বাকি দুটি তালাক দিয়ে দিব। তাই এখানে আমার উদ্দেশ্য ছিল দুইটি তালাকের। পরে জানতে পারি প্রথম তালাকটি হয়নি যেহেতু আমি তালাক আর উদ্দেশ্যে কথাটি বলিনি। 

 

আমার এই কথার পর সে কষ্টে ফোনটি কেটে দেয় । এখান এ উল্লেখ্য ও এইযে আমার মনে এই বিশ্বাস ছিল যে সে ফোন কাটবে না আমার তাকে তালাক দাও এর কোন ইচ্ছা ছিল না । এখান এ একটি গুরুত্ব পূর্ণ কথা হচ্ছে সে যখন ফোন রাখে তখন আমাদের মোট কথা হয়েছিল দেখাচ্ছে  ১ মিনিট ৩১ সেকেন্ড ।  আমার এই শর্ত শুনার পর সে ২০ সেকেন্ডের মধ্যে ফোন কেটে দেয় কিন্তু যখন সে কাটে তখন আমাদের মোট কথা হয়েছে তার সাথে ঝগড়া মিলে ১  মিনিট ৩১ সেকেন্ড।মূলত ঝগড়ার পর পরই শর্ত টি দাওয়া হয়। আমি এখানে উল্লেখ করিনি যে এখন থেকে ১ মিনিট নাকি শর্ত দেওয়ার পর থেকে এক মিনিট। আমি কখন থেকে এক মিনিট বুঝিয়েছি সেটি আমি ভুলে গিয়েছি। 

 

সে সময় আমার স্ত্রী এর হায়েজ চলছিল।

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

অন্য এক হাদীসে আছেঃ-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

হেদায়া ২/৩৮৭) গ্রন্থে আছেঃ 
: (387/2، ط: رحمانیہ)
فالصریح قوله انت طالق ومطلقۃ وطلقتک فهذا يقع الطلاق الرجعي ولا یفتقر الى النيۃ ولا يقع به الا واحدۃ وان نوی اكثر من ذلك۔
সারমর্মঃ 
স্পষ্ট বাক্যে তালাক দিলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়।
এক্ষেত্রে নিয়তের দিকে মুহতাজ হতে হবেনা।
এক্ষেত্রে একের বেশির নিয়ত করলেও এক তালাকই পতিত হবে।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
তালাককে শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে শর্ত পাওয়া গেলেই বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার সেই শর্ত শোনার ২০ সেকেন্ডের মধ্যে সে ফোন রেখেছে।
তার মানে এটি যেহেতু শর্ত দেওয়ার এক মিনিটের মধ্যেই পাওয়া গিয়েছে,সুতরাং স্ত্রী এখানে শর্ত ভঙ্গ করে ফেলেছে। 

আর আপনি সব তালাক বলতে ২ তালাকের নিয়িত করেছেন,তাই সেটি ধর্তব্য হবে।
সুতরাং এক্ষেত্রে আপনার স্ত্রীর উপর দুই তালাক পতিত হয়েছে। 

এর আগে আপনি স্ত্রীকে ঝগড়ার এক পর্যায়ে  বলেছিলেনঃ-
"ঠিক আসে যাও তোমাকে ছেড়ে দিলাম"

এইভাবে বলার কারনে সেই সময়ে আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাক পতিত হয়েছিলো।

আর এখন যেহেতু ২ তালাক হলো।
মোট ৩ তালাক পতিত হয়েছে।

এখন তাকে শরয়ী কোন ব্যাতিত ফিরিয়ে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। 

(উল্লেখ্য,  আমাদের সমাজে তোমাকে ছেড়ে দিলাম বাক্যটি তালাকের জন্যই ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই প্রশ্নের ১ম বর্ণনা অনুযায়ী উক্ত কথা দ্বারা তালাকের উদ্দেশ্য না থাকলেও সেই সময়ে আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে রজয়ী পতিত হয়েছিলো।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (3 points)
edited by
হুযুর আমি কুতুব খালি বড় মাদ্রাসায় গিয়েছিলাম সেখান থেকে বলেছে প্রথম তালাক কি হয়নি . আল্লাহর কসম করে বলছি আমি জানতাম না এই সকল কথা তালাকের জন্য ব্যবহার করা হয়। আমি সেটা জানি না আল্লাহ আমাকে এটি ছিল কেন পাকড়াও করবেন 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...