আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
495 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (28 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম

কারো সাথে মনোমালিন্য হওয়ার পর তার সম্পর্কে সমালোচনা এবং তার ব্যক্তিগত গোপন একটা কথা কাউকে বলে ফেলার পর অনুশোচনা হলো খুব। এখন ওই ব্যক্তির কাছে ক্ষমা চাইতে গেলে ওই ব্যক্তি এটা জানলে আশংকা আছে যে সে আরো শত্রু হয়ে যাবে এবং সে ওটা জানতে পারলে আরো বেশি রাগ করবে। তাহলে এখন করণীয় কি?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো যদি কোনো সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির গীবত যদি করা হয়, তাহলে তাঁর কাছে থেকে ক্ষমা নিতে হবে। কারণ, এটা তাঁর হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁর হক নষ্ট করেছেন, তাঁর হকের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে তাঁর কাছে থেকে ক্ষমা নিতে হবে। 
এখন যদি ক্ষমা নেওয়ার কাজটি কোনো কারনবশতঃ কাহারো সাধ্যের বাইরে চলে যায় বা তিনি মারা গিয়ে থাকেন, তাহলে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। হতে পারে আল্লাহ বান্দাদের হকগুলো পরিপূর্ণ করে দিতে পারেন।
,

এক হাদীসে এসেছে। হাদীসটি সনদের দিক থেকে দুর্বল হলেও অর্থের দিক থেকে বিশুদ্ধ। যদি ঘটনাচক্রে কারো গীবত হয়েই যায় তাহলে তার কাফফারা দিতে হবে। 

কাফফারা হলো, যার গীবত করা হয়েছে তার জন্য বেশি বেশি করে দোয়া করা, ইস্তেগফার করা। যেমন কেউ আজীবন গীবত করেছিল। এখন তার হুঁশ হলো। ভাবল, আমি তো আজীবন এগুনাহ করে এসেছি। কার কার গীবত করেছি তাও পুরোপুরি জানা নেই। কোথায় তাদেরকে খুঁজে বেড়াবো, তবে ভবিষ্যতে আর গীবত করবো না। এখন উপায়? উপায় একটাই। যাদের গীবত করা হয়েছে তাদের জন্য দোয়া করতে থাকা, ইস্তেগফার অব্যাহত রাখা। এভাবে হয়তো গুনাহটি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। (মিশকাত, কিতাবুল আদাব ৪৮৭৭)

,
সমস্ত ফুকাহায়ে কেরামের ঐক্যমতে গিবত করা হারাম।ইমাম কুরতুবী রাহ বলেন,গিবত কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত, এতে কারো দ্বিমত নেই। ইমাম নববী এবং ইমাম গাযযালী রাহ বলেন, যে ব্যক্তি কোনো গোনাহে লিপ্ত হয়ে যায়,তার জন্য উচিৎ সাথে সাথেই তাওবাহ করে।তাওবাহ আল্লাহর হক্ব।তাওবাহর তিনটি অংশ রয়েছে।যথাঃ-
(ক)বর্তমানে গোনাহ থেকে তাওবাহ করা।
(খ)উক্ত গোনাহের কাজের উপর লজ্জিত হওয়া।
(গ)ভবিষ্যতে উক্ত গোনাহে জড়িত না হওয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা। 
,
কোরআন মজিদে গীবত সম্পর্কে কঠোর শব্দ এসেছে। সম্ভবত এরূপ কোনো শব্দ অন্য কোনো গুনাহ সম্পর্কে উচ্চারিত হয় নি। কোরআন মজিদে ইরশাদ হয়েছে,

وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ

‘তোমরা একে অপরের গীবত বা পরনিন্দা করো না। (কারণ একটি জঘন্য পাপ। আপন ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মতোই জঘন্য গুনাহ।) তোমাদের কেউ কি আপন মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়া পছন্দ করে? (নিশ্চয় তা পছন্দ করেনা; বরং ভাববে এত বিকৃত কথা!) সুতরাং তোমরা গীবতকেও ঘৃণা করো।’

আয়াতটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য নিয়ে ভাবুন। কত কুৎসিত কাজ এই গীবত। একে তো মানুষের গোশত খাওয়া, তার উপর আপন ভাইয়ের গোশত, তাও আবার মৃত–কতবড় জঘন্য ও ঘৃণ্য কাজ! অবর্ণনীয় মন্দ কাজ। অনুরূপভাবে গীবতও একটি ঘৃণ্য ও জঘন্য গুনাহের নাম।
,
এক হাদীসে এসেছে, হাদীসটি সনদের দিক থেকে তেমন মজবুত না হলেও অর্থের দিক থেকে বিশুদ্ধ। রসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, গীবতের গুনাহ জিনা-ব্যভিচারের গুনাহর চেয়েও মারাত্মক।

প্রশ্ন হল, এর কারণ কী?

উত্তর হল, আল্লাহ না করুন, যদি কেউ ব্যভিচারের গুনাহে লিপ্ত হয়ে যায় তাহলে পরবর্তীতে অনুতপ্ত হয়ে তওবা করে নিলে আল্লাহ চাহে তো গুনাহটি মাফ হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে গীবত এমন মারাত্মক গুনাহ যে, গুনাহটির ক্ষমা ততক্ষণ পর্যন্ত পাওয়া যাবে না, যতক্ষণ না যার গীবত করেছে সে ক্ষমা করে দেয়। (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, বাবুল গীবাত খন্ড ৮ পৃষ্ঠা ৯২)

★★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তওবা করতে হবে,এবং তার কাছ থেকে মাফ চাইতে হবে।
 কোনোভাবেই যদি তার কাছ থেকে মাফ চাওয়া সম্ভব না হয়,তাহলে তার জন্য ইস্তেগফারের পাশাপাশি  দোয়া করতে হবে।
আশা করা যায়,আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (6 points)
মুফতি মনসুরুল হক বলেছেন, আপনি যার গীবত করেছেন সে যদি জানতে না পারে অর্থাৎ যার সামনে করেছেন সে যদি তা উক্ত ব্যক্তির কাছে প্রকাশ না করে তাহলে আপনার তার কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়ার দরকার নেই, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলেই হবে। কারণ লোকটা জানতে না পারায় কষ্ট পায়নি, এখন বরং ক্ষমা চাইতে গেলেই জেনে যাবে এবং কষ্ট পেতে পারে। আর যদি এটা সে জেনে যায় তাহলে তার কাছ থেকে ক্ষমা চাইতে হবে, তাছাড়া ক্ষমা হবে না। এই ব্যাপারে কোনটা সঠিক?
by (22 points)
কমেন্ট এর উত্তর দেন নি। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...