জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।
তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
,
রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ২০ বছর আগের সেই ইজাব কবুলের সময় পাত্র ও পাত্রী উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক (বালেগ বালেগাহ) না হয়ে থাকে,তাহলে উক্ত বিবাহ শুদ্ধ হয়নি।
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তার থেকে তালাক নেয়ার প্রয়োজনীয়তা নেই।
যদি পাত্র ও পাত্রী বালেগ বালেগাহ অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করেন, তাহলে সেই বিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে যাবে।
যদিও তাদের পরিবার কিছুই না জানে বা রাজি না থাকে।
আর যদি সেই ইজাব কবুলের সময় পাত্র ও পাত্রী বালেগ বালেগাহ হয়ে থাকে,তাহলে এক্ষেত্রে দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ সাক্ষী বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে সেই বিবাহ হয়ে থাকলে তাহা শুদ্ধ হবে।
সেই সময়ে কারা কারা সাক্ষী ছিলো,সেটি ভালোভাবে তালাশ করে ঠিক করে তথ্য বের করতে হবে।
প্রয়োজনে সেই ইজাব কবুল কোথায় হয়েছিলো,কোন বছর কোন সময়?
সেই সময়ে কারা পাত্র পাত্রীর বন্ধু বান্ধবী ছিলো,বিষয়টি ভালোভাবে অনুসন্ধান করে কে কে সাক্ষী ছিলো,তারা কি বলে,সব বিষয় বের করে উক্ত বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার উপর হুকুম লাগাতে হবে।
সাক্ষী খুজে পাওয়ার পর যদি তাদের কথা মতে স্ত্রীর কথা ভিত্তিহীন হয়,তাহলে তো বিবাহই হয়নি,তালাক নেয়ার প্রশ্নই উঠেনা।
আর যদি সাক্ষীগন বিবাহ হয়ে যাওয়ার স্বীকারোক্তি দেয়,তাহলে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করলে সেই স্ত্রী নিজেকে নিজে তালাক দিয়ে অন্যত্রে বিবাহ বসতে পারবে।
আর যদি তালাক প্রদানের ক্ষমতা না দিয়ে থাকে,তাহলে স্বামী থেকেই তালাক নিতে হবে বা খোলা করতে হবে।