সময়ের বরকত নষ্ট করে দেয় এমন কাজ থেকে বিরত থাকা জরুরি।
সৃষ্টির সূচনা থেকে সময়ের একই নিয়ম ও ধারা চলে আসছে। আল্লাহ আআলা বলেন-
تَبٰرَكَ الَّذِیْ جَعَلَ فِی السَّمَآءِ بُرُوْجًا وَّ جَعَلَ فِیْهَا سِرٰجًا وَّ قَمَرًا مُّنِیْرًا وَ هُوَ الَّذِیْ جَعَلَ الَّیْلَ وَ النَّهَارَ خِلْفَةً لِّمَنْ اَرَادَ اَنْ یَّذَّكَّرَ اَوْ اَرَادَ شُكُوْرًا.
‘মহিমাময় সেই সত্তা, যিনি আকাশে বুরূজ বানিয়েছেন এবং তাতে এক উজ্জ্বল প্রদীপ ও আলোকিত চাঁদ সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই সেই সত্তা যিনি রাত ও দিনকে পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন- (কিন্তু এসব বিষয় উপকারে আসে কেবল) সেই ব্যক্তির জন্য, যে উপদেশ গ্রহণের ইচ্ছা রাখে কিংবা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চায়।’ -সূরা ফুরকান : ২৫ : ৬১
★চিন্তা করলে দেখা যাবে, আমাদের বড় একটা সময় অনর্থক ও বে-ফায়দা কাজে ব্যয় হয়। অথচ মুমিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ, বে-ফায়দা কাজ থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহ তাআলা বলেছেন-
قَدْ اَفْلَحَ الْمُؤْمِنُوْنَۙ الَّذِیْنَ هُمْ فِیْ صَلَاتِهِمْ خٰشِعُوْن وَ الَّذِیْنَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُوْن
‘নিশ্চয় সফলতা অর্জন করেছে মুমিনগণ, যারা তাদের নামাযে বিনীত এবং যারা অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকে।’... -সূরা মুমিনূন : ১-৩
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
من حسن إسلام المرء تركه ما لا يعنيه
ব্যক্তির সুন্দর মুসলিম হওয়ার এক নিদর্শন, অর্থহীন কাজ ত্যাগ করা। -জামে তিরমিযী, হাদীস ২৩১৭
অনর্থক ও বে-ফায়দা কাজের মধ্যে ঐসকল কাজও অন্তর্ভুক্ত যেগুলো করলে কোনো সওয়াবও হয় না এবং দ্বীনী বা দুনিয়াবী কোনো ফায়দাও হয় না। কোনো কাজ যদি বাহ্যত ‘মুবাহ’ হয় কিন্তু সে কাজ করলে দ্বীনী বা দুনিয়াবী কোনো ক্ষতির আশংকা থাকে তাহলে সে কাজও لغو বা অনর্থক কাজ বলে বিবেচিত হবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ঈমানের উপর অটল রাখুন। সর্বদা ইসলামের ছায়াতলে রাখুন। সব ধরনের হতাশা, আত্মহত্যার প্রবনতা, ইরতিদাদ ও ধর্মহীনতা থেকে আমাদের রক্ষা করুন।
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ َمِنَ الْحَوْرِ بَعْدَ الْكَوْرِ.
হে আল্লাহ! আমরা আপনার কাছে ভালোর পর মন্দে পতিত হওয়া থেকে পানাহ চাই। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৩৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৩৮৮৮
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনি নেযামুল আওকাত তৈরী করে সেটি মেনে চলবেন
সময় নষ্ট হওয়ার বা সময় ফলপ্রসূ না হওয়ার যত কারণ আছে তার মধ্যে একটি বড় কারণ,
সময়ের সুষম বন্টন ও সুষ্ঠু বিন্যাস না থাকা।
সারাদিনের সময় একটি নির্দিষ্ট নিয়মে বণ্টন করে সে অনুযায়ী চলা- এ তো শরীয়তের এক গুরুত্বপূর্ণ বিধান এবং সালাফে সালেহীনের শিআর।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের লিস্ট তৈরি করুন। প্রত্যেকে নিজের মতো করে টাইম মেনেজমেন্টের খসরা দাঁড় করায়। কেউ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী রুটিন করে, কেউ দিনকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে। কেউ বা আবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতিদিনের কাজের তালিকা তৈরি করে সে অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করেন। প্রতিদিনের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করাই সব চেয়ে ভালো।
একটি সফল দিন যাপনের জন্য আগের রাতেই প্রয়োজনীয় কাজের তালিকা তৈরি করে রাখুন। এতে আপনি দিনের শুরু থেকেই জরুরি কাজগুলো জানতে পারবেন।
আর সে অনুযায়ী টাইম টু টাইম ঠিক ভাবে সকল কাজ করতে পারবেন।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
হালাল একটা ইনকাম সোর্স এর জন্য উলামায়ে কেরাম কিছু আমলের কথা বলেছেনঃ
★দোয়া
رَبِّ إِنِّي لِمَا أَنزَلْتَ إِلَيَّ مِنْ خَيْرٍ فَقِيرٌ
অর্থ : ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমার প্রতি যে কল্যাণ নাজিল করবে, নিশ্চয় আমি তার মুখাপেক্ষী।’ (সুরা কাসাস : আয়াত ২৪)
★তাসবিহ
ভালো চাকরির নিয়তে দিনে বেশি বেশি মহান আল্লাহ তাআলার গুণবাচক নামের আমল করা এবং বেশি বেশি পাঠ করা।
يَا وَهَّابُ
অর্থ : ‘কোনোরূপ প্রতিদান ব্যতীত অধিক দানকারী।’
হজরত শাহ আবদুল আজিজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যে ব্যক্তি রিজিকের প্রশস্ততার জন্য (ভালো কাজ বা চাকরির প্রত্যাশায়) চাশতের নামাজের
সময় ১২ রাকাআত নামাজে সেজ দায় গিয়ে এই দোয়া পড়তে হবে।