আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
118 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (40 points)
edited by
১)আমি পরাশুনার ব্যাপারে খুব সিরিয়াস।
আজকাল সন্দেহ হচ্ছে আমি মনে হয় পরাশুনা কে আল্লাহর চেয়ে বেশি ভালো বাসি।
আমি যদি বারবার নিজে কে বুঝাই যে আল্লাহ কেই সবচেয়ে বেশি ভালো বাসতে হবে,তাইলেই হবে?

নাকি পরাশুনা ছেড়ে দেওয়া লাগবে? কিভাবে বুঝা যেতে পারে আমি আল্লাহ কেই সবচেয়ে বেশি ভালো বাসি??
২)ক)যখন আমি এমন অবস্থায় পরি যে শিরক করার পর তাওবা করতে হয় এবং এমন কাজ করতে  হয়,যাতে আমার গার্লফ্রেন্ড কষ্ট পায়,তখন আমার মন খারাপ লাগে।

খ)আর যখন এমন অবস্থায় পরি যে,শিরকের জন্য তাওবার পাশাপাশি  একটা কাজ করা ছেড়ে  দিলে তাওবা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।কিন্তু এই কাজ ছাড়লে গার্লফ্রেন্ড কষ্ট পাবে বলে ধারণা করি।

আর ওই কাজ বাদ না দিয়ে শুধু তাওবা করলেও চলবে,তবে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা কম।

এমতাবস্থায় আমি শুধু তাওবা করি আর দুনিয়ার ওই কাজ বাদ দেই না।

যখন আমার সাথে (খ) নাম্বার ধরনের শিরক ঘটে তখন আমি তাওবা করি।কিন্তু দুনিয়ার ওই কাজ বাদ না দিলেও চলবে দেখে এই শিরকের পর মনে খুশি লাগে।

এটা কি শিরক??

৩)  (ক) আগে আমি ভাবতাম যে জায়নামাজের যে স্থানে সিজদা দেওয়া হয় সেখানে পা লাগানো যাবে না।কেননা আমরা যখন সিজদা দেই,তখন আমরা আল্লাহর কুদরতি পায়ে সিজদা দেই।অর্থাৎ এই জায়গা সম্মানিত।
পা লাগালে অনেক গুনাহ হবে।

আমি ওই জায়গা টা কে খুব সম্মান করতাম।

কিছুটা শিরকি পর্যায়ের সম্মান করতাম।
এরপর তাওবা করি,আর মনে করে নেই যে,এটা একটা সাধারণ কাপড়।
আল্লাহর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ভক্তি থাকবে,কিন্তু এই সিজদার জায়গার প্রতি সম্মান থাকবে না।

এখন নামায পরা শুরু করার সময় জায়নামাজ এর সিজদার জায়গা ইচ্ছা করে পা লাগাই,নিজের বিশ্বাস দৃঢ় করার জন্য যে,এই স্থানের প্রতি আমার কোন ভক্তি নাই।

(খ)আবার কিছুদিন আগে এমন একটা অবস্থায় পরছিলাম যে গার্লফ্রেন্ড কে ছেড়ে দিয়ে কষ্ট না দিলে শিরক হবে। তারপর জানলাম যে যদি তাওবা করি,আর এমন মনমানসিকতা আনি যে আল্লাহর জন্য ওকে ছাড়তে পারব,তবে ছেড়ে  না দিলেও চলবে।

আমি তাই করি।তাওবা করি,আর এমন মনমানসিকতা রাখি যে আমি আল্লাহ কে অনেক বেশি ভালোবাসি গার্লফ্রেন্ড এর চেয়ে । যদি কখনো এমন অবস্থা হয় যে তাকে ছেড়ে দিতে হবে আল্লাহর জন্য, তবে আমি দিব।

আর এখন আমি তার সাথে সম্পর্ক করে যাচ্ছি।

(ক) নং ঘটনায় আমি সিজদার জায়গার পা লাগাই নিজের বিশ্বাস দৃঢ় করার জন্য যে আমি জায়নামাজ কে শিরকি পর্যায়ে সম্মান করি না।

কিন্তু (খ) নং ঘটনায় আমার বিশ্বাস দৃঢ় করার জন্য আমি আমার গার্লফ্রেন্ড কে ছেড়ে  দিয়ে কষ্ট দেই না।
আমার এ কাজ কি শিরক???


৪)আমি যখন নামাযে দাড়াই তখন হাত তুলার সময় আমার মনে হয়,আল্লাহ তাওফিক দিলে আমি হাত তুলতে পারব,নয়তো পারবনা।এটাই যদি হয়,তাইলে আমি চুপচাপ দারায় থাকি।আল্লাহ তাওফিক দিলেই হাত উঠে যাবে।


কি করা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (560,700 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-



শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে। 
যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 
,
কিছু বিষয় আছে এমন, যা তাওহীদ-পরিপন্থী তো নয়, তবে তা ‘তাওয়াক্কুলে’র সর্বোচ্চ স্তর থেকে নিম্নস্তরের। এ ধরনের বিষয়গুলোকে শিরক বলা স্পষ্ট ভুল। যে বিষয়ে যতটুকু কমতি আছে তাতে ততটুকু কমতির কথাই বলা উচিত। বাড়াবাড়ি করে বিদআতকে শিরক বলে দেওয়া অথবা তাওয়াক্কুলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের পরিপন্থী বিষয়কে তাওহীদের পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে শিরক বানিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।

আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-
وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ  لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.
নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-
اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.
আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন-
اِنَّ اللهَ لَا یَغْفِرُ اَنْ یُّشْرَكَ بِهٖ وَ یَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدِ افْتَرٰۤی اِثْمًا عَظِیْمًا.
নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহাপাপ করে। -সূরা নিসা (৪) : ৪৮

বিস্তারিত  জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,

(০১)
হ্যাঁ তাহলেই হবে।
পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হবেনা।
আল্লাহর আদেশ নিষেধকে সব সময় বেশি গুরুত্ব দিতে পারলে,আল্লাহর ভয় সব সময় মনে জাগ্রত হলে,আল্লাহর বিধিনিষেধকে জীবনের প্রতিটি বিষয়ের উপর প্রাধান্য দিতে পারলে বা এসব গুন অর্জনের পূর্ণ চেষ্টা জারী রাখতে পারলে   মনে করবেন যে আপনি আল্লাহকেই বেশি ভালো বাসেন।

(০২)
শিরকের পর শিরক করার দরুন মন খুশি লাগলে আবারো তওবা করতে হবে।

তবে দুনিয়ার ঐ কাজ বাদ না দিলেও চলবে দেখে খুশি হলে আর তওবা করতে হবেনা।
এটি শিরক নয়।

(০৩)
আপনার কাজ শিরক নয়।

(০৪)
আপনি হাত তোলার চেষ্টা না করলে আল্লাহ তায়ালা হাত উঠানোর তওফিক দিবেননা।
তাই চেষ্টা করলেই তওফিক পাওয়ার আশা করা যায়।   
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ধ্যান ধারনা থেকে আপনাকে ফিরে আসতে হবে। 
এহেন ধারণা করে বসে থাকা যাবেনা,এটি ইসলাম সমর্থিত পন্থা নয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...