আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
290 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম
শায়খ,অনেক সমস্যায় ভুগছি তাই লজ্জা না রেখে বিস্তারিত তোলে ধরলাম। দয়া করে মনোযোগ দিয়ে পড়ে সমাধান দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
১.বিষয়টা হচ্ছে,  আমরা হারাম রিলেশনে জড়িত ছিলাম।পরে যখন বুঝতে পারলাম যে এই রিলেশন হারাম। তখন ভাবলাম কিভাবে হালাল করা যায়।পরিবারও মানবে না কারণ আমরা দুজনই স্টোডেন্ট।পরে এক আলেমের ফেসবুক পোস্টে দেখতে পেলাম যে ২ জন বন্ধুকে সাক্ষী রেখে নাকি বিয়ে করা যায়। অবিভাবকের অনুমতি না নিলেও চলে।তাই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিলাম।সব কিছু ঠিকঠাক এ চলছিল দুজন দুজনের বাড়িতে থাকি।
২.আমি একদিন আমার গার্লফেন্ডকে দুষ্টমি করে বলেছিলাম "আম্মু দুদু খাব"। এখন ওকেই আমি বিয়ে করেছি।এখন প্রশ্ন হলো আমাদের বিয়েটা কি বৈধ হয়েছে?
৩.আমি এবং আমার স্ত্রী বিয়ের পর রেষ্টুরেন্টে প্রায়ই দেখা করতাম। রেষ্টুরেন্টের কেবিনে বসতাম দু'জন।এখানে অন্য কেউ আসত না।ওয়েটার মাঝে মধ্যে এসে খাবার দিয়ে যেত এর মাঝে দীর্ঘ বিরতি থাকত প্রায় ১ ঘন্টা ২ ঘন্টা পর ওয়েটার আসতো।কেবিনটি ছিল তিন দিক ঘেরাও করা আর এক দিক খোলা অর্থাৎ কেবিনটি ছিল ছোট ঘরের মত কিন্তু দরজা নেই আশ-পাশ দিয়ে কেউ গেলে দেখা যায় না। কেবিনের ভিতর মাঝে মধ্যে আবছা আলো-অন্ধকার করে রাখতাম।তবে চাইলেই কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে । কিন্তু কেউ আসে নি,ওয়েটার মাঝে মধ্যে  আসত । আর কেবিনের মধ্যে সুধু চেয়ার আর টেবিল ছিল বসার জন্য।খাট পালংক কিছুই ছিল না।এর মাঝে সহবাস করা তো সম্ভব না।কিন্তু আমাদের মধ্যে একে অপরকে স্পর্শ করা, জড়িয়ে ধরা বা বিভিন্ন গোপন অঙ্গ দেখা বা স্পর্শ করা এসব হয়েছে। আবার উত্তেজনা বসত আমার স্ত্রীর শরিরের সাথে লজ্জাস্থান ঘসে বীর্যপাত ঘটাই।তবে দুজনই কাপর পরা অবস্থায় ছিলাম।কাপরের উপর দিয়েই ওর লজ্জাস্থানের উপর আমার লজ্জাস্থান ঘসতাম।তবে আমাদের পূর্ণ সহবাস হয়নি অর্থাৎ আমার লজ্জাস্থান ওর লজ্জাস্থানে প্রবেশ করেনি।
৪. আমি একদিন আমার স্ত্রীকে কথার প্রসঙ্গে বলেছিলাম আচ্ছা বাবা বুঝছি। আবার প্রায়ই কথায় কথায় আমার স্ত্রী আমাকে ভাই বলে আর আমিও মাঝে মধ্যে কথার প্রসঙ্গে ওকে ভাই বলতাম

৫.বিয়ের আগে ঝগরা হলে বা বিভিন্ন প্রসঙ্গে আমি কেনায়া শব্দ বলতাম। কিন্তু বিয়ের পর আমার কেনায়া শব্দ বলতাম কিনা ভাল করে মনে করতে পারছি না। আমার স্ত্রীকেই এই ব্যপারে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, আমি কি কেনায়া শব্দ বলেছিলাম তোমাকে?  সে বলেছে আমি নাকি বিয়ের আগে অর্থাৎ যখন আমাদের বয়ফ্রেন্ড-গার্লফেন্ড সম্পর্ক ছিল তখন বলতাম।কিন্ত বিয়ের পর নাকি কোন কেনায়া শব্দ বলি নাই। ওর স্পষ্ট মনে আছে। এখন আরো একটি ব্যপার হল যদি এমন হয় যে,যদি ভবিষ্যতে কোন এক সময় মনে পরে যে কেনায়া শব্দ বলেছিলাম তখন কি কোন সমস্যা হবে?
৬.আমার স্ত্রী কথা বলার এক পর্যায়ে আমাকে এক দিন বলেছিল যে আমি অন্য জায়গায় বিয়ে করি এটা কি তুমি সমর্থন করো? তখন আমি বলেছিলাম,সমর্থন করবো কিভাবে, অন্য জায়গায় বিয়ে করতে হলে তো আমাকে ছাড়তে হবে তার পর বিয়ে করতে পারবা। এখন তুমি যদি বল আমাকে ভাল লাগে না তাহলে আমার থেকে মুক্তি নিয়ে অন্য কোথাও বিয়ে করতে পারো।
৭.আমার স্ত্রী একদিন তার বান্ধুবিদের সাথে ঘুরতে  যাওয়ার জন্য আমার কাছে অনুমতি চায়।আমি সেদিন বলেছিলাম য তোমার ইচ্ছা হলে যাও। কিন্তু এতে আমার মন থেকে অনুমতি ছিল না। অতপর ঐস্থান থেকে ফিরে আসার পর স্ত্রীকে বকাঝকা করে যদি ২ দিন কথা বলি নাই।

৮একদিন ঝগরা করতে করতে রাগের মাথায় এক তালাক,দুই তালাক, তিন তালাক এভাবে বলে ফেলি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা যদি আবার নতুন মোহর ধরে আবার বিয়ে করি তাহলে কি আমারা আবার সংসার করতে পারবো?

