আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
220 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (59 points)
আসসালামু আলাইকুম, পারিবারিকভাবে স্বামী স্ত্রীর মধ্যকার ঝামেলা সমাধান করা সময় স্ত্রী কে জিজ্ঞেস করা হয় যে সে কি চায় তখন সে বলে এক সপ্তাহের মধ্যে যাতে তালাকের কাগজ পাঠিয়ে দেয় এটা মূলত স্বামী কে ভয় দেখানোর জন্য যাতে ১ সপ্তাহের মধ্যে সে তার ভুল বুঝতে পারে ইন শা আল্লাহ। কিন্তু তখন স্বামী ও বলে যে ঠিক আছে পাঠিয়ে দিব যদিও তার নিজেরবও তালাকের নিয়ত নেই স্ত্রীর প্রেশারের কারণে একথা বলছে।এখন যদি ১ সপ্তাহ পর তালাক নামা পাঠায় তবে কি তাদের মধ্যে স্থায়ীভাবে তালাক হয়ে যাবে? স্ত্রী যদি সাইন না ও করে
২/স্বামী যদি স্ত্রীর ভরণপোষণ না দেয়, সম্মান না করে পরকিয়ায় লিপ্ত থাকে এ ক্ষেত্রে কি স্ত্রী সবর করাটা উত্তম হবে নাকি ছেড়ে দেওয়াটা।?

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
তালাক খুবই মারাত্মক  একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

এ ভয়ানক শব্দটি নিয়ত থাকুক বা না থাকুক রাগে বলুক আর ভালবেসে বলুক স্ত্রীকে উদ্দেশ্য নিয়ে মুখ দিয়ে এ শব্দ বের হলেই তালাক পতিত হয়ে যায়। 

হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী যদি সাইন না ও করে,তবুও শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে তালাক পতিত হয়ে গিয়েছে।

উক্ত তালাক নামায় কয় তালাকের কথা লেখা ছিলো?
যদি তিন তালাকের কথা লেখা থাকে,তাহলে শরয়ী হালালাহ ব্যাতিত সেই স্ত্রীকে নতুন করে বিবাহ করার কোনো সুযোগ নেই।

আর যদি ১/২ তালাকের কথা লেখা থাকে,বা তালাকের কোনো সংখ্যা লেখা না থাকে,তাহলে ইদ্দত চালাকালিম সময়ের মধ্যেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারবে।

ইদ্দত কাল অতিবাহিত হওয়ার পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চাইলে নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে।

এক/তালাকের বিধান জানুনঃ 

তিন তালাকের বিধান জানুনঃ

(০২)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

اتَّقُوا اللَّهَ فِي النِّسَاءِ، فَإِنَّكُمْ أَخَذْتُمُوهُنَّ بِأَمَانَةِ اللَّهِ، وَاسْتَحْلَلْتُمْ فُرُوجَهُنَّ بِكَلِمَةِ اللَّهِ، وَإِنَّ لَكُمْ عَلَيْهِنَّ أَنْ لَا يُوطِئْنَ فُرُشَكُمْ، أَحَدًا تَكْرَهُونَهُ، فَإِنْ فَعَلْنَ فَاضْرِبُوهُنَّ ضَرْبًا غَيْرَ مُبَرِّحٍ، وَلَهُنَّ عَلَيْكُمْ رِزْقُهُنَّ وَكِسْوَتُهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ،

তোমরা নারীদের সম্পর্কে আল্লাহকে ভয় করো। কেননা তাদেরকে তোমরা আল্লাহর আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছো এবং আল্লাহর বিধান মোতাবেক তোমরা তাদের লজ্জাস্থানকে নিজেদের জন্য হালাল করেছো। তাদের উপর তোমাদের অধিকার আছে, তারা যেন তোমাদের অপছন্দনীয় ব্যক্তিকে তোমার ঘরে স্থান না দেয়। তারা এরূপ করলে তাদেরকে খুবই হালকা মারধর করো। তাদের ভরণ-পোষনের দায়িত্বও তোমাদের উপর। তোমরা যা স্বাভাবিকভাবে আদায় করবে।
(আবু দাউদ ১৯০৫,মুসলিম, নাসায়ী, ইবনু মাজাহ, দারিমী, ইবনু খুযাইমাহ।)

উল্লেখিত হাদীসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব তোমাদের ওপর। তোমরা তা স্বাভাবিকভাবে আদায় করবে।’

★সুতরাং  স্ত্রী গরিব হোক বা ধনী। অসুস্থ হোক সুস্থ। বৃদ্ধা হোক বা যুবতী—সর্বাবস্থায় স্ত্রীর ভরণ-পোষণের দায়িত্ব স্বামীর ওপর। এমনকি স্বামীর অনুমতিক্রমে স্ত্রী তার বাবার বাড়ি থাকলেও ভরণ-পোষণের অধিকারী হবে।

তবে স্বামীর অবাধ্য হয়ে স্ত্রী পিত্রালয়ে বা অন্য কোথাও চলে গেলে ভরণ-পোষণের অধিকারী হবে না।

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও স্বাভাবিক খোরপোষে কার্পণ্য করা স্বামীর জন্য জায়েজ নয়। তেমনি স্ত্রীর জন্যও স্বামীর সামর্থ্যের অধিক বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি খোরপোষ দাবি করা বৈধ নয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘সাবধান, তোমাদের ওপর তাদের অধিকার এই যে খোরপোষের বিষয়ে তাদের প্রতি সদাচার করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১১৬৩)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নের বিবরণ মতে উক্ত স্ত্রীর তালাক নেয়া বৈধ হবে। 
এতে তার কোনো গুনাহ হবেনা।
এখানে স্পষ্ট যে স্বামী তার হক আদায় করছেনা।

এক্ষেত্রে তালাক নেয়া না নেয়া উভয়টিই স্ত্রীর নিজস্ব অধিকার।
সে যেটিকে উত্তম সিদ্ধান্ত মনে করবে,সেটিই উত্তম হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (59 points)
reshown by
উনি এখনো তালাকের কাগজ পাঠায়নি বলেছে পাঠাবে।যদি না পাঠায় তাও কি ডির্ভোস হয়ে যাবে?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...