কাযা ইতিকাফ সম্পর্কে

Question

আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
১. রমাদান ব্যতীত কোন এক মাসে নফল এতেকাফে একদিনের জন্য বসেছিলাম।

আমার আব্বা হাসপাতালে খুব অসুস্থ ছিলেন এবং আমাকে দেখতে চেয়েছিলেন তাই পরের দিন রোজা অবস্থায় ইতেকাফ ভেংগে আব্বারে দেখতে গিয়েছিলাম,আছর থেকে রাত পযন্ত ছিলাম সেখানে,পরের দিন ইফতার পর্যন্ত এতিকাফে থাকলে কি আমার ইতিকাফ হয়ে যেত?

এখন আমার কি আবার ওই একদিনের জন্য আবার নফল একদিনের ইতেকাফ করতে হবে?

এই রমাদান মাসে যদি এতেকাফে বসি এবং আগের কাযা ইতেকাফের নিয়াত ও রাখি তাহলে কি সেই একদিনের কাযাও আদায় হবে?

২. দুইবছর আগে রোযার শেষ ৩ দিনের এতিকাফের নিয়াতে আমি একবার ইতেকাফে বসি,একদিন পরেই আমার হায়েয হয়ে যায়।আমাকে কি এখন বাকি রোযার দিনের ইতিকাফ কাযা করতে হবে? এটাও কি এইবার ইতিকাফ করলে এবং পাশাপাশি আগের ইতিকাফের নিয়্যাত রাখলে হয়ে যাবে? না আলাদা আলাদা এতিকাফ করতে হবে?

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
(১)
https://www.ifatwa.info/16195 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে যে,
«وَيَنْقَسِمُ إلَى وَاجِبٍ، وَهُوَ الْمَنْذُورُ تَنْجِيزًا أَوْ تَعْلِيقًا، وَإِلَى سُنَّةٍ مُؤَكَّدَةٍ، وَهُوَ فِي الْعَشْرِ الْأَخِيرِ مِنْ رَمَضَانَ، وَإِلَى مُسْتَحَبٍّ، وَهُوَ مَا سِوَاهُمَا هَكَذَا فِي فَتْحِ الْقَدِيرِ.»
- «الفتاوى الهندية» (1/ 211)
ইতিকাফ তিন প্রকার যথা- (১) ওয়াজিব ইতিকাফ, যা নযর বা মান্নতের জন্য কারো উপর ওয়াজিব হয়েছে। (২) সুন্নতে মুআক্কাদা ইতিকাফ, তা হল রমজানের শেষ দশ দিনের ইতিকাফ।(৯) মুস্তাহব ইতিকাফ, এছাড়া সকল ইতিকাফকে মুস্তাহব ইতিকাফ বলা হয়।

রমজান মাসের শেষ বিশদিন কেউ ইতিকাফের নিয়ত করল। এরমধ্যে প্রথম দশদিনের ইতিকাফ কে শরীয়তের পরিভাষায় মুস্তাহাব ইতিকাফ বলা হবে।

«وَلَوْ اعْتَكَفَ الرَّجُلُ مِنْ غَيْرِ أَنْ يُوجِبَ عَلَى نَفْسِهِ ثُمَّ خَرَجَ مِنْ الْمَسْجِدِ لَا شَيْءَ عَلَيْهِ كَذَا فِي الظَّهِيرِيَّةِ.»
- «الفتاوى الهندية» (1/ 214)
যদি কেউ ওয়াজিব ব্যতিত ভিন্ন কোনো ইতিকাফ করে , অতঃপর ইতিকাফকে ভঙ্গ করে তাহলে তার কোনো প্রকার গোনাহ হবে না।

(২) উপরে বর্ণিত হয়েছে যে, ওয়াজিব ব্যতিত ভিন্ন কোনো ইতিকাফ করার পর ভঙ্গ করলে, কোনো গোনাহ হবে না। সুতরাং সুন্নত ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে গেলে কোনো গোনাহ হবে না। তবে একদিনের ইতিকাফকে রোযা সহ কাযা করা অত্যাবশ্যকীয় হবে। কেননা সুন্নত শুরু করার পর তা পূরা করা ওয়াজিব। যদি কেউ এই একদিনের ইতিকাফকে কাযা না করে তাহেল তার গোনাহ হবে। এবং এটা কবিরা গোনাহ হবে।  তবে বিনা কারণে ইচ্ছাকৃত ভঙ্গ করা উচিৎ না। ( আহকামে ইতিকাফ-তাকি উসমানি-৫৯)(শেষ)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার বিবরণ থেকে বুঝতে পারলাম যে, আপনার ইতিকাফের মান্নত ছিলনা, বরং এমনি মনে মনে নিয়ত করেছিলেন, যে, একদিনের ইতিকাফ করবেন।তাই আপনাকে ইতিকাফ কাযা করতে হবে না।
তবে যদি আপনি মান্নত করে নিজের উপর ইতিকাফকে ওয়াজিব করে থাকেন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই উক্ত ইতিকাফ কাযা করতে হবে।

দুই নিয়তে এক ইতিকাফ করা যায় না।

(২)
তিন দিনের জন্য সম্ভবত নফল হিসেবে ইতিকাফ করেছিলেন, তাই এই ইতিকাফের কাযা করা লাগবে না। যদি নিজের উপর ইতিকাফকে ওয়াজিব করে করে থাকেন, তাহলে উক্ত ইতিকাফকে কাযা করতে হবে।এক্ষেত্রে এ বারের ইতিকাফের নিয়ত করা যাবে না।

Comments

সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।