আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
148 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ

আমার পরিবারে সালাত রোজা নিয়মিত আলহামদুলিল্লাহ। কিন্তু তারা ইসলামকে কেবল এসবে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। অন্তরের পরিশুদ্ধতা/জীবনের প্রতিটক্ষেত্রে দ্বীন মেনে চলার মানসিকতা নেই।আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি নিজে মানতে+তাদের বুঝাতে। কিন্তু তারা আমার কথা শুনেও শুনে না।তারা যখন নাটক দেখে বাংলা আমি দেখতে মানা করলে বলবে এগুলঝ তো খারাপ না।নাচ গান না।গান শোনা হারাম জেনেও তারা এমন ভিডিও দেখে যার ব্যাকগ্রাউন্ড ই মিউজিক আছে।আমি বললে পাল্টায়। কিন্তু এরপর আবার আগের মতোই।আর তাদের গীবত এর একটা অভ্যাস আছে।যেকোনো কিছুতেই গীবত কে ঢুকাতে পারে।আমি বললেও বুঝেনা। আরো বলবে এটা গীবত কোথা থেকে হলো? বুঝিয়েও বুঝাতে পারিনা।

আমার প্রশ্ন হলো-১)আমি যদি এখন বুঝানো অফ করে দেই।কারণ ওরা আমার কথা শুনেও না বুঝৈওনা।সব নিজেদের মতোই।তাহলে‌কি আমার গুনাহ হবে?

২)যেহেতু তারা গীবত এ লিপ্ত থাকে+তাদের কাছে গেলেই দেখা যায় গানের শব্দ পাওয়া যায়।তাই আমি সেখানে না থেকে চলে আসি.যার কারণে বেশির ভাগ সময় ই আমি আমার রুমে থাকি।সালাত তিলাওয়াত বই পড়া যিকির ই করতে থাকি।আমি চাই ওদের সময় দিতে। কিন্তু গিবত , গান এসবের জন্য আমি পরিবেশ ত্যাগ করি।যেখানে আমি বললেও তারা সাবধান হচ্ছে না।এখন কি আমার গুনাহ হবে?কারণ আমি সারাদিন ই আমার রুমেই থাকি।ঐসব থেকে বিরত থাকার জন্য।

৩)মাঝে মাঝে তাদের এসব আচরণ আমাকে কষ্ট দেয়।অনেক কষ্ট দেয়।এতে তাদের গুনাহ হবে কি?

৪)ওদের এসব আচরণে আমার যদি রাগ আসে কখনো...(আমি প্রকাশ করিনা। কিন্তু মাঝে মাঝে দেখিয়ে ফেলি।এরপর ই তাওবা করে ফেলি) এমাতবস্থায় আমার কি করণীয়?আমি কিভাবে সওয়াবের আশা করতে পারি।?

৫)আপনি বলতে পারেন তাদের সাথে ইসলামিক কথা বলতে।এর জন্য বলে রাখি আমি যাই তাদের সাথে সময় কাটাতে।ইসলামিক কথা বলত। কিন্তু তারা আমার কথা পাত্তা ই দেইনা।বরং আমাকে অনেক সময় কটু কথা শোনায় যা আমাকে কষ্ট দেয়।আমি এসবে কিভাবে নিজেকে শান্ত রাখবো?(আমি আমার বাবা মার সাথে যথাসাধ্য উত্তম ব্যবহার চেষ্টা করে যাচ্ছি আলহামদুলিল্লাহ)

৬)তারা অনেক দুনিয়া মুখী।যেখানে আমি আখিরাতমুখী হয়ে নিজেকে গড়তে চাই।আল্লাহর জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করে দিতে চাই। কিন্তু এমন পরিবেশে তাদের এমন আচরণ আমাকে কষ্ট দেয়।হতাশ করে তুলে।এজন্য আমার কি করণীয়?


