মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّن قَوْمٍ عَسَىٰ أَن يَكُونُوا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَاءٌ مِّن نِّسَاءٍ عَسَىٰ أَن يَكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ ۖ وَلَا تَلْمِزُوا أَنفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوا بِالْأَلْقَابِ ۖ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوقُ بَعْدَ الْإِيمَانِ ۚ وَمَن لَّمْ يَتُبْ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الظَّالِمُونَ [٤٩:١١]
মুমিনগণ,কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন নারী অপর নারীকেও যেন উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এহেন কাজ থেকে তওবা না করে তারাই যালেম। (সূরা হুজরাত, আয়াত-১১)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
"ইয়াজিদ" হযরত মুয়াবিয়া রাঃ এর সন্তান ছিলেন।
মুয়াবিয়া রাঃ মারা যাওয়ার পর তার হাতেই মুসলিম জাহানের নেতৃত্ব ছিলো।
তার শাসন আমলে হযরত হুসাইন রাঃ কারবালার ময়দানে শাহাদত লাভ করেছিলেন।
যেহেতু তার শাসন আমলেই এহেন কাজ হয়েছিলো,তাই অনেকেই হত্যার তার দিকেই দেন।
প্রশ্নে উল্লেঝিত বিষয় সম্পর্কে জানার উপর আমাদের দ্বীন ও ঈমান নির্ভরশীল নয়। তাই এ বিষয়ে বেশি ঘাটাঘাটি করার কোন প্রয়োজন নেই। একথা দিবালোকের ন্যায় সত্য যে, হযরত হুসাইন রাঃ উপর জুলুম হয়েছে। তাকে অন্যায়ভাবে শহীদ করা হয়েছে। তিনি হকের উপর ছিলেন। মাজলুম ছিলেন।
কিন্তু এর জন্য এজিদ কতটুকু দায়ী? এ বিষয়টি যেহেতু কুরআন ও হাদীস দ্বারা নয়, বরং ইতিহাসের উপর নির্ভরশীল। আর এ বিষয়ক অধিকাংশ ইতিহাসই শিয়াদের দ্বারা লিখিত। আর ইতিহাসে সত্য মিথ্যার মারাত্মক মিশ্রণ রয়েছে। তাই এজিদের অবস্থান নিয়ে সরাসরি কিছু না বলাই উচিত। চুপ থাকাই সবচে’ নিরাপদ।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হযরত হুসাইন রাঃ কে হত্যার জন্য দায়ী মধ্যবর্তী কিছু মুনাফিক এবং ক্ষমতা পিপাসুরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ইবনে যিয়াদ,শিমার ইবন যিল জাওশান, ইত্যাদি ব্যক্তিবর্গ। ইয়াজিদ কিন্তু হত্যার নির্দেশ দেননি।
ইয়াজিদ সম্পর্কে আমাদের আকিদা হল, তিনি সাধারণ মুসলামানের মতই একজন একজন মুসলমান। উনাকে ভালোমন্দ কোনো কিছু না বলাই উত্তম। সবার মত উনার হিসাব নিকাশও আল্লাহ করবেন। কেননা, হাদীসে এসেছে, ইস্তাম্বুলে যে দল প্রেরণ নদী পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হবে, তারা সবাই জান্নাতি। আর ঐ দলের সেনা প্রধান ইয়াযিদ ছিল। সুতরাং উনার সম্পর্কে ভালোমন্দ কোনো কিছু না বলাই শ্রেয়।
মোল্লা আলী কারী রহঃ লিখেছেনঃ
لم يلعن أحد من السلف يزيد بن معاوية سوى الذين اكثر والقول فى التحريض على لعنه وبالغوا فى أمره وتجاوزوا عن حده كالرافضية والخوارج وبعض المعتزلة… فلا شك ان السكوت أسلم (شرح الأمالى لملا على القارى-27-28)
এজিদের উপর সালাফের কেউ লানত বর্ষণ করেননি। রাফেজী, খারেজী এবং কতিপয় মুতাজিলা ছাড়া। যারা বাচালতার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘণকারী।
فلا شك ان السكوت اسلم
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, তার ব্যাপারে চুপ থাকাই নিরাপদ। [শরহুল আমালী, মোল্লা আলী কারীকৃত-২৭-২৮]
এ কারণেই আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আকীদা হল, এজিদের উপর লানতও বর্ষণ করা হবে না। আবার হযরত হুসাইন রাঃ এর বিপরীতে তার প্রশংসাও করা হবে না। [আপ কি মাসায়েল আওর উনকা হল-১/৪০২-৪০৩]
(কিছু তথ্য সংগৃহীত।)