বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলার ইনসাফ হচ্ছে যে,তিনি কারো নিকট দ্বীনের দাওয়াত পৌছা ব্যতীত,কারো বিরুদ্ধে দলীল প্রমাণ ব্যতীত আযাব দিবেন না।আল্লাহ তা'আলা কারো উপর যুলুম করবেন না।
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَمَا كُنَّا مُعَذِّبِينَ حَتَّى نَبْعَثَ رَسُولاً
কোন রাসূল না পাঠানো পর্যন্ত আমি কাউকেই শাস্তি দান করি না।(সূরা বনি ইসরাঈল-১৫)
ইবনে কাসির রাহ উক্ত আয়াতের ব্যখ্যায় লিখেন,
: قوله تعالى وما كنا معذبين حتى نبعث رسولا" إخبار عن عدله تعالى
এটাই আল্লাহ তা'আলার ইনসাফ।
আল্লাহ তা'আলা কারো নিকট রাসূল প্রেরণ ব্যতীত তাকে আযাব দিবেন না।আল্লাহ তা'আলা বলেন,
تَكَادُ تَمَيَّزُ مِنَ الْغَيْظِ كُلَّمَا أُلْقِيَ فِيهَا فَوْجٌ سَأَلَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ نَذِيرٌ
ক্রোধে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে। যখনই তাতে কোন সম্প্রদায় নিক্ষিপ্ত হবে তখন তাদেরকে তার সিপাহীরা জিজ্ঞাসা করবে। তোমাদের কাছে কি কোন সতর্ককারী আগমন করেনি?
قَالُوا بَلَى قَدْ جَاءنَا نَذِيرٌ فَكَذَّبْنَا وَقُلْنَا مَا نَزَّلَ اللَّهُ مِن شَيْءٍ إِنْ أَنتُمْ إِلَّا فِي ضَلَالٍ كَبِيرٍ
তারা বলবেঃ হ্যাঁ আমাদের কাছে সতর্ককারী আগমন করেছিল, অতঃপর আমরা মিথ্যারোপ করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ আল্লাহ তা’আলা কোন কিছু নাজিল করেননি। তোমরা মহাবিভ্রান্তিতে পড়ে রয়েছ।(সূরা মুলক-৮-৯)
আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,
وَسِيقَ الَّذِينَ كَفَرُوا إِلَى جَهَنَّمَ زُمَرًا حَتَّى إِذَا جَاؤُوهَا فُتِحَتْ أَبْوَابُهَا وَقَالَ لَهُمْ خَزَنَتُهَا أَلَمْ يَأْتِكُمْ رُسُلٌ مِّنكُمْ يَتْلُونَ عَلَيْكُمْ آيَاتِ رَبِّكُمْ وَيُنذِرُونَكُمْ لِقَاء يَوْمِكُمْ هَذَا قَالُوا بَلَى وَلَكِنْ حَقَّتْ كَلِمَةُ الْعَذَابِ عَلَى الْكَافِرِينَ
কাফেরদেরকে জাহান্নামের দিকে দলে দলে হাঁকিয়ে নেয়া হবে। তারা যখন সেখানে পৌছাবে, তখন তার দরজাসমূহ খুলে দেয়া হবে এবং জাহান্নামের রক্ষীরা তাদেরকে বলবে, তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে পয়গম্বর আসেনি, যারা তোমাদের কাছে তোমাদের পালনকর্তার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করত এবং সতর্ক করত এ দিনের সাক্ষাতের ব্যাপারে? তারা বলবে, হঁ্যা, কিন্তু কাফেরদের প্রতি শাস্তির হুকুমই বাস্তবায়িত হয়েছে।(সূরা যুমার-৭১)
যে ব্যক্তি ইসলাম সম্পর্কে কখনো শুনেনি রাসূল সম্পর্কে জানেনি।এবং তার নিকট বিশুদ্ধ ভাবে হেদায়তের বাণী পৌছায়নি,আল্লাহ তা'আলা তাকে কুফরির উপর মূত্যুর কারণে কি শাস্তি দিবেন?
