ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি
ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/8930/
নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,
আমরা প্রথমেই এ
সংক্রান্ত হাদীস গুলো লক্ষ্য করি।
আবু দাউদ শরীফের
১৬৭২ নং হাদীসে এসেছে
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم " مَنِ اسْتَعَاذَ بِاللهِ فَأَعِيذُوهُ وَمَنْ سَأَلَ بِاللهِ فَأَعْطُوهُ وَمَنْ دَعَاكُمْ فَأَجِيبُوهُ وَمَنْ صَنَعَ إِلَيْكُمْ مَعْرُوفًا فَكَافِئُوهُ فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا مَا تُكَافِئُونَهُ فَادْعُوا لَهُ حَتَّى تَرَوْا أَنَّكُمْ قَدْ كَافَأْتُمُوهُ " .
আবদুল্লাহ ইবনু
‘উমার (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে
ব্যক্তি আল্লাহর নামে নিরাপত্তা চায়, তাকে নিরাপত্তা দাও। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে ভিক্ষা চায়,
তাকে দাও। যে ব্যক্তি তোমাদেরকে দাওয়াত করে
তার ডাকে সাড়া দাও। যে ব্যক্তি তোমাদের সাথে সদ্ব্যবহার করে তোমরা তার উত্তম
প্রতিদান দাও। প্রতিদান দেয়ার মতো কিছু না পেলে তার জন্য দু‘আ করতে থাকো,
যতক্ষণ না তোমরা অনুধাবন করতে পারো যে,
তোমরা তার প্রতিদান দিতে পেরেছো।
(নাসায়ী (অধ্যায় : যাকাত,
হাঃ ২৫৬৬), আহমাদ, বুখারীর ‘আদাবুল মুফরাদ’ (হাঃ ২১৬),
ইবনু হিববান, বায়হাক্বী, হাকিম, আবূ নু‘আইম। হাদীসটিকে ইমাম আহমাদ,
ইমাম হাকিম ও ইমাম যাহাবী সহীহ বলেছেন।)
.
এই হাদীসের ব্যাখ্যায়
মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেন
যখন কোন ব্যক্তি
আল্লাহর নামে তোমাদের বা অন্য কারো অনিষ্ট/ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য আহবান করে যেমন,
কেউ যদি এমন বলে যে,
হে অমুক! আল্লাহর নামে তোমার নিকট চাইছি যে,
তুমি আমাকে অমুকের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করো।
তাহলে তোমরা আল্লাহর নামের সম্মানে তার আহবানে সাড়া দিও এবং তাকে রক্ষা করো। কেউ
যদি আল্লাহর নামে কিছু চায় তাহলেও আল্লাহর নামের সম্মানে এবং আল্লাহর সৃষ্টির
প্রতি দয়া করে হলেও তোমরা তাকে কিছু দিও। কেউ যদি তোমাদেরকে দা‘ওয়াত দেয় তাহলে সে
দা‘ওয়াত কবূল করবে। বিশেষ করে সেটি যদি ওয়ালীমার দা‘ওয়াত হয় তাহলে সে দা‘ওয়াত কবূল
করা ওয়াজিব। অন্য কিছুর দা‘ওয়াত হলে তা কবূল করা মুস্তাহাব। কারো মতে দা‘ওয়াত কবূল
করতে যদি কোন শার‘ঈ বাধা না থাকে তাহলে সকল দা‘ওয়াত কবূল করা ওয়াজিব।
আর যদি কেউ কথা
বা কাজের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি ইহসান/উপকার করে তাহলে তোমরাও ঐ উপকারের সমপরিমাণ
অথবা তার থেকেও উত্তম প্রতিদান তাদেরকে দিবে। তোমরা যদি সম্পদ দ্বারা প্রতিদান
দিতে না পারো তাহলে উপকারীর জন্য দু‘আ করবে। অর্থাৎ দু‘আ দ্বারা প্রতিদান দিবে।
যাতে তোমরা জানতে পারো যে, তোমরা প্রতিদান দিয়েছ। অর্থাৎ তোমরা বারবার
দু‘আ করবে এবং তাদের প্রতিদান দেয়ার জন্য তোমরা ততক্ষণ সর্বাত্মক চেষ্টা করবে
যতক্ষণ তোমরা জানতে পারবে যে, তোমরা তার হক আদায় করেছ।
★তিরমিজি শরীফের ১৬৫২ নং হাদীসে এসেছে
ইবনু আব্বাস
(রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বলেছেনঃ কে উত্তম মানুষ, আমি কি তোমাদের তা জানিয়ে দেবো না?
