بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
রমজান মাসে মহিলাদের পিরিয়ডের রোজা না রাখলে অথবা রোজা
রাখার পর পিরিয়ড শুরু হলে তার জন্য পানাহার করা বৈধ। তবে অন্য লোকদের সামনে পানাহার
করা উচিত নয়। দিনের বেলায় যদি ঋতু বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, তাহলে দিনের বাকি অংশে রোজাদারের মতো পানাহার
ও যৌনাচার বর্জন করা ওয়াজিব। -আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২০
এ প্রসঙ্গে হাদিসে আছে, উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) থেকে
বর্ণিত যে, তাকে জিজ্ঞেস
করা হলো হায়েজ থেকে পবিত্রতার পর মহিলারা কি নামাজ ও রোজার কাজা আদায় করবে? তিনি বললেন, এ অবস্থায় আমাদের রোজার কাজা আদায় করতে
নির্দেশ দেয়া হয়েছে নামাজের নয়। ’ -সহিহ বোখারি ও মুসলিম
রোজা কাজা করা আর নামাজ কাজা না করা সম্পর্কে উম্মুল মুমিনিন
হজরত আয়েশা (রা.) যা বলেছেন সমস্ত উলামায়ে কেরাম তার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন অর্থাৎ
ইজমা বা ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
যদি কেউ পূর্ণ ১০ দিন ১০ রাত পর, রাতের শেষভাগে গিয়ে পবিত্র হয় এবং তখন
রাতের এতটুকু সময়ও হাতে নেই যার মধ্যে একবার আল্লাহু আকবার বলতে পারে। তবুও পরের দিনের
রোজা ওয়াজিব। আর যদি ১০ দিনের কমে হায়েজ বন্ধ হয় এবং এতটুকু রাত অবশিষ্ট থাকে, যার মধ্যে তাড়াহুড়া করে গোসল করে নিতে
পারে তবে ১ বারও আল্লাহু আকবার বলা যায় না। তবুও পরের দিনের রোজা ওয়াজিব হবে। এমতাবস্থায়
গোসল না করে থাকলে গোসল ছাড়াই রোজার নিয়ত করে নিবে, আর যদি সময় তার চেয়েও কম থাকে তাহলে রোজা
হবে না, তাই সে রোজা রাখবে না। তবে
সারাদিন তাকে রোজাদারের মতোই থাকতে হবে এবং পরে কাজা করতে হবে।
রমজান মাসে সুবহে সাদেকের পর যদি কোনো মহিলার হায়েজ, নেফাস বন্ধ হয়ে যায় এবং সে এই সময়ের মধ্যে
কোনো কিছু পানাহার না করে এমতাবস্থয় যদি সে রোজার নিয়ত করে তাহলে ওই দিনের রোজা শুদ্ধ
হবে না ববং পরবর্তীতে উক্ত রোজার কাজা করতে হবে, কারণ সে দিনের শুরুলগ্নে অপবিত্র ছিল।
https://www.ifatwa.info/7474 নং ফাতাওয়ায় এমন
এক প্রশ্নের জবাবে আমরা বলেছি যে, হায়েযের সর্বোচ্ছ সময়সীমা ১০দিন। এ
১০দিনের ভিতর লাল, হলুদ, সবুজ,লাল মিশ্রিত কালো বা নিখুত কালো যে কালারের-ই পানি বের হোক না কেন তা হায়েয
হিসেবেই গণ্য হবে।যতক্ষণ না নেপকিন সাদা নজরে আসবে।(বেহেশতী জেওর-১/২০৬) তথা সাদা রং
ব্যতীত সকলপ্রকার রং ই হায়েযের অন্তর্ভুক্ত। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/78
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
তিন দিন পর যদি আপনার হায়েয সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে আপনি
পবিত্র হয়ে যাবেন। আপনার এ হায়েয বন্ধ হয়ে যাওয়া চায় ঔষধের কারণে হোক বা অন্য কোনো
কারণে হোক,আপনি পবিত্র
হয়ে যাবেন।
তবে যদি দশ দিনের ভিতর আবার হায়েয চলে আসে,তাহলে আবার
আপনি অপবিত্র হয়ে যাবেন। তথা মাঝে বন্ধ হওয়ার পর আবার চালু হলে, সেই রক্তকে হায়েযের রক্ত হিসেবে গণ্য করা হবে।যেমন বর্ণিত রয়েছে,
اذا عاودها الدم في العشرة بطل الحكم بطهارتها
مبتدأة كانت او معتادة و كأنها لم تطهر اصلا
হায়েয বন্ধ হওয়ার পর দশ দিনের ভিতর আবার যদি হায়েয চলে
আসে,তাহলে পূর্বের পবিত্রতার বিধান খতম হয়ে যাবে।চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন ঐ
মহিলা প্রথমবার হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক।যেমন ঐ মহিলা পূর্বে পবিত্রই হয়নি।(ফাতাওয়ায়ে
তাতারখানিয়া-১/৪৮৫, যাকারিয়া)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
فَإِنْ لَمْ يُجَاوِزْ الْعَشَرَةَ فَالطُّهْرُ
وَالدَّمُ كِلَاهُمَا حَيْضٌ سَوَاءٌ كَانَتْ مُبْتَدَأَةً أَوْ مُعْتَادَةً
মাঝেমধ্যে হায়েয হওয়া আবার মাঝেমধ্যে বন্ধ হওয়া, দশ দিনের
ভিতর সবকিছুই হায়েয হিসেবে গণ্য হবে।চায় এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন ঐ মহিলা প্রথমবার
হোক বা এ ব্যাপারে অভ্যস্ত থাকুক। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭,কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/১০৮,কিতাবুন-নাওয়াযিল-৩/১৭২)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
দশ দিন হায়েযের পর থেকে পরবর্তী হায়েযের তারিখ পর্যন্ত
আপনি ইস্তেহাযা গণ্য করবেন। হায়েযের তারিখে যদি দুই বা আড়াই দিন রক্তস্রাব আসার পর
আবার বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এটাকে ইস্তেহাযা গণ্য করা হবে। ঐ সময়
প্রথমে হায়েয ধরে নিয়ে নামায রোযা থেকে বিরত থাকতে হবে, তারপর
যখন দেখা যাবে যে, হায়েয হয়নি, তখন উক্ত
নামায রোযাকে কাযা করতে হবে।