এমন প্রশ্নের দু-রকম জবাব আমরা পাই।
- সে যদি চন্দ্র সূর্য দেখে এক আল্লাহকে মেনে নেয়,স্বীকার করে নেয়, তাহলে তাকে আর আযাব দেয়া হবে না।নতুবা আযাব দেয়া হবে।
- তাকে আযাব দেয়া হবে না।তাহলে কি করা হবে?উত্তরে বলা যায়,আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিন তাকে পরীক্ষা করবেন।যদি সে আল্লাহর বশ্যতা স্বীকার করে, তাহলে সে জান্নাতে যাবে।আর যদি সে আল্লাহ নাফরমানি করে,তাহলে সে জাহান্নামে যাবে।নিম্নোক্ত হাদীস এর প্রমাণ-
عن الْأَسْوَدِ بْنِ سَرِيعٍ أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ أَرْبَعَةٌ [يحتجون] يَوْمَ الْقِيَامَةِ رَجُلٌ أَصَمُّ لا يَسْمَعُ شَيْئًا وَرَجُلٌ أَحْمَقُ وَرَجُلٌ هَرَمٌ وَرَجُلٌ مَاتَ فِي فَتْرَةٍ فَأَمَّا الأَصَمُّ فَيَقُولُ رَبِّ لَقَدْ جَاءَ الإِسْلَامُ وَمَا أَسْمَعُ شَيْئًا وَأَمَّا الأَحْمَقُ فَيَقُولُ رَبِّ لَقَدْ جَاءَ الإِسْلَامُ وَالصِّبْيَانُ يَحْذِفُونِي بِالْبَعْرِ وَأَمَّا الْهَرَمُ فَيَقُولُ رَبِّي لَقَدْ جَاءَ الإِسْلامُ وَمَا أَعْقِلُ شَيْئًا وَأَمَّا الَّذِي مَاتَ فِي الْفَتْرَةِ فَيَقُولُ رَبِّ مَا أَتَانِي لَكَ رَسُولٌ فَيَأْخُذُ مَوَاثِيقَهُمْ لَيُطِيعُنَّهُ فَيُرْسِلُ إِلَيْهِمْ أَنْ ادْخُلُوا النَّارَ قَالَ فَوَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَوْ دَخَلُوهَا لَكَانَتْ عَلَيْهِمْ بَرْدًا وَسَلامًاوفي رواية : فَمَنْ دَخَلَهَا كَانَتْ عَلَيْهِ بَرْدًا وَسَلامًا وَمَنْ لَمْ يَدْخُلْهَا يُسْحَبُ إِلَيْهَا الحديث رواه الإمام أحمد وابن حبان
ভাবার্থঃ আহমক,বধির তথা এমন কিছু লোক কে কিয়ামতের দিন, আল্লাহ আগুনে প্রবেশ করার হুকুম দিবেন।তারা যদি তাতে প্রবেশ করে নেয়,তাহলে সেই আগুন তাদের জন্য জান্নাত হয়ে যাবে।আর হুকুম না মানলে জান্নাতে আগুনেই নিক্ষিপ্ত হবে।(মসনদে আহমদ-১৬৩৪৪,সহীহুল জা'মে-৮৮১)
সুতরাং বলা যায়,যার নিকট বিশুদ্ধ ত্বরিকায় দ্বীন-ইসলামের দাওয়াত পৌছবে, তার বিরুদ্ধে কিয়ামতের দিন প্রমাণ পাওয়া যাবে,যার দরুণ তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।আর যার নিকট দাওয়াত পৌছবে না,বা বিশুদ্ধ ত্বরিকায় পৌছবে না,তার বিষয় আল্লাহর কাছে।আল্লাহ উনি উনার সৃষ্টি সম্পর্কে ভালই জানেন।তবে আল্লাহ কারো উপর জুলুম করবেন না।আল্লাহ সবকিছু দেখছেন।