আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
141 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (3 points)
১. আমার বাবা ব্যাংকে আমার নামে একটা একাউন্ট করেছিলেন ২০১০ সালের দিকে। সেখানে বাবার দেয়া টাকা জমাতে বলেছিলেন। কিন্তু ইচ্ছামত খরচের অনুমতি দেন নি। সেখানে এখন এক লাখ বিশ হাজার টাকা আছে। ২০২১ সালের আগে আমার কোন চেকবই ছিল না এবং আমার কখনো সাহস ছিলনা এই একাউন্ট থেকে টাকা তোলার। তারপর প্রথম সেখান থেকে ২০২১ সালে কিছু টাকা তোলা হয়েছিল বাবাকে জানিয়ে এরপর এই বছরেও আমি কিছু টাকা না জানিয়ে তুলি। এখন এই টাকার উপর আমার কিছুটা নিয়ন্ত্রন এসেছে। যদিও পূর্ন নিয়ন্ত্রন না। এখন জানতে চাচ্ছি যে, এই টাকার উপর কি আমার যাকাত ফরজ? ফরজ হলে কবে থেকে? উল্লেখ্য যে এই একাউন্টে কবে নিসাব পরিমান টাকা পূর্ন হয়েছে সেটা আমার জানা নেই।

২. ছোট বেলায় উপহার পাওয়া আমার কিছু স্বর্নের গয়না ছিল। যার ওজন যা ১৪.১ গ্রাম। এরপর অনেক আগে (ঠিক কত সালে আমার মনে নেই) আমি কিছু খাদ মেশানো লো কোয়ালিটির রুপার গয়নাও কিনি যেগুলো আবার হারিয়েও গেছে। যেগুলো হয়তো ২ ভরি ওজন ছিল। এই অবস্থায় আমার উপর কি যাকাত ফরজ হয়েছিল?
৩. ২০২১ সালের পর আমি কিছু স্বর্নের গয়না কিনি। সব মিলিয়ে যার ওজন ৫৬ গ্রাম।

 আবার কিছু ২২ ক্যারেটের সিলভারের গয়নাও কিনি যার ওজন ২০ গ্রাম। এসব ২০২১ সালের জুনের দিকে কেনা।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি কিভাবে হিসাব করবো আমার এই পর্যন্ত কত যাকাত হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
আপনাকে আপনার বাবা যেই টাকা দিতেন,সেখান থেকে প্রয়োজন পূরন করে কিছু টাকা করে আপনি সেই একাউন্টে জমা রাখতেন।
তার মানে এই টাকার সম্পূর্ণভাবে মালিকানা আপনার। 

তাই যেদিন এটি সাড়ে বাহান্ন ভড়ির সমমূল্য হয়েছিলো,তার পরবর্তী বছর থেকে হিসেব করে প্রত্যেক বছরের যাকাত আপনাকে আদায় করতে হবে।

(২.৩)  
শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল। -সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২

আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى أَنْبَأَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ كُلِّ عِشْرِينَ دِينَارًا فَصَاعِدًا نِصْفَ دِينَارٍ وَمِنْ الْأَرْبَعِينَ دِينَارًا دِينَارًا

ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বিশ দিনার বা তার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার (যাকাত) গ্রহণ করতেন।

ইবনে মাজাহ ১৭৯১ ইরওয়াহ ৮১৩।

দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২

عن عمرو بن شعيب عن أبيه عن جده أن امرأة أتت رسول الله صلى الله عليه و سلم ومعها ابنة لها وفي يد ابنتها مسكتان غليظتان من ذهب فقال لها ” أتعطين زكاة هذا ؟ ” قالت لا قال ” أيسرك أن يسورك الله بهما يوم القيامة سوارين من نار ؟ ” قال فخلعتهما فألقتهما إلى النبي صلى الله عليه و سلم وقالت هما لله عزوجل ولرسوله

