আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,496 views
in সালাত(Prayer) by (1 point)
নফল নামাজে সিজদায় ইচ্ছে করে কান্না করলে কোনো আওয়াজ ছাড়া তারপর আল্লাহর কাছে কিছু চাইলে কী নামাজ বাতিল হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো  সালাতরত অবস্থায় যদি কেহ ব্যাথা বা কষ্টের কারনে স্বেচ্ছায় কান্না করে,তাহলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।
 আর যদি আল্লাহর ভয়, কবরের আযাব, জাহান্নামের শাস্তি, মৃত্যু যন্ত্রণা, আখিরাতের ভয়াবহ দৃশ্য ইত্যাদি স্মরণ করে অথবা কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন শাস্তির হুমকি ও করুণ পরিণতির কথায় প্রভাবিত হয়ে অনিচ্ছায় যদি কেউ কান্না করে তাহলে তা জায়েজ আছে।
যদি ব্যাথা বা কষ্টের কারনে অনিচ্ছায় কান্না চলে আসে,তাহলেও তা জায়েজ আছে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১০২)
,
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ مُطَرِّفِ بْنِ عَبْدِ اللّهِ بْنِ الشِّخِّيرِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ ﷺ وَهُوَ يُصَلِّىْ وَلِجَوْفِه أَزِيْزٌ كَأَزِيزِ الْمِرْجَلِ يَعْنِىْ: يَبْكِىْ
মুত্বররিফ ইবনে ‘আবদুল্লাহ ইবনে শিখখীর (রহঃ) নিজের পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলাম এমতাবস্থায় যে, তিনি সলাত আদায় করছিলেন এবং তাঁর ভিতর ডেগের ফুটন্ত পানির মত আওয়াজ হচ্ছিল। অর্থাৎ তিনি কান্নাকাটি করছিলেন।

অন্য এক হাদীসে এই বর্ণনা কিছুটা ভিন্ন শব্দে এসেছেঃ 
عن مطرف عن أبیہ قال: رأیت رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم یصلي، وفي صدرہ أزیز کأزیز الرحی من البکاء۔ (سنن أبي داؤد ۱؍۱۳۰ رقم: ۹۰۴، سنن النسائي ۱؍۱۳۵ رقم: ۱۲۱۰، الأحادیث المنتخبۃ ۱۲۷ رقم: ۴۲۹)

অন্য বর্ণনায় রয়েছে, বর্ণনাকারী বলেছেন,
عن عبد اللّٰہ الشخیر: رأیت رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم یصلي بنا، وفي صدرہ أزیز - صوت القدر إذا غلت - کأزیز المرجل من البکاء۔ (رواہ أبوداؤد، الصلاۃ / باب البکاء في الصلاۃ رقم: ۹۰۴، سنن النسائي رقم: ۱۲۱۰، إعلاء السنن ۵؍۴۹ رقم: ۱۳۹۹ دار الکتب العلمیۃ بیروت)

“আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সলাত আদায় করতে দেখছি। এমতাবস্থায় তাঁর সিনার মধ্যে চাক্কির আওয়াজের ন্যায় কান্নার আওয়াজ থাকত।” (আহমদ; নাসায়ী প্রথমাংশটুকু, আবু দাউদ দ্বিতীয়াংশটুকু বর্ণনা করেছেন)
[আবু দাউদ ৯০৪, নাসায়ী ১২১৪, সহীহ আত্ তারগীব ৫৪৪, আহমদ ১৬৩১২, সহীহ ইবনে হিব্বান ৭৫৩। ]
۔
তবে যদি অসুখ-বিসুখ, শারীরিক ব্যথা-বেদনা, মানসিক কষ্ট বা দুনিয়াবি বিপদ-মুসিবতের কথা স্মরণ করে কান্না আসে তাহলে তা যথাসম্ভব প্রতিহত করার চেষ্টা করবে। কিন্তু যদি চেষ্টা থাকা স্বত্বেও কান্না প্রতিহত করা সম্ভব না হয় তাহলে সালাত নষ্ট হবে না ইনশাআল্লাহ। কেননা তা তার সাধ্যের বাইরে।
۔
কিন্তু যদি কান্না বন্ধ করার ক্ষমতা থাকা স্বত্বেও আওয়াজ করে কান্না অব্যাহত রাখে তাহলে তাতে সালাত নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা, তা সালাত বহির্ভূত বিষয়। অধিকাংশ ফিকাহবীদ এ বিষয়ে একমত।
۔
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছে   
والبکاء بصوت یحصل بہ حروف لوجع أو مصیبۃ قید للأربعۃ إلا لمریض لا یملک نفسہ عن إنین وتأوّہ … لا لذکر جنۃ ونار۔ (درمختار مع الشامي ۲؍۳۷۷-۲۷۸ زکریا)

যার শেষের অংশের সারমর্ম হলো  কিন্তু অসুস্থ ব্যাক্তি যদি ব্যাথা বা কষ্টের কারনে অনিচ্ছায় কান্না করে আস্তে আওয়াজে,তাহলে তা জায়েজ আছে।

و لو أن في صلا تہ أو تأوّہ أو بکی فارتفع بکائہ، وفي الخانیۃ: فحصل لہ حروف فإن کان من ذکر الجنۃ أو النار فصلا تہ تامۃ، وإن کان من وجع أو مصیبۃ فسدت صلا تہ عند أبي حنیفۃ ومحمد رحمہما اللّٰہ، وعند أبي یوسف: إذا کان یمکنہ الامتناع یقطع الصلاۃ وإذا کان لا یمکنہ لا یقطع الصلاۃ۔ (الفتاویٰ التاتارخانیۃ ۲؍۲۲۴ رقم: ۳۳۳۲ حاشیۃ الطحطاوي ۱۷۸، باقیات فتاویٰ رشیدیۃ ۱۷۵) 
যার সারমর্ম হলো যদি নামাজে কান্নার আওয়াজ উচুঁ হয়ে যায়,তাহলে সেটা যদি আল্লাহর ভয়, কবরের আযাব, জাহান্নামের শাস্তি, মৃত্যু যন্ত্রণা, আখিরাতের ভয়াবহ দৃশ্য ইত্যাদি স্মরণ করে কাঁদে,তাহলে নামাজের কোনো সমস্যা হবেনা। 
যদি ব্যাথার কারনে উচ্চস্বরে কাঁদে,তাহলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।

 
★সুতরাং নফল ফরজ নামাজে সেজদায় গিয়ে আখেরাতের আজাবের ভয়ে কান্না কাটি করা যাবে।
তবে নামাজের ভিতর, সেজদায় গিয়ে দুনিয়াবি কোনো কিছু চাওয়া যাবেনা।
এই ব্যপারে কান্নাও করা যাবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...