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আপনি অনেকগুলো বিষয় উল্লেখ করেছেন, এবং এই সব বিষয় উল্লেখ করার সারমর্ম হল, যা আপনি শিরোনামে উল্লেখ করেছেন যে, আপনি কি আবার ঐ নারীকে বিয়ে করতে পারবেন।

(১)
প্রথম কথা হল, আপনাদের বিয়ে বিশুদ্ধ হয়েছে।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/2730

(২)
"আম্মু দুদু খাব" এ কথা বলার দ্বারা কোনো সমস্যা হবে না। বিয়ের আগে হোক বা পরে হোক। তবে এমন কথা বলা কখনো উচিৎ হয়নি।

(৩)
وَكَذَا لَوْ خَلَا بِهَا فِي بَيْتٍ مِنْ دَارٍ وَلِلْبَيْتِ بَابٌ مَفْتُوحٌ فِي الدَّارِ إذَا أَرَادَ أَنْ يَدْخُلَ عَلَيْهِمَا غَيْرُهُمَا مِنْ الْمَحَارِمِ أَوْ الْأَجَانِبِ يَدْخُلُ؛ لَا تَصِحُّ الْخَلْوَةُ، كَذَا فِي فَتَاوَى قَاضِي خَانْ-
যদি নববধূ এব বর বাসা/বাড়ির এমন কোনো রুমে অবস্থান করে,যেই রুমের দরজা খুলা থাকে, যেই চাইলে তাতে প্রবেশ করতে পারবে।তাহলে এমতাবস্থায় খালওয়াতে সহীহা হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩০৬)

https://www.ifatwa.info/16465 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
وَاعْلَمْ أَنَّ أَصْحَابَنَا - رَحِمَهُمُ اللَّهُ - أَقَامُوا الْخَلْوَةَ الصَّحِيحَةَ مَقَامَ الْوَطْءِ فِي حَقِّ بَعْضِ الْأَحْكَامِ دُونَ الْبَعْضِ فَأَقَامُوهَا فِي حَقِّ تَأَكُّدِ الْمَهْرِ وَثُبُوتِ النَّسَبِ وَالْعِدَّةِ وَالنَّفَقَةِ وَالسُّكْنَى فِي هَذِهِ الْعِدَّةِ وَنِكَاحِ أُخْتِهَا وَأَرْبَعٍ سِوَاهَا وَحُرْمَةِ نِكَاحِ الْأَمَةِ عَلَى قِيَاسِ قَوْلِ أَبِي حَنِيفَةَ وَمُرَاعَاةِ وَقْتِ الطَّلَاقِ فِي حَقِّهَا وَلَمْ يُقِيمُوهَا مَقَامَ الْوَطْءِ فِي حَقِّ الْإِحْصَانِ وَحُرْمَةِ الْبَنَاتِ وَحِلِّهَا لِلْأَوَّلِ وَالرَّجْعَةِ وَالْمِيرَاثِ، وَأَمَّا فِي حَقِّ وُقُوعِ طَلَاقٍ آخَرَ فَفِيهِ رِوَايَتَانِ وَالْأَقْرَبُ أَنْ يَقَعَ.
«تبيين الحقائق شرح كنز الدقائق وحاشية الشلبي» (2/ 144)
জেনে রাখা ভালো যে, হানাফি ফকিহগণ খালওয়াতে সহিহাকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত গণ্য করেন, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না।হানাফি ফকিহগণ মহর, সন্তানের নসব, ইদ্দত এবং ভরণপোষন, উক্ত স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করা, এবং এ স্ত্রী ব্যতীত আরো চারটি বিয়ে করা বা বাদি বিয়ে করা এর ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন। তবে সিফাতে এহসান সাব্যস্ত হওয়া , উক্ত স্ত্রীর মেয়ে হারাম হওয়া, এবং ঐ স্ত্রী তার পূর্বে তিন তালাক প্রদানকারী স্বামীর জন্য হালাল হওয়া, এবং রাজআত, ও মিরাছের ক্ষেত্রে খালওয়াতে সহিহাকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত মনে করেন না। খালওয়াতে সহীহা হলে এক তালাকের পর আরেক তালাক কি পতিত হবে? এ সম্পর্কে দুইটি মতভেদ রয়েছে। কুরআন সুন্নাহর নিকটবর্তী মত হল, দ্বিতীয় তালাক পতিত হবে।

(৪)
স্বামী তার স্ত্রীকে বাবা বা স্ত্রী তার স্বামীকে ভাই বললে বিয়েতে কোনো সমস্যা হবে না।

(৫)
কেনায়া শব্দ বললেও নিয়ত ব্যতিত তালাক হয়না।

(৬)
উক্ত আলোচনা দ্বারাও কোনো সমস্যা হবে না।

(৭)
এদ্বারাও কোনো সমস্যা হবে না।

(৮)
যেহেতু আপনাদের খালওয়াতে সহীহা হয়নি, তাই আপনাদের হোটেল কেবিনের ঐ অবস্থানকে সহবাসের স্থলাভিষিক্ত করা যাবে না। সুতরাং এক তালাক বলার পরই তালাকটি বায়েন পতিত হয়ে গেছে। তারপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় তালাক পতিত হয়নি।সুতরাং আপনারা আবার নতুন মহর নির্ধারণ করে বিয়ে করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...