অনুবাদ- আমর বিন শুয়াইব থেকে পর্যায়ক্রমে তাঁর পিতা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত। তিন [দাদা] বলেনঃ এক মহিলা তার কন্যাসহ রাসূল সাঃ এর খিদমতে উপস্থিত হন। তার কন্যার হাতে মোটা দুই গাছি স্বর্ণের চুড়ি [কাঁকন] ছিল। তিনি [রাসূল সাঃ] তাকে বললেনঃ তোমরা কি এটার যাকাত আদায় কর? মহিলা বলেনঃ না। রাসূল সাঃ বলেনঃ তুমি পছন্দ কর যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা এর পরিবর্তে তোমাকে এক জোড়া আগুনের কাঁকন পরিধান করান? রাবী বলেনঃ একথা শুনে মেয়েটি তার হাত থেকে তা খুলে নবী করীম সাঃ এর সামনে রেখে দিয়ে বললঃ এ দু’টি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের জন্য। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৩, সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-৭৭৯৯, সুনানুল কুবরা লিননাসায়ী, হাদীস নং-২২৫৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২০০৫}

عن عبد الله بن شداد بن الهاد أنه قال دخلنا على عائشة زوج النبي صلى الله عليه و سلم فقالت ” دخل علي رسول الله صلى الله عليه و سلم فرأى في يدي فتخات ( خواتيم كبار ) من ورق فقال ” ما هذا يا عائشة ” ؟ فقلت صنعتهن أتزين لك يارسول الله قال ” أتؤدين زكاتهن ؟ ” قلت لا أو ماشاء الله قال ” هو حسبك من النار “

হযরত আব্দুল্লাহ বিন শাদ্দাদ ইবনুল হাদ থেকে বর্ণিত। তিন বলেন, আমরা রাসূল সাঃ এর স্ত্রী হযরত আয়শা রাঃ এর খেদমতে উপস্থিত হই। তখন তিনি বলেন, একদা রাসূল সাঃ আমার নিকট উপস্থিত হয়ে আমার তাতে রূপার বড় বড় আংটি দেখতে পান। তিনি বলেন, হে আয়শা! এটা কি? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার উদ্দেশ্যে রূপচর্চা করার জন্য তা বানিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করেনঃ তুমি কি এর যাকাত পরিশোধ করে থাক? আমি বললাম, না অথবা আল্লাহ পাকে যা ইচ্ছে ছিল। রাসূল সাঃ বললেনঃ তোমাকে দোযখে নিয়ে যাওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-১৫৬৫, সুনানে সুগরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১২৩৩, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৭৩৩৮, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১৯৭৪, মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস নং-১৪৩৭}

★রুপার ক্ষেত্রে নিসাব হলো সাড়ে বাহান্ন ভড়ি রুপা। 

আরো জানুনঃ 


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নের বিবরণ মতে  আপনার কাছে নেসাব পরিমান স্বর্ণ+রুপা হয়েছে।
আপনি নিজের সমস্ত স্বর্ণ ও রুপার বর্তমান বাজার মূল্য হিসেব করে (এই স্বর্ণ ও রুপা বাজারে বিক্রয় করতে গেলে কেমন দাম আসতে পারে,সেটি একটি হিসেব করে) সেই সমমূল্যের শতকরা আড়াই টাকা করে যাকাত দিতে হবে।
,
আপনি যেদিন এসব গহনার প্রথমে মালিক হয়েছিলেন,তার পরবর্তি বছর থেকে হিসেব করে প্রত্যেক বছরের যাকাত আদায় করতে হবে।

★প্রশ্নের বিবরণ  মোতাবেক আপনি যে ছোট বেলা স্বর্ণের গহনা উপহার পেয়েছিলেন,তারপর আপনি যে রুপার গহনা কিনেছিলেন,তখন থেকেই আপনি সাহেবে নেসাব ছিলেন,তার পরবর্তীতে বছর পূর্ণ  হওয়ার পর থেকেই  আপনার উপর যাকাত ফরজ ছিলো। 
তবে উক্ত রুপার গহনা হারিয়ে যাওয়ার পর আপনি তখন আর সাহেবে নেসাব হিসেবে থাকেননি।

এখন হিসেব করে যতদিন সাহেবে নেসাব ছিলেন, প্রত্যেক বছরের যাকাত আলাদা আলাদা ভাবে হিসেব করে আদায় করতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...