আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
335 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (8 points)
edited by
আমি একজন ওয়াসওয়াসার রুগী। আমাকে যদি একটু বিস্তারিত লিখে উত্তর দিতেন আমার জন্য সুবিধা হতোঃ-

১. আমি যদি ঈমান ভেঙে যাওয়ার মত কোন কথা বলি কয়েকজনের সামনে তাহলে কি আমার কথাটি যে ভুল তা কি তাদের সামনে উল্লেখ করতে হবে নাকি তওবা করে নিলেই হবে? যেমনঃ এমন একটি কথা বললাম যার কারণে ঈমান চলে যায়। সেখানে কয়েকজন মানুষ উপস্থিত ছিল। এখন কি তাদের সামনেও বলতে হবে যে, "এই কথা আমার ভুল ছিল। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।" - এটা কি তাাদেের সামনে বলতে হবে নাকি ঈমান আনলেই চলবে।

আমি যদি মনে করি যে, "তাদের সামনে আমার ভুল উল্লেখ না করলে ঈমান আসবে না।" - এটা কি আমার বাড়াবাড়ি?
২. একজন হয়তো ঈমান ভেঙে যাওয়ার মত কথা বলছে আমি তাকে হেসে হেসে বলছি যে "আপনি দেখি ইসলামের বিষয় নিয়েও ফাজলামো করেন। আপনি তওবা করে নিয়েন ও কালিমা পড়ে নিয়েন।" - এই কথাটি আমি হেসে হেসে বলেছি।

এখন এতে কি আমার ঈমান চলে গেছে হেসে হেসে বলায়? সে তওবা করেছে কি না এটা কি আবার তাকে জিজ্ঞেস করবো?
আমিও যদি ফাজলামো করে বলে থাকি তাহলে কি ঈমান চলে গিয়েছে? সে কালিমা পড়েছে কি না - এটা জিজ্ঞেস না করলে কি আমার ঈমান আসবে না? সে সাধারণত কিছু করতে বললে ভুলে যায়।

৩. কেউ একজন আমাকে নামাজ পড়তে জোর করলে কিিংবা নামাজ পড়তে বললে আমার যদি শুনে তা বিরক্ত লাগে তাহলে কি ঈমান চলে যাবে? ঈমান চলে গেলে কি সেই ওয়াক্ত নামাজ না পড়লে ঈমান আসবে না?

৪. ইদানিং কিছু বিষয় নিয়ে কথা বললেই মনে হয় এই কথার মাধ্যমে হয়তো আমার ঈমান চলে গেছে। আসলে আমি এখন বুঝতে পারতাছিনা কোন কথার কারণে ঈমান চলে যায়। আমি মারাত্মক ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। আমার করণিয় কি? আর ঈমান কিভাবে আনতে হবে? যদি চলে যায়।

৫. একজন বললো যে ঈমান ভেঙে যাওয়ায় বিবাহ ভেঙে যায় তাই ৮০% জারজ সন্তান। এটা শুনে আমি হেসে দিয়েছি জোরে। এতে কি আমার ঈমান চলে গেছে?

৬. একজন জিজ্ঞেস করলো রোজা রাখতে কষ্ট হচ্ছে কি না? আমি যদি হ্যা বলি তাহলে কি ঈমান চলে যাবে?

৭. আমি জোরে জোরে হেসে বলেছি যে, "হালাল জিনিসকে হারাম মনে করলেও ঈমান চলে যায়। তার মানে তো অনেকের ঈমান নাই।" এতে কি ঈমান চলে গেছে?

৮. আমি কোন একটি হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে গেলে মনে হয় যে বিসমিল্লাহ বলে ফেলেছি। যেমনঃ ইউটিউব এ কোন নাটক দেখার সময় মনে হয় মনে মনে বিসমিল্লাহ বলে ফেলেছি। এটা আমি বাধা দেওয়ার চেষ্টা করি কিন্তু মনে মনে চলে আসে। কি করবো? আমি তীব্র ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত।

৯. ফেইসবুকে তো অনেক হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ি। ফেইসবুক লগিন করার সময় মনে হয় মনে মনে বিসমিল্লাহ চলে এসেছে। এরপর আবার লগআউট করি। এরপর আবার লগিন করার সময় মনে মনে বিসমিল্লাহ চলে আসে। ফেইসবুকে লগিন করার সময় যদি আমি বিসমিল্লাহ বলেও ফেলি তাহলে ঐ লগিন করা থাকা অবস্থায় আমি যতবার ফেইসবুকে খারাপ কাজ করবো ততবারই কি কাফের হয়ে যাবো?
১০. খারাপ কাজে মনে মনে বিসমিল্লাহ চলে আসলে করণিয় কি? এক্ষেত্রেও কি ঈমান চলে যাবে?

১১. আমি ফেইক আইডি খুলে এসব প্রশ্ন করেছি, আমার কি ঈমান চলে গেছে?

১২. আমি নামাজও ঠিকমত পড়তে পারছিনা। কিছু ব্যতিক্রম ঘটলেই মনে হয় ঈমান চলে গেছে। তখন নামাজ ছেড়ে আবার শুরু করি। মাঝে মাঝে কষ্ট পেয়ে যায়। এতে আবারো মনে হয় যে ঈমান চলে গেছে। ঈমান চলে গেলে কি ওযু ভেঙে যায়?
১৩. ওয়াসওয়াসার কারনে যদি আমার কাছে মনে হয় যে ইসলামের বিধান কঠিন। এতে কি ঈমান চলে যাবে?

