আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
942 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
edited by
খেলার সরঞ্জামাদি(জার্সি) বিক্রয় করা কি জায়েজ? ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলার জার্সি কিংবা ঘরোয়া কোনো লিগের জার্সি বানিয়ে দিলে কি সেটা জায়েজ হবে? এবং তার থেকে প্রাপ্য লাভ কি হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,440 points)
edited by
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم 

বর্তমান খেলাধুলাকে অনেকেই পেশা হিসেবে বানিয়ে নিয়েছে।
তাই যারা এই খেলা ধুলাকে পেশা হিসেবে বানিয়ে নিয়েছে,তাদের কাছে বা তাদের  প্রতিনিধি, সংশ্লিষ্ট দের জন্য জার্সি, ইত্যাদি  বানানো,বিক্রয় করা মাকরূহ হবে।

যেহেতু এর দ্বারা গোনাহের কাজের সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। আর গোনাহের কাজের সহযোগিতা করাও নিষিদ্ধ।

তবে এসব জার্সি ইত্যাদি বিক্রির টাকাকে হারাম বলা যাবে না। কারণ, এসব কাপড় বিক্রির দ্বারা মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে থাকে ব্যাবসা, খেলা নয়।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত  "ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলার জার্সি কিংবা ঘরোয়া কোনো লিগের জার্সি বানিয়ে দিলে তা থেকে প্রাপ্য লাভ হালাল হবে।

পেশাজীবি খেলোয়াড় দের সহযোগিতা  উদ্দেশ্য না করে, শুধু হালাল ব্যবসার নিয়তে গায়রে এগুলো বিক্রয় করলে গোনাহ হবে না। তবে এটি মাকরূহে তানজীহী হবে। তবে এর দ্বারা অর্জিত টাকা নিশ্চিতভাবেই জায়েজ হবে।
মনের মাঝে এর প্রতি ঘৃণা রেখে বিক্রি করবে।
 বিক্রেতা এতে গোনাহগার হবেননা।
,
★★উল্লেখ্য পেশাজীবি খেলোয়াড় না হলে,এসব বস্তু বিক্রয় মাকরুহে তানিযিহিও হবেনা।
এটা কোনো সমস্যাকর নয়। 
,
প্রকাশ থাকে  যে এসব জার্সিতে অধিকাংশ সময়েই প্রাণীর ছবি থাকে,তাই সেই ছুরতে এটার বিক্রয় সর্বদায়  মাকরুহ হবে।

আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ 
وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   

عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ: أَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ رَأَى حُلَّةً سِيَرَاءَ تُبَاعُ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، لَوِ ابْتَعْتَهَا تَلْبَسُهَا لِلْوَفْدِ إِذَا أَتَوْكَ وَالجُمُعَةِ؟ قَالَ: «إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذِهِ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ» وَأَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَعَثَ بَعْدَ ذَلِكَ إِلَى عُمَرَ حُلَّةً سِيَرَاءَ حَرِيرٍ كَسَاهَا إِيَّاهُ، فَقَالَ عُمَرُ: كَسَوْتَنِيهَا، وَقَدْ سَمِعْتُكَ تَقُولُ فِيهَا مَا قُلْتَ؟ فَقَالَ: «إِنَّمَا بَعَثْتُ إِلَيْكَ لِتَبِيعَهَا، أَوْ تَكْسُوَهَا»

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উমর (রাঃ) একটি রেশমী হুল্লা বিক্রী হতে দেখে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি যদি এটি খরীদ করে নিতেন, তা হলে যখন কোন প্রতিনিধি দল আপনার কাছে আসে তখন এবং জুমুআর দিনে পরিধান করতে পারতেন। তিনি বললেনঃ এটা সে ব্যক্তিই পরতে পারে যার আখিরাতে কোন অংশ নেই। পরবর্তী সময়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) এর নিকট ডোরাকাটা রেশমী হুল্লা পাঠান। তিনি কেবল তাকেই পরতে দেন। উমর (রাঃ) বললেন আপনি এখনি আমাকে পরতে দিয়েছেন, অথচ এ সম্পর্কে যা বলার তা আমি আপনাকে বলতে শুনেছি। তিনি বললেন আমি তোমার কাছে এজন্য পাঠিয়েছি যে তুমি এটি বিক্রি করে দিবে অথবা কাউকে পরতে দিবে। (সহীহ বুখারী-২/৮৬৮, হাদীস নং-৫৮৪১, ইফাবা-৫৪২৩)

ফাতাওয়ার কিতাবে আছেঃ
 ছবি থাকায় কাপড় বিক্রি করা মাকরূহ হলেও এর দ্বারা উপার্জিত অর্থকে হারাম বলা যাবে না। [ফাতাওয়া কাসিমীয়া-১৯/৪৯৬]
,
وجاز بيع عصير عنب ممن يعلم أنه يتخذه خمرا، لأن المعصية لا تقوم بعينه، بل بعد تغيره، وقيل يكره لإعانته على المعصية (رد المحتار، كتاب الحظر والاباحة، فصل فى البيع-9/560، البحر الرائق، كتاب الكراهية، فصل فى البيع-8/371)

যার সারমর্ম হলো আঙ্গুরের নিংড়ানো রস বিক্রয় করা জায়েজ আছে, যদিও জানা যায় যে ঐ ব্যাক্তি এটা দিয়ে মদ বানাবে,কেননা এটা সরাসরি মদ নয়,বরং এটা পরিবর্তন হয়েই মদ হয়। 
কেহ কেহ বলেছেন যে মাকরুহ হবে।   
,
أن بيع العصير ممن يتخذه خمرا إن قصد به التجارة، فلا يحرم وإن قصد به لأجل التخمير حرم (الأشباه والنظائر-53)
যার সারমর্ম হলো আঙ্গুরের নিংড়ানো রস বিক্রয় করা ব্যবসার উদ্দেশ্যে জায়েজ আছে।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ   
فإذا ثبت كراهة لبسها للتختم ثبت كراهة بيعها وصيغها لما فيه من الاعانة على مالا يجوز كل ما أدى إلى مالا يجوز لا يجوز (الدر المختار مع رد المحتار-9/518)
যার সারমর্ম হলোঃ  যেহেতু এখানে নাজায়েজ কাজে সহায়তা করা পাওয়া যাচ্ছে,তাই এসব পন্য বিক্রয় করা মাকরুহ।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...