আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
226 views
in সাওম (Fasting) by (42 points)
আসসালামু আলাইকুম

কিছু প্রশ্ন জানার ছিল রমজান মাসে চিকিৎসা সম্পর্কে

১) রোজা রেখে ইনহেলার নেয়া যাবে কি না?  এ সম্পর্কে islamqa.info এবং islamqa.org তে দুধরনের বক্তব্য পাওয়া যায়। কোনটা সঠিক?

২) রোজা রেখে নেবুলাইজেশন করা যাবে কি না?
৩) অনেকে বলে থাকেন রোজা রেখে রক্ত নিলেও রোজা ভাঙ্গে না।  কথাটা কতটুকু সঠিক?

এবং মেডিকেল ফিকহ সম্পর্কে অথেনটিক কোন বাংলা বা ইংরেজি বই সাজেস্ট করলে উপকৃত হবো।

জাযাকাল্লাহু খাইরান কাসিরান

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

فَمَنْ شَهِدَ مِنْكُمُ الشَّهْرَ فَلْيَصُمْهُ ۖ وَمَنْ كَانَ مَرِيضًا أَوْ عَلَىٰ سَفَرٍ فَعِدَّةٌ مِنْ أَيَّامٍ أُخَرَ ۗ يُرِيدُ اللَّهُ بِكُمُ الْيُسْرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ الْعُسْرَ وَلِتُكْمِلُوا الْعِدَّةَ وَلِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَىٰ مَا هَدَاكُمْ وَلَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ [٢:١٨٥]

কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে,সে এ মাসের রোযা রাখবে। আর যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্য দিনে গণনা পূরণ করবে। আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর এবং তোমাদের হেদায়েত দান করার দরুন আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব বর্ণনা কর,যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর। {সূরা বাকারা-১৮৫}

চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে,শ্বাস গ্রহণের রাস্তা দিয়ে কোন ঔষধ উদাহরণ স্বরূপ ভেনটোলিন ইনহেলার ব্যবহার করলে তার ১০% উপকরণ সরাসরি ফুসফুসে পৌছায়,বাকী ৯০% উপকরণ পরিপাকযন্ত্র শোষন করে,আর এ অবস্থায় ঔষধ সরাসরি রোগীর পেটে গিয়ে পৌঁছায়।
যেহেতু ইনহেলার গ্রহণের রাস্তাটি সেটাই যেটা দ্বারা খাদ্য পেটে যায়, বা খাদ্য পৌঁছানোর নালির নিকটবর্তী শিরা দিয়ে তা গ্রহণ করা হয়,তাই এর দ্বারা রোযা ভেঙ্গে যাবে।


★শরীয়তের বিধান মতে রোযা অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহার করলে রোযা ভেঙ্গে যায়। তাই সাহরীর শেষ সময় এবং ইফতারের প্রথম সময় ইনহেলার ব্যবহার করলে যদি তেমন অসুবিধা না হয় তবে রোযা অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা জরুরি। কিন্তু অসুস্থতা বেশি হওয়ার কারণে যদি দিনেও ব্যবহার করা জরুরি হয় তাহলে তখন ব্যবহার করতে পারবে। সেক্ষেত্রে করণীয় হল : 
১. উক্ত ওজরে দিনের বেলা ইনহেলার করলেও অন্যান্য পানাহার থেকে বিরত থাকবে। 
২. পরবর্তীতে রোগ ভালো হলে এর কাযা করে নিবে।
৩. আর ওজর যদি আজীবন থাকে  তাহলে ফিদয়া আদায় করবে।
 (রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৫; মাজাল্লা মাজমাউল ফিকহিল ইসলামী, সংখ্যা : ১০, ২/৩১-৬৫)
(সংগৃহীত)


(০২)
তিন ধরনের নেবুলাইজার সাধারণত ব্যবহৃত হয়। জেট নেবুলাইজার—এটি সহজে ব্যবহারযোগ্য বলে বাড়িতেও চালানো যায়। 

আল্ট্রাসনিক নেবুলাইজার—এটিতে আল্ট্রাসাউন্ড দিয়ে ওষুধের তরল উপাদানকে রূপান্তরিত করে শ্বাসনালিতে পাঠানো হয়। 

আরেকটি হচ্ছে মেশ নেবুলাইজার—এ ক্ষেত্রে মেশ বা জালের সাহায্যে তরল ওষুধকে অ্যারোসলে পরিণত করে শ্বাসনালিতে পাঠানো হয়। সহজলভ্য ও পরিচালনা সহজ বলে বাংলাদেশে জেট নেবুলাইজার বেশি ব্যবহৃত হয়।

