ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/25043/ নং ফাতাওয়াতে
আমরা বলেছি যে,
মহানবী সা. এর জীবনে ২৩ বছরের দীর্ঘ পরিসরে
অল্প অল্প করে কোরআন অবতীর্ণ হয়। এমনকি একই সূরার বিভিন্ন আয়াত বিভিন্ন সময়ে
অবতীর্ণ হয়। ওহি আসার পর কোন সূরা কোথায় স্থান পাবে তা রাসুলুল্লাহ সা. বলে দিতেন, ওহি লেখকরা তা সেভাবেই লিখে নিতেন। কিন্তু
রাসুলুল্লাহ সা. এই সূরার আগে ‘বিসমিল্লাহ’ লেখার নির্দেশ দেননি। এ অবস্থায় তাঁর
ইন্তেকাল হয়। ফলে হজরত উসমান রা. এর আমলে নতুনভাবে কোরআন সংকলন করার সময়ও এই সূরার
শুরুতে ‘বিসমিল্লাহ’ লেখা হয়নি। এর মাধ্যমে এটাও প্রমাণিত হয় যে
কোরআন সব সংশয়, সন্দেহ, পরিবর্তন-পরিবর্ধনের ঊর্ধ্বে। অবতীর্ণ হওয়ার
পর থেকে অদ্যাবধি অবিকল ধারায় কোরআন বিদ্যমান।
শায়েখ আব্দুল্লাহ ইউসুফ আযযাম (রহঃ) তাফসীর এ
সূরা তাওবা- ১৮ ও ১৯ পৃষ্ঠায় সুরা তওবার শুরুতে বিসমিল্লাহ না লেখার কারন হিসেবে
উল্লেখ করেছেনঃ
★ঈমাম নাসাঈ (রহঃ) নিজ সনদে
হযরত উসমান (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, সূরা
আনফাল (৮ম সূরা) মদিনায় অবতীর্ণ প্রথম দিকের সূরা আর সূরা তাওবা মদিনার শেষ দিকে
অবতীর্ণ সূরা।। ইন্তেকালের পূর্বে রাসূলুল্লাহ (সঃ) স্পষ্ট বলেন নি সূরা তাওবা
সূরা আনফালের অংশ কিনা।। এজন্য উভয়ের মাঝে বিসমিল্লাহ লেখা হয় নি।।
★মুফাসসির তাবেঈদের মতে, হযরত উসমান (রা) এর সময়ে কোরআন সংকলন হলে
সাহাবীদের মধ্যে ইখতিলাফ (মতভেদ) ছিল যে সূরা আনফাল এবং সূরা তাওবা ভিন্ন সূরা
নাকি এক-ই সূরা।। এজন্য এই ২সূরার মাঝে “বিসমিল্লাহ” লেখা হয় নি।। এতে করে উভয় মতের সাহাবীরাই
খুশি হলেন।।
★ মুফাসসিরদের
সর্দার, হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা), হযরত
আলী (রা)কে প্রশ্ন করেছিলেন সূরা তাওবার শুরুতে বিসমিল্লাহ না লেখার ব্যাপারে।।
তিনি উত্তরে বলেন- “বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহীম” এই
বাক্যে শান্তি .ও নিরাপত্তার সংবাদ রয়েছে, অথচ
সূরা তাওবাতে সকল শান্তি ও নিরাপত্তার চুক্তি বাতইল করে জিহাদের ঘোষণা দেয়া
হয়েছে।।
★ঈমাম কুরতুবী (রহঃ) বলেন-
রাসূলুল্লাহ (সঃ) নিজের পক্ষ থেকে কিছুই কোরআনে লিখতেন না।। জিব্রাইল (আঃ) “বিসমিল্লাহ” নিয়ে
আসেন নি, তাই
এই সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ লেখা হয় নি।।
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.
তিলাওয়াত যদি সরাসরি সূরা তাওবা দিয়েই শুরু করা হয়, তাহলে সুরা তওবা পড়ার সময় আওযুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ পড়তে হয়। আর কেবল
আগের সূরার শেষে সরাসরি সূরা তাওবা পড়া শুরু করলে তখন
বিসমিল্লাহ পড়তে হয় না।
২. না, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে বিসমিল্লাহ পড়ার কারণে আপনার কোনো গোনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ।
আর খতমের জন্য পুনরায় আর পড়া লাগবে না। বরং আগের পড়াটাই আপনার জন্য যথেষ্ট।