আল্লাহ তা'আলার রাস্তায় যে নিজের ঘোড়ার লাগাম ধরে
প্রস্তুত থাকে। আমি কি তোমাদের বলে দেবো না, তারপর কোন মানুষ উত্তম? যে নিজের মেষপাল নিয়ে মানুষদের কাছ হতে দূরে অবস্থান করে
থাকে এবং তাতে আল্লাহ তা'আলার যে হক (যাকাত) রয়েছে তা দিয়ে দেয়।
কে মানুষের মধ্যে
নিকৃষ্ট লোক তা কি আমি তোমাদের বলে দেবো না? যার নিকট আল্লাহ্ তা'আলার নাম নিয়ে কিছু চাওয়া হয় কিন্তু (সামর্থ্য থাকা
সত্ত্বেও) দান করে না।
(সহীহ : আত্ তিরমিযী ১৬৫২,
নাসায়ী ২৫৬৯, সহীহ আত্ তারগীব ২৭৩৭।)
عن أبي عبيد مولى رفاعة بن رافع أن النبي صلى الله عليه وسلم قال :
مَلْعُونٌ مَنْ سَأَلَ بِوَجْهِ اللَّهِ ، وَمَلْعُونٌ مَنْ سُئِلَ بِوَجْهِ اللَّهِ فَمَنَعَ سَائِلَهُ
رواه الطبراني في " المعجم الكبير " (22/377
সারমর্মঃ যে
ব্যক্তি আল্লাহ্ তা'আলার নাম নিয়ে কিছু চায়,সে অভিশপ্ত,,,,
এই হাদীস মুরছাল,
عن أبي موسى الأشعري رضي الله عنه أن النبي صلى الله عليه وسلم قال :
( ملعون من سأل بوجه الله عز وجل ، وملعون مَن سُئل بوجه الله عز وجل ثم منع سائله ما لم يسأل هجرا )
رواه الروياني في " المسند "
(1/327 ، رقم 495) والطبراني في " الدعاء " (ص/581)، وابن عساكر في " تاريخ دمشق "
সারমর্মঃ যে
ব্যক্তি আল্লাহ্ তা'আলার নাম নিয়ে কিছু চায়,সে অভিশপ্ত,,,,
এই দুই হাদীসের
মধ্যে
عبد الله بن عياش بن عباس القتباني থাকার কারনে উভয় হাদীস্কে মুহাদ্দিসিনে কেরামগন জয়ীফ বলে আখ্যায়িত করেছেন ।
,
★★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আল্লাহর নাম ব্যবহার
করে কিছু চাওয়া উচিৎ নয়। তবে যদি কেউ চেয়ে নেয়, তাহলে কেউ কেউ বলেন, কিছু দিয়ে দেয়া উত্তম। আবার কেউ কেউ বলেন,
শিক্ষা দেয়ার জন্য তাকে কিছুই দেয়া যাবে না।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সুওয়াল করার
হুকুম ভিক্ষুকের অবস্থার উপর নির্ভর করবে। সে যদি সাবলম্বী হয় তাহলে সুওয়াল করা
তার জন্য উপরের বর্ণিত ধারা অনুযায়ী হারাম হবে ঠিক কিন্তু সুওয়ালকৃত ব্যক্তির জন্য
কিছু দিয়ে দেয়াটা উচিৎ। কেননা সুওয়ালের কারণে তার উপর সুওয়ালকারীর জন্য একরকম হক্ব
বা অধিকার স্থাপিত হয়ে গেছে। তবে সাধারণত সদকার (নফল) নিয়্যাত থাকলে বাস্তব অবস্থা
অনুসন্ধান করে দেয়াটাই উত্তম হবে। কারো সম্পর্কে যদি প্রবল ধারণা হয় যে,সে সর্বদিক দিয়ে অক্ষম তাহলে তাকে দিয়ে
দিবে।তবে যদি কেউ ধনী বা সুস্থ-সবল, উপার্জনোক্ষম কাউকে সদকা দিয়ে দেয় তাহলে তার বৃথা যাবে না।
বরং অবশ্যই সে সওয়াব পাবে।
বিস্তারিত জানুনঃ
https://www.ifatwa.info/5749