ব্যবহার
অ্যাজমা, সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট রোগ) ও অন্যান্য শ্বাসনালিজনিত রোগ যদি তীব্র আকার ধারণ করে, রোগী যদি ইনহেলার নিতে ব্যর্থ হয়, রোগীকে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস দিতে হয়, তখন নেবুলাইজার দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। নেবুলাইজার দিয়ে আসলে প্রয়োজনীয় ওষুধ অ্যারোসল বা স্প্রে আকারে ফুসফুসে পৌঁছানো হয়। এ ধরনের ওষুধের মধ্যে ব্রঙ্কোডাইলেটর (সালবিউটামল, ইগ্রাট্রেপিয়াম ব্রমাইড) বেশি ব্যবহৃত হয়।

যা থাকে
নেবুলাইজারের কয়েকটি অংশ থাকে—১. কম্প্রেশার, যার মাধ্যমে চাপযুক্ত বাতাস প্রয়োগ করা হয়। ২. টিউব, যা প্লাস্টিকের তৈরি, এটি কম্প্রেশারকে নেবুলাইজারের ওষুধ চেম্বারের সঙ্গে যুক্ত করে। ৩. নেবুলাইজার—এখানে ওষুধ চেম্বারের তরল ওষুধটি অ্যারোসল বা স্প্রেতে রূপান্তরিত হয়।


ব্যবহার পদ্ধতি
★রোগীকে আরামদায়কভাবে আধাশোয়া বা বসা অবস্থায় রাখতে হবে।
★ নেবুলাইজারের অংশগুলো জোড়া দিতে হবে। প্রতি স্প্রেতে ২৩ মিলি পানি, সঙ্গে ৫-১ মিলি সালবিউটামল সলিউশন এবং প্রয়োজনে ইপ্রাট্রোসিয়াম সলিউশন (৫ মিলি) নেওয়া হয়।
★এবার কম্প্রেশারটিকে বৈদ্যুতিক সংযোগ দিয়ে সুইচ অন করা হয়। এতে বাতাস দ্রুত বেগে প্রবাহিত হয়। প্রয়োজনে অক্সিজেন দিয়েও নেবুলাইজ করা যায়।
★এবার ওষুধের অ্যারোসল মাউথপিস (টিপিস) বা মাস্ক দিয়ে মুখে নিঃশ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে নিতে হবে। মাউথপিস ব্যবহার করলে রোগীকে এটি দাঁতের ফাঁকে রেখে ঠোঁট বন্ধ করে রাখতে হবে।
★নেবুলাইজ করার সময় রোগীকে ধীরে ধীরে ও লম্বা শ্বাস নিতে হবে।
★  সাধারণত ৩-৬ মিলি তরল ওষুধ ৫-১০ মিনিটে নেবুলাইজ করা হয়। [দৈনিক কালের কণ্ঠ, ৮ই আগষ্ট, ২০১৬ ইং]
,
জাতীয় দৈনিক থেকে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের উপরোক্ত বক্তব্যটি এজন্য উল্লেখ করা হল। যেন আমাদের কাছে নেবুলাইজারের হাকীকত পরিস্কার হয়।
উপরোক্ত বিবরণ থেকে আমাদের কাছে পরিস্কার যে, নেবুলাইজারের মাধ্যমে মূলত শ্বাষকষ্ট দূরীকরণের ওষুধ তরল বা বাষ্প আকারে ভিতরে প্রবেশ করানো হয়ে থাকে।
আর রোজা রাখা অবস্থায় খাদ্যনালীতে বাহির থেকে নিরেট বাতাস ছাড়া কিছু প্রবেশ করলেই রোযা ভঙ্গ হয়ে যায়।

সেই হিসেবে নেবুলাইজারের মাধ্যমে ওষুধ পৌছালেও রোযা ভেঙ্গে যাবে।

আর যদি ওষুধ ছাড়া নেবুলাইজার দিয়ে শুধু বাতাস প্রবেশ করায়, তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে না। কিন্তু সাধারণতঃ এমন করা হয় না বলেই আমরা জানি।
(সংগৃহীত)

(০৩)
হ্যাঁ এতে রোযা ভেঙ্গে যাবেনা।
কেননা এক্ষেত্রে রগের মধ্য দিয়ে রক্ত প্রবেশ করছে।  


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি মুফতি তাকি উসমানী দাঃবাঃ লিখিত জাদিদ ফিকহি মাসায়েল পড়তে পারেন।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 305 views
...