১৪. আমি এতটাই ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত হয়ে গেছি যে আমার কাছে নামাজে দাড়ালে অন্য চিন্তা আসে। তখন আমি কষ্ট পেয়ে যায়। তখন আমার কাছে মনে হয় হয়তো আমি নামাজ এ বিরক্ত হয়ে গেছি - নাউজুবিল্লাহ। মানে মনে মনে চলে আসে। এতে কি ঈমান চলে যাবে?

১৫. সর্বোপরি আমি কিভাবে বুঝবো যে আমার ঈমান চলে গেছে? আমার পক্ষে বেচে থাকা কঠিন হয়ে গেছে। সারাদিনই এই চিন্তায় ভুগি। মাঝে মাঝে কালিমা পড়তেই থাকি। সবসময় এমন সন্দেহ হয়। আমাকে কিছু পরামর্শ দিন।

1 Answer

0 votes
by (559,290 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


কোন মুসলমানকে কাফের বলা জায়েজ নয়।

যদি কোন ব্যক্তি ইসলামের জরূরী বিষয়কে মান্য করে, কিন্তু গোনাহগার। তাহলে উক্ত গোনাহের কারণে লোকটিকে কাফের বলা জায়েজ নয়। হারাম। কুরআন ও হাদীসে এ ব্যাপারে কড়া ধমকী এসেছে।

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا ضَرَبْتُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَتَبَيَّنُوا وَلَا تَقُولُوا لِمَنْ أَلْقَىٰ إِلَيْكُمُ السَّلَامَ لَسْتَ مُؤْمِنًا تَبْتَغُونَ عَرَضَ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا فَعِنْدَ اللَّهِ مَغَانِمُ كَثِيرَةٌ ۚ كَذَٰلِكَ كُنْتُمْ مِنْ قَبْلُ فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْكُمْ فَتَبَيَّنُوا ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرًا [٤:٩٤]

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যখন আল্লাহর পথে সফর কর,তখন যাচাই করে নিও এবং যে,তোমাদেরকে সালাম করে তাকে বলো না যে, তুমি মুসলমান নও। তোমরা পার্থিব জীবনের সম্পদ অন্বেষণ কর,বস্তুতঃ আল্লাহর কাছে অনেক সম্পদ রয়েছে। তোমরা ও তো এমনি ছিলে ইতিপূর্বে; অতঃপর আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। অতএব, এখন অনুসন্ধান করে নিও। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খবর রাখেন। {সূরা নিসা-৯৪}

কাফের বলার ক্ষেত্রে উসূল

আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহঃ শরহে ফিক্বহুল আকবারে বলেন-

ان المسئلة المتعلقة بالكفر اذا كان له تسع وتسعون احتمالا للكفر واحتمال واحد فى نفيه فالاولى للمفتى والقاضى ان يعمل بالاحتمال النافى، لان الخطا فى ابقاء الف كافر اهون من الخطاء فى افناء مسلم واحد، (شرح الفقه الاكبر-199

কুফরী সম্পর্কিত বিষয়ে, যখন কোন বিষয়ে ৯৯ ভাগ সম্ভাবনা থাকে কুফরীর, আর এক ভাগ সম্ভাবনা থাকে, কুফরী না হওয়ার। তাহলে মুফতী ও বিচারকের জন্য উচিত হল কুফরী না হওয়ার উপর আমল করা। কেননা ভুলের কারণে এক হাজার কাফের বেচে থাকার চেয়ে ভুলে একজন মুসলমান ধ্বংস হওয়া জঘন্য। {শরহু ফিক্বহুল আকবার-১৯৯}

বিস্তারিত জানুনঃ   

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

(০১)
এটা বাড়াবাড়ি। 
আপনি একাকী নিজে নিজে ঈমান আনলেও যথেষ্ট হবে। 

(০২)
এতে আপনার ঈমান চলে যায়নি। 

(০৩)
এতে ঈমান চলে যাবেনা। 

সেই ওয়াক্ত নামাজ পড়া বা না পড়ার সাথে ঈমান যাওয়ার বা আসার কোনো সম্পর্ক নেই।  

(০৪)
কালেমায়ে শাহাদত পাঠ করলেই ঈমান আনা হয়ে যায়। 

(০৫)
এতে আপনার ঈমান চলে যায়নি। 

(০৬)
এতে আপনার ঈমান চলে যায়নি। 

(০৭)
এতেও আপনার ঈমান চলে যায়নি। 

(০৮)
আপনি যেহেতু ঠাট্রার ছলনায় বলেননি,তাই এতে আপনার ঈমান চলে যায়নি। 

(০৯)
না,আপনি কাফের হবেননা।
এটি কাফের হয়ে যাওয়ার কারন নয়।

(১০)
না,ঈমান চলে যাবেনা।

(১১)
না,এতে আপনার ঈমান চলে যায়নি। 
তবে এহেন ফেইক আইডি দিয়ে প্রশ্ন করা আমাদের ফতোয়া বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত নয়। 

(১২)
এতে আপনার ঈমান চলে যায়নি।। 
কোনো সন্দেহ ওয়াসওয়াসাকে গুরুত্ব দিবেননা।
অযু ভেঙ্গে যাওয়ার কাজ না পাওয়া গেলে অযু চলে যাবেনা।    

(১৩)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 

(১৪)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 

(১৫)
আপনার এসব বিষয় নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তাভাবনার অবকাশ নেই।
আপনি এসব চিন্তাকে ভ্রুক্ষেপ না করে আমলে মনোযোগ দিন,দুনিয়াবী কাজে মনোযোগ দিন।

প্রয়োজনে দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে সময় লাগান বা হক্কানী কোনো শায়েখের সহবোতে যান।
ইনশাআল্লাহ এতে আর এহেন সমস্যা হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...