জানাবেন ইংশাআল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে  এসেছে

أن عبد الله بن عمر يقول سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول ( كلكم راع وكلكم مسؤول عن رعيته الإمام راع ومسؤول عن رعيته والرجل راع في أهله وهو مسؤول عن رعيته والمرأة راعية في بيت زوجها ومسؤولة عن رعيتها والخادم راع في مال سيده ومسؤول عن رعيته

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ বলেন-আমি রাসূল সাঃ কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন-প্রতিটি ব্যক্তিই দায়িত্বশীল। প্রতিটি ব্যক্তিই তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। ইমামগণ দায়িত্বশীল, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। পুরুষগণ তাদের পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। মহিলাগণ স্বীয় স্বামীর গৃহের দায়িত্বশীল, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। দাস-দাসীগণ দায়িত্বশীল তার মনিবের সম্পদের ব্যাপারে, তারা তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

(সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৮৫৩
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৮২৮
সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৪৮৯
সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২৯৩০
মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৪৪৯৫
মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৫৩৭৭
মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-২৯৫১
মুসনাদে আব্দ বিন হুমাইদ, হাদীস নং-৭৪৫
মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১০৩)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
আপনি যেহেতু চেষ্টা করেছেন, সুতরাং আপনার  প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতা সত্বেও তারা প্রশ্নে উল্লেখিত গুনাহ করলে, এতে আপনার কোন গোনাহ হবে না।
এখন বুঝানো অফ করে দিলে আপনার গুনাহ হবেনা।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ ۚ وَإِنْ تَدْعُ مُثْقَلَةٌ إِلَىٰ حِمْلِهَا لَا يُحْمَلْ مِنْهُ شَيْءٌ وَلَوْ كَانَ ذَا قُرْبَىٰ ۗ إِنَّمَا تُنْذِرُ الَّذِينَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ بِالْغَيْبِ وَأَقَامُوا الصَّلَاةَ ۚ وَمَنْ تَزَكَّىٰ فَإِنَّمَا يَتَزَكَّىٰ لِنَفْسِهِ ۚ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ [٣٥:١٨] 

কেউ অপরের বোঝা বহন করবে না। কেউ যদি তার গুরুতর ভার বহন করতে অন্যকে আহবান করে কেউ তা বহন করবে না-যদি সে নিকটবর্তী আত্নীয়ও হয়। আপনি কেবল তাদেরকে সতর্ক করেন, যারা তাদের পালনকর্তাকে না দেখেও ভয় করে এবং নামায কায়েম করে। যে কেউ নিজের সংশোধন করে,সে সংশোধন করে,স্বীয় কল্যাণের জন্যেই আল্লাহর নিকটই সকলের প্রত্যাবর্তন। {সূরা ফাতির-১৮}

(০২)
আপনার গুনাহ হবেনা।

(০৩)
হ্যাঁ তাদের গুনাহ হবে।
একেতো তারা হারাম কাজের সাথে জড়িত, তার পর যে তাদেরকে শরীয়তের দিকে ডাকছে,তার সাথেই খারাও আচরণ করছে?
এটা বড়ই মারাত্মক অপরাধ। 

(০৪)
আপনি রেগে গিয়ে কোনো গালি গালাজ করবেননা।
এমনিতেই রাগে ভালো ভাষায় কথা বললে গুনাহ হবেনা।    
আপনার চেয়ে ছোটদের ধমকও দিতে পারবেন।

(০৫)
আপনি আপনার বাবা মার সাথে যথাসাধ্য উত্তম ব্যবহার চেষ্টা করে যাচ্ছেন,এটাই যথেষ্ট। 
তাদের কাছে যাওয়ারই প্রয়োজন নেই।

(০৬)
আপনি নিজেকে হতাশ মনে করবেননা।
আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম জাযা দিবেন,ইনশাআল্লাহ। 

আপনি আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রতিদান পাওয়ার আশায় ধৈর্য ধারন করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...